|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
অপরিচ্ছন্ন কামরা কি ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’! |
নোংরা কামরায় ইঁদুর, আরশোলা, কী করছে কমিটি’ (২৫-৭) শীর্ষক সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানাই, সংবাদটি তথ্যগত দিক থেকে ঠিক নয়। প্যাসেঞ্জার অ্যামেনিটিজ কমিটি এবং প্যাসেঞ্জার সার্ভিসেস কমিটির বিধি অনুযায়ী দুটি কমিটির সদস্যগণ মাসিক ৮০০০ টাকা সাম্মানিক পান। ২৫ বা ৫০ হাজার টাকা নয়। কিন্তু উল্লিখিত সংবাদে তাঁদের সাম্মানিক ৩০০ শতাংশ বেশি করে দেখানো হয়েছে। দুটি কমিটির চেয়ারম্যানদের সাম্মানিক মাসিক দশ হাজার টাকা। তা ছাড়া রেলবন্ধু নামে পত্রিকা এবং বয়স্ক যাত্রীদের জন্য প্ল্যাটফর্মে বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা ছাড়া দুটি কমিটির অন্যান্য সদর্থক ভূমিকাগুলি সংবাদে বর্ণিত হয়নি।
উল্লেখ্য, উক্ত দুটি কমিটি বিভিন্ন রেলওয়ে ও দিল্লিতে প্রতি মাসে একটি করে মিটিং করেন এবং রেলওয়ে বোর্ডকে ত্রৈমাসিক রিপোর্ট জমা দেন। দুটি কমিটির কাজের এক্তিয়ার নির্দিষ্ট করে রাখা আছে। সদস্যগণ বিভিন্ন আঞ্চলিক রেলওয়ে, ডিভিশন, স্টেশন ইত্যাদি পরিদর্শন করে স্থানভিত্তিক পর্যবেক্ষণ করেন। বস্তুত তাঁরা পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করে রেলওয়ে বোর্ডকে নানা বিষয়ে মতামত দিয়ে থাকেন।
দুটি কমিটির পক্ষ থেকেই রেলওয়েকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলি বর্তমানে রেলের তরফে কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিম্নোক্ত পরামর্শগুলি ইতিমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে।
১) কম দামে স্বাস্থ্যকর ও ভাল মানের খাবার সরবরাহ করতে এখন অবধি ৫০টি ‘জন আহার’ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। খাবারের দাম ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা।
২) রেলওয়ে/আই আর সি টি সি-কে খাবারের দাম ও মেনু কামরায় স্টিকারের মাধ্যমে যাত্রীদের অবগতির জন্য আটকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৩) নিয়মিত ট্রেনের প্যান্ট্রি কারগুলিতে ‘পেস্ট কন্ট্রোল’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনের কামরায় ‘পেস্ট কন্ট্রোল’-এর জন্য কমিটি একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
৪) রাজধানী, শতাব্দী ও দুরন্ত এক্সপ্রেস এবং গুরুত্বপূর্ণ দূরপাল্লার ট্রেনে ‘অন বোর্ড হাউস কিপিং স্কিম’ চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কিছু সময় অন্তর বাথরুম, দরজা ও কামরা চলন্ত অবস্থায় পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৮৮ জোড়া ট্রেনে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
৫) ১৬টি স্টেশনে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের সুবিধার জন্য ব্যাটারি চালিত গাড়ি (সেবা বাহন) চালু করা হয়েছে।
কোল্ডফিল্ড এক্সপ্রেসের প্রসঙ্গে জানাই, ট্রেনটি একটি বহুল ব্যবহৃত ট্রেন। অসংখ্য নিত্যযাত্রী এই ট্রেনটিতে যাতায়াত করেন। ট্রেনের বাথরুম থেকে জল উপচে পড়ার ঘটনাটি নিঃসন্দেহে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। যেহেতু উল্লিখিত সংবাদে যাত্রার তারিখ, নির্দিষ্ট কামরার নম্বর বা টিকিটের বিস্তারিত বিবরণ নেই, তাই ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান সম্ভব নয়। তবে ২৫ জুলাই, ২০১১ অর্থাৎ সংবাদ প্রকাশের দিনই কোল্ডফিল্ড এক্সপ্রেসের তিনটি রেকই পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু কোনও ত্রুটি ধরা পড়েনি।
দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের ইস্পাত এক্সপ্রেসে শ্রীমতী চিত্রেয়ী লোধ যদি কোনও অসুবিধাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন সেটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ট্রেনের কামরা পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করেছে:
১) সাঁত্রাগাছি, হাতিয়া, টাটা, খড়্গপুর ও রৌঢ়কেল্লায় যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কামরাগুলি সাফাই করা হয়।
২) চলন্ত ট্রেনের স্টপেজের সময় বাথরুম ও কোচের বহির্ভাগ পরিষ্কার করা হয়।
৩) রেল বোর্ডের নির্দেশ মেনে ট্রেনে পেস্ট কন্ট্রোলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীদের কাছ থেকে এই ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ পেলে ঠিকাদার সংস্থাকে জরিমানা করার ব্যবস্থা আছে।
সমীর গোস্বামী। মুখ্য জনসংযোগ অফিসার, পূর্ব রেলওয়ে, কলকাতা
সৌমিত্র মজুমদার। মুখ্য জনসংযোগ অফিসার, দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে, গার্ডেনরিচ
|
প্রতিবেদকের উত্তর: রেলের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কমিটি ও যাত্রী পরিষেবা কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সাম্মানিক যথাক্রমে ১০ হাজার ও ৮ হাজার টাকা ঠিকই। তবে সাম্মানিক ছাড়াও রেল কর্তৃপক্ষ ওই সব কমিটির সদস্যদের বাড়ি ভাতা (শুধু চেয়ারম্যান), চিকিৎসা ব্যবস্থা, বিনা পয়সায় শীতাতপ প্রথম শ্রেণিতে (পাশ) স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়েও ভ্রমণ, নি-খরচার মোবাইল, ল্যান্ড লাইন (এসটিডি)-সহ নানা সুযোগ দিয়েছে। এই সব সুযোগ-সুবিধে যোগ করলেই তো (প্রতিবেদেন যা লেখা হয়েছে) ওই সাম্মানিকের পরিমাণ অনেক বেশি টাকা দাঁড়াবে। ট্রেনের কামরায় ইঁদুর ও আরশোলা মারার জন্য নিয়মিত যে সব পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছে, কিন্তু আসলে যাত্রীরা দেখছেন, রাতে ট্রেনের আলো নিভে গেলেই বিছানায় ইঁদুর খেলছে, চাদরে আরশোলা।
ট্রেনের খাবার নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগের কথা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারও কোনও সদুত্তর রেল কর্তৃপক্ষ দেননি। তাঁদের দাবি, কমিটি ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং ও ট্যুরিজিম সার্ভিসের দাম এবং মেনু কামরায় আটকে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তা সত্ত্বেও রেলের খাবারের মান নিয়ে রাজধানী, দুরন্ত-র যাত্রীদের সঙ্গে ক্যাটারিং সার্ভিসের প্রায়ই গোলমাল হচ্ছে। খাবার খেয়ে অসুস্থ যাত্রীদের চিকিৎসা করা থেকে শুরু করে ক্ষমাও চাইছেন রেল কর্তারা। মাঝেমধ্যে রেল পুলিশকেও হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে মারামারি থামাতে। তাই খাবারের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
রেল কর্তৃপক্ষ ‘রেল বন্ধু’ এবং বয়স্কদের জন্য ব্যাটারিচালিত গাড়ির কথা ছাড়া কমিটি আর কী কী কাজ করেছেন তা উল্লেখ করলেন না কেন? ট্রেনে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। চার-চারটি সংস্করণ বেরিয়ে যাওয়ার পরেও বেশির ভাগ যাত্রীই ওই বই কোনও দিন দেখতেই পাননি। রেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, তাঁরা রাজধানী, শতাব্দী ও দুরন্তের মতো ট্রেনে চলন্ত অবস্থাতেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা (অন বোর্ড হাউস কিপিং) রাখছেন। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কামরাগুলি সাফাই হচ্ছে। খুব ভাল। কিন্তু অন্য ট্রেনগুলির জন্য? যাত্রী তো সেখানেও আছেন। তাঁদেরই অভিযোগের কিছু তুলে ধরা হয়েছে এখানে। |
|
|
 |
|
|