মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে ইউনিয়নের ‘স্বেচ্ছাশ্রম’ নিয়ে প্রশ্ন, ক্ষোভও
প্রতি দিন চিঠির পাহাড় জমছে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে। অত চিঠি দেখবে কে? সুরাহাই বা হবে কী ভাবে? অত লোকই তো নেই!
সঙ্কটের সমাধান করতে তৃণমূলের একটি কর্মী সংগঠন ‘স্বেচ্ছাশ্রম’ দিতে শুরু করেছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। প্রায় বেনজির এই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল ইউনিয়ন-সহ বাম-বিরোধী বিভিন্ন কর্মী সংগঠন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ‘স্বেচ্ছায়’ শ্রমদানকারী সংগঠনটির নেতৃত্বের দাবি, তাদের আবেদনের ভিত্তিতে বাড়তি কাজ করার জন্য সংগঠনের সদস্যদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর অফিস (সিএমও) থেকে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। সেই অনুযায়ী কিছু সদস্য অফিসের সময়ের পরে বকেয়া কাজ তুলে দিতে অতিরিক্ত খাটছেন।
বিতর্কের সূত্রপাত শুক্রবার। এ দিন সিএমও-র কর্মীরা এসে দেখেন, প্রচুর চিঠিপত্র খোলা অবস্থায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে তাঁদের টেবিলে। সেগুলোয় বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরও নেই। মুহূর্তে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমশ যা ক্ষোভে রূপান্তরিত হয়। এর পিছনের কারণ জানতে তাঁরা দল বেঁধে যান মুখ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিবের কাছে। পরে জানা যায়, সিএমও-র ‘নির্দেশেই’ বৃহস্পতিবার অফিস ছুটির পরে বিভিন্ন দফতরের কিছু কর্মী ওই ঘরে এসে রাত পর্যন্ত কাজ করে গিয়েছেন!
মহাকরণ-সূত্রের খবর: মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে কর্মীর সংখ্যা মোটামুটি ৭৫। বাম আমলে কর্মীদের অধিকাংশ ছিলেন কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য। পালাবদলের পরে তাঁদের প্রায় প্রত্যেককে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এখন যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সিংহভাগ তৃণমূলের বিভিন্ন সংগঠন, আইএনটিইউসি এবং দু’-তিনটে বাম বিরোধী ইউনিয়নের সদস্য। ‘স্বেচ্ছাশ্রম’ দিচ্ছে যারা, সেই ‘ফেডারেশন অফ সেক্রেটারিয়েট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’ও তৃণমূলেরই সংগঠন। যাদের দাবি, বকেয়া কাজ তোলার জন্য অতিরিক্ত খাটতে চেয়ে তারা লিখিত আবেদন জানিয়েছিল। আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে তাদের কর্মীরা অফিস ছুটির পরে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের কাজকর্ম শুরু করেছেন।
প্রশ্ন উঠেছে সরকারি দফতরে ‘স্বেচ্ছাশ্রমের’ ধারণা নিয়েই। ওঁদের আবেদন কী হিসেবে মঞ্জুর হল? মুখ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিবের জারি করা সংশ্লিষ্ট নির্দেশটির বক্তব্য: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি ও অফিসে প্রতি দিন কয়েক হাজার চিঠি আসছে। অথচ কর্মীর অভাবে দিনে পাঁচশোর বেশি চিঠির সুরাহকরা সম্ভব হচ্ছে না। এরই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দফতরে কর্মরত ২৭ জনকে দৈনিক দু’ঘণ্টা অতিরিক্ত কাজ করে পড়ে থাকা কাজ ওঠাতে সাহায্য করতে বলা হয়েছে।
এই নির্দেশ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে অন্যান্য কর্মী সংগঠন। তৃণমূলের আর একটি ইউনিয়ন এবং নবপর্যায়ের দাবি: সেক্রেটারিয়েট কর্মীদের ‘ম্যানুয়াল’ অনুযায়ী, নির্দেশিকা জারি করেও এ ভাবে কাজ করানো যায় না। ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল সেক্রেটারিয়েট অ্যাসিস্ট্যান্টস’ এবং আইএনটিইউসি-র ‘কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ’ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ তুলেছে, এই ধরনের কাজকর্মে সিএমও-র কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন। এই আশঙ্কায় যে, কোনও চিঠি খোয়া গেলে তার দায় গিয়ে পড়বে সিএমও-র কর্মীদেরই উপরে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস-সূত্রে বলা হয়েছে, অন্যান্য দফতরের কর্মীদের দিয়ে বকেয়া কাজ তোলানোটা নতুন কিছু নয়। অতীতে তা একাধিক বার হয়েছে বলে সিএমও-সূত্রের দাবি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.