হাড়গোড় শনাক্তের দাবি |
সুশান্তকে জেরা করতে হেফাজতে চাইল সিআইডি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
হাইকোর্টে আগাম জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরে দীর্ঘ অজ্ঞাতবাস ভেঙে প্রকাশ্যে এসেছিলেন। হাইকোর্টের ১৮ জুলাইয়ের সেই নির্দেশের তিন সপ্তাহের মধ্যেই ফের গ্রেফতারির আশঙ্কা তাড়া করতে শুরু করল গড়বেতার বিধায়ক সুশান্ত ঘোষকে। বেনাচাপড়ার হাড়গোড়-কাণ্ডে প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্তবাবুকে জেরা করার জন্য নিজেদের হেফাজতে চাইল সিআইডি। মঙ্গলবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে তাঁর জামিন খারিজের আর্জি জানায় সরকারপক্ষ। কাল, বৃহস্পতিবারই এ নিয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।
চন্দ্রকোনার বেনাচাপড়ায় সুশান্তবাবুর আদি বাড়ির অদূরে দাসেরবাঁধ থেকে মাটি খুঁড়ে কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয় জুনের গোড়ায়। ওই হাড়গোড় ২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর কেশপুরের পিয়াশালায় সিপিএমের হামলায় নিহত কয়েক জন তৃণমূল কর্মীর বলে দাবি ওঠে। কেশপুরের খেতুয়ার শ্যামল আচার্য প্রথম দাবি করেন, তাঁর বাবা অজয় আচার্যের দেহাবশেষ রয়েছে ওই হাড়গোড়ের মধ্যে। আনন্দপুর থানায় ৪০ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের করেন শ্যামল। সেই মামলাতেই অন্যতম অভিযুক্ত সুশান্তবাবু। মামলা দায়ের হওয়ার পরেই অজ্ঞাতবাসে চলে যান তিনি। |
 |
মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে সুশান্ত ঘোষ |
সেই হাড়গোড় শনাক্তকরণেই এ বার ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে জানিয়ে বলে মুখবন্ধ খামে একটি রিপোর্ট পেশ করেছেন সরকারপক্ষের আইনজীবীরা (অন্তত দু’জনের দেহাবশেষ শনাক্ত হয়েছে বলে সিআইডি-র একটি সূত্রের খবর)। এ দিন শুধু সুশান্তবাবুর জামিন খারিজের আর্জিই নয়, তাঁকে জেরা করতে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতে পাঠানোরও আর্জি পেশ করেন সরকারি আইনজীবীরা। সুশান্তবাবুর আইনজীবীরা সময় চাইলে বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেন বিচারক মনোজ রাই।
হাইকোর্ট মূলত হাড়গোড় শনাক্ত না-হওয়ার কারণেই সুশান্তবাবুর আগাম জামিন মঞ্জুর করেছিল। প্রাক্তন মন্ত্রী গত ২৬ জুলাই প্রথম প্রকাশ্যে আসেন। হাইকোর্টের নির্দেশানুসারে সে দিন মেদিনীপুর আদালতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি। এর পরেই অবশ্য সরকারপক্ষ জামিন বাতিল করতে সুপ্রিম কোর্টে যায়। মঙ্গলবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে ফের হাজিরার দিন ছিল সুশান্তবাবুর। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে জামিন খারিজের আর্জি জানান সিআইডি-র দুই আইনজীবী দেবাশিস রায় ও রাজদীপ মজুমদার। এই মামলাকে তারা যে গুরুত্ব দিচ্ছে, হাইকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি দেবাশিসবাবুকে মেদিনীপুর আদালতে পাঠিয়ে তারও ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার। এ দিন দুপুর দু’টোর সামান্য পরে কলকাতা থেকে সরাসরি আদালতে পৌঁছন সুশান্তবাবু। আদালত চত্বরে ছিল প্রচুর পুলিশ। সুশান্তবাবুর গাড়িটিকে এজলাসের খুব কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পৌনে তিনটে নাগাদ ফেরার সময়ে অবশ্য মৃদু বিক্ষোভের মুখে পড়তেই হয় সুশান্তবাবুকে। |
|