|
|
|
|
শ্রাবণের শাসনে |
মিশল বাঁশলৈ-পাগলা, জলমগ্ন সুতির দু’টি ব্লক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সুতি |
বাঁশলৈ ও পাগলা একাকার হয়ে জলে ভাসল সুতির বিস্তীর্ণ এলাকা। তিন দিন ধরে চলা টানা বৃষ্টি ও ঝাড়খণ্ড থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি জলের তোড়ে জলমগ্ন সুতির বহু গ্রাম। সুতি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের রূপারানি হালদারের বক্তব্য, “হারুয়া, বহুতালি, বংশবাটী ও আহিরণের অন্তত ২৮টি গ্রাম এখন জলবেষ্টিত। অনেক গ্রামের ভিতরে এক হাঁটু করে জল বইছে। সমস্ত গ্রামই সড়ক পথ থেকে বিচ্ছিন্ন। ডুবে রয়েছে নাজিরপুর থেকে পারাইপুর পর্যন্ত নতুন সড়কটিও।” সুতির বিধায়ক কংগ্রেসের ইমানি বিশ্বাস বলেন, “ওই ২৮টি গ্রাম ছাড়াও সুতি ২ ব্লকের মহেশাইল ও উমরাপুর পঞ্চায়েতগুলির কয়েকটি গ্রামে জল ঢুকেছে। উমরাপুর পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। নৌকোও নেই। ফলে নাজেহাল অবস্থা মানুষের।” জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসক এনাউর রহমানের কথায়, “পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। পঞ্চায়েতগুলিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। বিডিওরা নিয়মিত নজর রাখছে। জল যে ভাবে বাড়ছে, বৃষ্টিরও বিরাম নেই, এই পরিস্থিতিতে রাতের দিকে জলস্ফীতির আশঙ্কা রয়েছে। ত্রিপল ও খাবার তাই মজুত করেই রাখা হয়েছে।” |
 |
জলভর্তি বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানেই ফেলা হচ্ছে জাল। ছবি: গৌতম প্রামাণিক। |
সুতির সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক পথ কানুপুর-বহুতালি পিচ সড়কে অবশ্য জল এখনও ওঠেনি। তবে দু’দিকে যতদূর চোখ যায়, কেবলই জল। এলাকার গ্রামগুলিতে যাওয়ার সড়কগুলি ওই জলের নীচে অদৃশ্য। বহুতালির রাজবংশী পাড়ার ১৬০টি পরিবার এখন জলের তলায়। কারও উঠোনে এক হাঁটু জল। প্রভাত রাজবংশী বলেন, “সব পরিবারকেই যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু পঞ্চায়েতের কারও দেখা মেলেনি।”
গোপালনগরের বাসিন্দা শশাঙ্ক সরকার বলেন, “সকাল থেকে হু হু করে জল ঢুকছে গ্রামে। সিধোরীর গাড়লিপাড়া গ্রামের অন্তত ৯০টি পরিবার জলে ডুবে রয়েছে। এখনও জল ঢুকছে গ্রামে। পাশের গ্রাম হোসেনপুর, গোপালনগর, নদাইয়েও জল ঢুকেছে।” রূপারানিদেবীর কথায়, “তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। তার উপরে বাঁশলৈ নদীতে একটা মাটির বাঁধ দেওয়া ছিল। সেই বাঁধ অনেকটাই ভেঙে গিয়েছে। তাই সেই জল সোজা এসে ধাক্কা দিচ্ছে সিধোরী গ্রামে। ফলে বিপদ বাড়ছে।”
|
বৃষ্টির পরিমাণ |
• বহরমপুর: ১১২.২ মিমি।
• কান্দি: ৬৭.২ মিমি।
• জিয়াগঞ্জ: ৬৬.৬ মিমি।
• হরিহরপাড়া: ৬৮.৪ মিমি।
• নওদা: ৩১.৩ মিমি।
• জলঙ্গি: ৪১.২ মিমি।
• সুতি-২: ১৪৮.৬ মিমি।
• লালগোলা: ৭৫.২ মিমি।
• ভগবানগোলা: ৮০.২ মিমি।
• রানিনগর: ৫৬.২ মিমি।
|
• নবগ্রাম: ৫১.০ মিমি।
• খড়গ্রাম: ৯০.৪ মিমি।
• বড়ঞা: ৭৫.৪ মিমি।
• ভরতপুর-১: ২৩.২ মিমি।
• ভরতপুর-২: ৩৮.২ মিমি।
• সাগরদিঘি: ৮০.৬ মিমি।
• রঘুনাথগঞ্জ-১: ১২৯.২ মিমি।
• রঘুনাথগঞ্জ-২ ১০২.২ মিমি।
• সামশেরগঞ্জ: ৮৯.৬ মিমি।
• ফরাক্কা: ১৬৪.৩ মিমি। |
• নদিয়ায় গড় বৃষ্টিপাত: ২৫.৬০ মিমি। |
|
|
জলের উচ্চতা |
ভাগীরথী |
• বহরমপুর: ১৫.৫৬ মিটার (সকাল ৬টা), ১৫.৬২ মিটার (সকাল ৯টা)। বিপদসীমা: ১৭.২২ মিটার, সর্বোচ্চ বিপদসীমা: ১৭.৮৬ মিটার।
• আখরীগঞ্জ: ১৫.৩৫ মিটার (সকাল ৬টা)। বিপদসীমা: ১৮.৪৪ মিটার, সর্বোচ্চ বিপদসীমা: ১৯.০৫ মিটার।
• স্বরূপগঞ্জ: ৮.৫১ মিটার (দুপুর ৩টে)। বিপদসীমা: ৮.৪৪ মিটার। সর্বোচ্চ বিপদসীমা ৯.২০ মিটার। |
দ্বারকা |
• সাঁকোঘাট: ২০.৪৫ (দুপুর ১টা)। বিপদসীমা: ২০.৪০ মিটার, সর্বোচ্চ বিপদসীমা: ২১.৩০ মিটার।
• রণগ্রাম: ১৬.৩০ মিটার (সকাল ৬টা), ১৬.৩৭ মিটার (সকাল ৯টা)। বিপদসীমা: ১৭.৩৬ মিটার, সর্বোচ্চ বিপদসীমা: ১৭.৮৬ মিটার। |
কূয়ে |
• তারাপুর: ২০.৯৮ মিটার (সকাল ৬টা), ২১.০৩ মিটার (সকাল ৯টা)। বিপদসীমা: ২২.৭১ মিটার, সর্বোচ্চ বিপদসীমা: ২৩.৩৫ মিটার। |
ময়ুরাক্ষী |
• নারায়ণপুর: ২৩.৭৬০ মিটার (সকাল ৬টা), ২৩. ৮৯০ মিটার (সকাল ৯টা)। বিপদসীমা: ২৭.৯৮৮ মিটার, সর্বোচ্চ বিপদসীমা: ২৮.৭৯০ মিটার। |
|
|
ব্যারেজ থেকে ছাড়া জলের পরিমাণ |
• তিলপাড়া: ১২,০০০ কিউসেক (দুপুর ১২টা পর্যন্ত)।
• বৈধরা: ১৪,০০০ কিউসেক। (দুপুর ২টা পর্যন্ত)।
• দেউচা: ১,১০২ কিউসেক (সকাল ৮টা পর্যন্ত)।
মাসাঞ্জোর: নেই। |
|
|
|
 |
|
|