জঙ্গলমহলে অ্যাম্বুল্যান্সের তদারকি করা নিয়ে সংশয়
প্রায় এক মাস আগে জঙ্গলমহলের জন্য ছ’টি অ্যাম্বুলেন্স এসেছে মেদিনীপুরে। রাখা হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর লাগোয়া চত্বরে। অথচ, কী ভাবে ওই অ্যাম্বুলেন্স জঙ্গলমহলের কাজে লাগবে, সে নিয়েই এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি স্বাস্থ্য দফতর!
সূত্রের খবর, চালকের অভাবেই সব ক’টি অ্যাম্বুলেন্স এখনও পড়ে রয়েছে। রোদ-ঝড়-জলে যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র-র বক্তব্য, “ছ’টি অ্যাম্বুলেন্সই জঙ্গলমহলের হাসপাতালে পাঠানো হবে। চালক নেই বলেই অ্যাম্বুলেন্সগুলো এখনও পাঠানো যায়নি। তবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এ নিয়ে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা করেছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। জানতে চেয়েছেন, এই অ্যাম্বুলেন্সগুলি ব্যবহার করে কী ভাবে পরিষেবা দেওয়া যেতে পারে। রোগীর আত্মীয়রাই বা কী ভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তবে কোনও প্রশ্নেরই সমাধানসূত্র মেলেনি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “পুরো বিষয়টিই এখনও আলোচনার স্তরে রয়েছে। যে ভাবে নির্দেশ আসবে, আমরা সে-ভাবেই কাজ করব। তেমন হলে অ্যাম্বুলেন্সগুলো কোনও সংস্থাকেও দেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দরপত্র আহ্বান করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাই দেখভাল করবে।”
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়তি নজর দেন জঙ্গলমহলে। ইতিমধ্যেই জঙ্গলমহল ঘুরেও গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রামের সভায় নানা প্রতিশ্রুতিও দিয়ে যেন। জঙ্গলমহলে স্বাস্থ্য-পরিষেবার হাল ফেরাতে এর পরেই কিছু কাজও শুরু হয়। ঝাড়গ্রাম মহকুমা হাসপাতালকে জেলাস্তরের হাসপাতালে উন্নীত করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ব্লক হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নেরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেখানে থাকবে অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের মতো রোগী-পরিবহণের যান না-থাকায় অনেক সময়েই জঙ্গলমহলের মানুষকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। রোগীকে সময় মতো ব্লক কিংবা মহকুমা বা মেদিনীপুর মেডিক্যালে আনা সম্ভব হয় না। এই কারণেই জঙ্গলমহলে অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোগ হয় রাজ্য সরকার। পাশে দাঁড়ায় কলকাতা কর্পোরেশন। জঙ্গলমহলে পরিষেবা দেওয়ার জন্য কর্পোরেশনই ছ’টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠায়।
কিন্তু জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সেগুলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর লাগোয়া জেলা পরিষদ চত্বরেই পড়ে রয়েছে। যেখানে এই গাড়িগুলির সবচেয়ে বেশি দরকার, সেখানে আর পৌঁছয়নি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ছ’টির মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স পুরুলিয়ার বলরামপুরে পাঠানো হবে। বাকি পাঁচটি পশ্চিম মেদিনীপুরেরই শালবনি, বিনপুর, গোপীবল্লভপুর প্রভৃতি ব্লক হাসপাতালে পাঠানোর কথা। অ্যাম্বুলেন্স এসেছে--কিন্তু কে বা কারা এর দেখভাল করবে, চালক কোথা থেকে আসবেনসে নিয়ে কোনও নির্দেশিকাই যে আসেনি! তার ফলেই সমস্যা। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই সব অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পরিবহণ ছাড়াও জঙ্গলমহলে যে সব স্বাস্থ্য-শিবিরগুলো হয়, সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের কাজেও ব্যবহার করা হবে। যদিও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “এ সবই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত। এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি।” প্রায় এক মাস ধরে অ্যাম্বুলেন্সগুলো পড়ে থাকায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.