|
|
|
|
হাসপাতালে তাণ্ডব, আগুন লাগানোয় ধৃত ২ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
বিনা চিকিৎসায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর, আগুন দেওয়ার ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে ডিওয়াইএফের সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক-সহ দুই সমর্থককে ধরেছে পুলিশ। রবিবার পথ দুর্ঘটনায় জখম সাগর ঘোষকে হাসপাতালে রাত ৮টা ৪০ মিনিট নাগাদ ভর্তি করার পরে রাত ৯টা নাগাদ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকে খবর দেওয়া হয়। অভিযোগ, প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষার পরে চিকিৎসক আসেন। তার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পরেই হাসপাতালে তান্ডব শুরু হয়। রোগীর আত্মীয়স্বজন এবং পরিচিতরা ওয়ার্ড মাস্টারের অফিস ভেঙে তছনছ করে দেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালের রেজিস্টার-সহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। মারধর করা হয় কর্তব্যরত ওয়ার্ড মাস্টার গোবিন্দ নাগকে। গোবিন্দবাবু হআইসিইউতে ভর্তি। হাসপাতালে ভাঙচুর, মারধর এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক কৌশিক রায়-সহ দুজনকে। তৃণমূলের অভিযোগ, ডিওয়াইএফ কর্মীরা পরিকল্পিত ভাবেই হাসপাতালে তান্ডব চালিয়েছে। তৃণমুলের শহর ব্লক কার্যকরী সভাপতি মনতোষ রায় বলেন, “সদর হাসপাতালে রবিবার রাতে ডিওয়াইএফের নক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। দীর্ঘক্ষণ ধরে তান্ডব চলায় বহু গরিব রোগী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটা বামফ্রন্টের চক্রান্ত। দোষীদের যথাযথ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন হবে।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যে চক্রান্তের অভিযোগ তলেছে ডিওয়াইএফ। সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য দীপশুভ্র সান্যাল বলেন, “রবিবার রাতে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত গাফিলতি রয়েছে। এই ঘটনার প্রশাসনিক তদন্ত চাই। তবে হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনাও দুঃখজনক। আমরা খবর পেয়ে যাওয়ার পরে দেখি ততক্ষণে ভাঙচুর হয়ে গিয়েছে। তবে পুলিশ মিথ্যে অভিযোগে আমাদের দুই সমর্থককে গ্রেফতার করেছে।” |
|
ছবি: সন্দীপ পাল। |
রাত ৯টার সময়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসককে ডাকার জন্য ‘কল বুক’ লেখা হলেও, সেই খবর এক ঘন্টা পরে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও চিকিৎসকের বাড়ি হাসপাতাল থেকে প্রায় ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে লেখা কল বুক চিকিৎসকের কাছে পৌঁছতে এক ঘন্টা লেগে যাওয়ার কারণ হিসেবে হাসপাতাল সুত্রে জানানো হয়েছে, রাতের বেলায় চিকিৎসকদের খবর দেওয়া বা অন্যান্য কাজের জন্য বরাদ্দ থাকে একটি মাত্র গাড়ি। রাতে হাসপাতালে একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার থাকায় সেই গাড়িটি অন্য চিকিৎসককে আনতে গিয়েছিল। রাতে লাটাগুড়ির রাস্তায় মোটর বাইক দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর চোট লাগা সাগর ঘোষ যখন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তখন চিকিৎসককে আনতে যাওয়ার গাড়ি পাওয়া যায়নি। গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে করতেই রোগীর মৃত্যু হয়। যদিও গাড়ি না-পেয়ে চিকিৎসককে কেন টেলিফোনে খবর দেওয়া হয়নি তার কোনও সদুত্তর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পাওয়া যায়নি। হাসপাতাল সুপার ব্রজেশ্বর মজুমদার বলেন, “দিনের বেলায় হাসপাতালে দুটি গাড়ি থাকে। রাতের বেলায় থাকে মাত্র একটি গাড়ি। রবিবার সেই গাড়িটি অন্যত্র ব্যস্ত থাকাতেই চিকিৎসককে খবর দিতে দেরি হয়ে যায়। রাতে আরও একটি গাড়ি বরাদ্দ করার জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি।” এ দিকে রবিবার রাতে ভাঙচুরের ঘটনায় চিকিৎসক বা চিকিৎসা কর্মীদের গাফিলতি নেই দাবি করে সোমবার সুপারকে স্মারকলিপি দেয় হেলথ সার্ভিস ডক্টর আসোসিয়েশন। নিরাপত্তার দাবিতে সুপারকে বিক্ষোভ দেখিয়েছে নার্সদের সংগঠনও। |
|
|
|
|
|