|
|
|
|
জল কমছে, জলবন্দি বহু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চাঁচল |
দ্রুত গতিতে কমছে ফুলহারের জল। রবিবার সন্ধ্যায় হলুদ সঙ্কেত সীমার নিচে নেমে এসেছে ফুলহার। জল কমতে থাকায় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার বন্যা পরিস্থিতিরও দ্রুত উন্নতি হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তরুণ সিংহরায় বলেন, “ফুলহারের জল দ্রুত গতিতে কমায় হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে।” এ দিকে, ফুলহারের জল গত দুই সপ্তাহ ধরে জলবন্দি হয়ে রয়েছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। জলে যাতায়াতের জন্য প্রশাসনের কাছে বারবার নৌকার জন্য আবেদন জানিয়েও তা না মেলায় চরম বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা। ফুলহারের জলে প্লাবিত রতুয়ার জন্য ১৪টি নৌকা বরাদ্দ করা হলেও হরিশ্চন্দ্রপুরের জন্য কোনও নৌকা দেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন কর্মহীন হয়ে থাকায় হরিশ্চন্দ্রপুরের দুর্গতদের মধ্যে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। তাঁদের কাছে ত্রাণের খাবারও পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ। কিছু বাসিন্দাকে শুধু একটি করে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। চরম সংকটে পড়েছে এলাকার ১০ হাজারের বেশি গবাদি পশুও। ত্রাণ নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে এমনই টালবাহানার অভিযোগ সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার কাছে জানিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক তজমূল হোসেন। গত রবিবার মালদহে এসেছিলেন সেচমন্ত্রী। সেখানেই সেচমন্ত্রীর সামনে ত্রাণ নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিধায়ক। সেচমন্ত্রী সমস্ত অভিযোগ শোনার পর জেলা প্রশাসনের কর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। বিধায়ক বলেন, “রবিবার পর্যন্ত পরিবার পিছু একটি মাত্র ত্রিপল ছাড়া কিছু দেওয়া হয়নি। ঘরবাড়ি হারিয়ে বেশ কিছু বাসিন্দা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ত্রাণের খাবারও জুটছে না। নৌকা নেই। কেউ যাতায়াতও করতে পারছেন না। গবাদি পশুগুলিও ধুঁকছে। অথচ প্রশাসন নির্বিকার। সেচমন্ত্রী বলে জানিয়েছি। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে ফের সেচমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানাব।” মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তরুণ সিংহ রায় বলেন, “হরিশ্চন্দ্রপুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে নৌকার ব্যবস্থা করার জন্য জেলাশাসক ওই এলাকার বিডিওকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ত্রাণ নিয়ে বিধায়কের অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক নয়। দুগর্তদের ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের চাল এবং গোখাদ্য দ্রুত দুর্গতদের কাছে পৌঁছাতে বলা হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের দুর্গতদের জন্য ১৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। এরমধ্যে ৩ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রতুয়ায় দুর্গতদের জন্য ২৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। রতুয়া এবং হরিশ্চন্দ্রপুরে দুটি ব্লকেই ৫ মেট্রিক টন করে গোখাদ্যের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে রতুয়ায় দুর্গতদের ‘পাউচে’ ভরা আধ লিটার করে জল বিলি করা হয়েছে। ১৭ হাজার বাসিন্দাকে সমস্যা না মেটা পর্যন্ত তা দেওয়া হবে। রতুয়ায় ফুলহারের অস্থায়ী বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ এবং রতুয়া-১ ব্লকে অসংরক্ষিত বহু এলাকায় ফুলহারের উপচে পড়া জলে বাসিন্দারা জলবন্দি হয়ে পড়েন। অথচ প্রশাসনের তরফে একটি মাত্র ত্রিপল ছাড়া দুর্গতদের কিছু জোটেনি বলে অভিযোগ। |
|
|
|
|
|