|
|
|
|
কাকার মৃত্যু, ‘ডাইন’কে পিটিয়ে মারল জনতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
তুকতাক করে কাকার মৃত্যুর ঘটিয়েছে, এই অপবাদে ভাইপোকে পিটিয়ে মারল একদল উত্তেজিত জনতা। সোমবার কোচবিহার কোতোয়ালি থানার চকচকা গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁপাগুড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাটি চাউর হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পিটিয়ে মারার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গণপিটুনিতে মৃত ওই ব্যক্তির নাম সুবল দে (৬২)। তাঁর বাড়ি চাপাগুড়ি এলাকায়। তাঁর কাকা মণিরাম দে (৭২) সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। শিলিগুড়িতে তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে কাকা মৃত্যুর পর এদিন দেহটি বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় একদল বাসিন্দা তুকতাকের বিষয়টি প্রচার করে সুবল ‘ডাইন’ প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। হঠাৎ নিহতের উপর লাঠি, বাটাম নিয়ে চড়াও হয় একদল উত্তেজিত জনতা। স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে জখম হন নিহত সুবলবাবুর স্ত্রী গৌরী দেবীও। ঘটনাস্থলেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পুলিশ খবর পেয়ে এলাকায় যায়। উত্তেজনা কমাতে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ডাইন সন্দেহে একজনকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এলাকায় এর থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনার তদন্তে শুরু হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় জড়িতদের ধরা হবে।”
বৃদ্ধ মণিরাম দে এবং তাঁর ভাইপো নিহত সুবলবাবু পাশাপাশি বাড়িতেই থাকতেন। মণিরামবাবুর পাঁচ মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তাঁর কোনও ছেলে নেই। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি থাকতেন। পুজোপার্বণ করেই সময় কাটাতেন। কয়েকদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। রবিবার শিলিগুড়ি থেকে চিকিৎসক দেখিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে তিনি মারা যান। কাকার মত সুবলবাবুও পুজোপার্বণ নিয়ে থাকতেন বলে বলে তাঁকে ‘ডাইন’ বলে অভিযোগ করেন এলাকার একাংশ বাসিন্দারা। তিনি ‘বাণ’ মারাতেই মণিরামবাবু মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। সুবলবাবুর ভাই নির্মল দে বলেন, “কাকা বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। জন্ডিসও ধরা পড়ে। তার পরেও দাদার নামে বদনাম দেয় ৪-৫ জন। উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছি। দাদাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।” চকচকা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা রায় বলেন, “কুসংস্কারের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রচার করা হবে।” |
|
|
|
|
|