রণক্ষেত্র লন্ডন

প্রাণ বাঁচাতে
অ্যামি ওয়েস্টন। ক্রয়ডনে রবিবার রাতের সংঘর্ষের এক জন প্রত্যক্ষদর্শী। সাংবাদিকদের তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বারবার শিউরে উঠছেন অ্যামি। রবিবার রাতে ক্রয়ডনে একের পর এক এলাকায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল সংঘর্ষকারীরা। এক রাতে সর্বস্ব হারিয়েছেন অনেকেই। এমনকী প্রাণ বাঁচাতে উঁচু বাড়ি থেকে লাফ দিতেও দ্বিধা করেননি কেউ কেউ। সে রকমই একটি ঘটনার কথা জানালেন অ্যামি। বললেন, “দাউদাউ করে জ্বলছে বাড়িটা। বাড়ির নীচে একটা জটলা। সেখান থেকে এক জন সাদা জামা পরা লোক চিৎকার করে বলছে, ‘জানলার কাছে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে লাফ দেবে।’ দেখতে দেখতেই, মেয়েটি জানলা দিয়ে লাফ দিল। লোকটা দৌড়ে গেল। কিন্তু পুলিশ তাকে এক ধাক্কায় সরিয়ে দিয়ে মেয়েটিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে পড়ল। তার পর সেখান থেকে সকলকে হঠিয়ে দিল।” মেয়েটির ছবিও তোলেন অ্যামি। জানালেন, “পুলিশের ভয়ে জামার তলায় লুকিয়ে ক্যামেরা নিয়ে আসি। মেয়েটি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল কিনা জানি না। তবে ভগবানের কাছে প্রার্থনা, ও যেন সুস্থ থাকে।”

‘পরিষ্কার’ লন্ডন
‘আসুন, পরিষ্কার করি আমাদের প্রিয় শহর লন্ডন’। ফেসবুক আর টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটগুলোয় এখন শুধুই এই বার্তা। আর তাতে সাড়া দিয়েই হাজার হাজার মানুষ নেমে পড়েছেন সাফাই অভিযানে। টুইটারে ‘অ্যাটরায়টক্লিনআপ’-এ মাত্র কয়েক ঘণ্টায় যোগ দিয়েছেন অন্তত ১৮ হাজার জন। সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত লন্ডনকে তার পুরনো চেহারা ফিরিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর সকলে। ক্রয়ডন, হ্যাকনি, এনফিল্ডে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিষ্কার করার কাজ চলছে পুরোদমে। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার লোক। এমনই এক জন লুইশামের ক্লেরে পার্কিনসন। ২০ জনের একটি দল তৈরি করেছেন তিনি। বললেন, “এই রকম সময়ে যে কোনও ধরনের সাহায্যই অনেক। কাউকে এক কাপ চা করে দিলেও মনে হয়, একটু কিছু তো করা গেল।”

২০ হাজার ফোন
এক রাতে অন্তত ২০ হাজার ফোন পেল লন্ডন পুলিশ। রবিবার রাতে সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত লন্ডনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুলিশের কাছে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি ফোন এসেছিল। কোথাও থেকে লুঠপাটের খবর, কোথাও ভাঙচুর, কোথাও বা আগুন লাগার ঘটনা। সারা রাত স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের দফতরে ফোন বাজার কোনও বিরাম ছিল না। পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক কালে এ রকম লুটপাঠ বা অরাজকতা কখনও দেখা যায়নি। সারা রাত শুধু ফোনের পর ফোন।”

জায়গা নেই
দাঙ্গায় জেরবার শহর। অবস্থা সামলাতে রাস্তায় নেমেছে ১৬ হাজার পুলিশ। রবিবার এক রাতেই প্রায় ২০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে সমস্যায় পড়েছে পুলিশ। মেট্রোপলিটান পুলিশ সার্ভিসের সমস্ত জেল ভর্তি। তাই আপাতত কোনও সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হলে স্থানীয় জেলেই রাখা হচ্ছে সেই বন্দিকে।

এক নজরে

ব্রিক্সটন দাঙ্গা
এপ্রিল, ১৯৮১। দক্ষিণ লন্ডনের ল্যামবেথে বর্ণবিদ্বেষী হামলায় বাড়িতে আগুন দিয়ে সূত্রপাত। দাঙ্গায় বেশ কয়েক জন কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যু। পরে ব্রিক্সটনে পুলিশের বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন সায়াম্প।’। পরে পুলিশের সামনে এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু ঘিরে সংঘর্ষ ছড়ায়।

ব্রডওয়াটার ফার্ম সংঘর্ষ
অক্টোবর, ১৯৮৫। নিম্নবিত্ত এলাকা ব্রডওয়াটার ফার্ম আবাসন এলাকায় পুলিশের তল্লাশি চলছিল। বাড়িতে তল্লাশির সময় ভয়ে মারা যান এক মহিলা, সিন্থিয়া জ্যারেট। সেই ঘটনার জেরে খুন হন এক পুলিশ অফিসার। পুলিশ-কৃষ্ণাঙ্গ যুবকদের সংঘর্ষ ছড়ায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.