সঙ্গী স্টোর কিপারও
রক্ত দিলেন ওয়ার্ড মাস্টারই
ওঁরা কাজ করেন না। জড়িত নানা ধরনের দুর্নীতিতে। রাজ্য জুড়ে প্রতিটি হাসপাতালে এমনই ভুরি ভুরি অভিযোগ স্টোর কিপার আর ওয়ার্ড মাস্টারদের বিরুদ্ধে।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে সোমবার অবশ্য একটু অন্য রকম দুই কর্মীর দেখা পেল দাঁইহাটের অনিল দাসের পরিবার। হাসপাতালের স্টোর কিপার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আর ওয়ার্ড মাস্টার অলিপ সরকার রক্ত দিয়ে প্রাণে বাঁচালেন অনিলবাবুকে। বাঁচালেন দালালের হাত থেকেও। এর আগে গত মার্চ মাসে এক রোগিনীকে বাঁচাতে রক্ত দিয়েছিলেন হাসপাতালের সহকারী সুপার অনন্য ধর। সেই ধারাই বজায় রইল।
অনিলবাবু দাঁইহাট শহরের কাছে বেঙা গ্রামের বাসিন্দা। বয়স ৫৮। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। বিভিন্ন নথিপত্র পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা দেখেন, অনিলবাবু মূত্রথলির ক্যানসারে আক্রান্ত। বছর তিনেক আগে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর কেমোথেরাপি হয়। তাঁর ছেলে পার্থবাবু বলেন, “বাবা বেশ কয়েক বছর সুস্থ ছিলেন। হঠাৎ গত সপ্তাহ থেকে ফের বাড়াবাড়ি শুরু হয়। এ দিন হাসপাতালে ভর্তি করার পরেই চিকিৎসকেরা জানান, ওঁর চার ইউনিট রক্ত দরকার। তার মধ্যে এ দিনই দু’ইউনিট রক্ত দিতে হবে।”
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অলিপ সরকার। নিজস্ব চিত্র।
কিন্তু হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে যেতেই পার্থবাবুকে সেখানকার কর্মীরা জানিয়ে দেন, অনিলবাবুর প্রয়োজনীয় বি-পজিটিভ রক্ত সেখানে নেই। এর পরে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতেই তিনি পড়েন দালালদের খপ্পরে। পার্থবাবুর অভিযোগ, “দু’জন লোক এসে আমাকে বলল, বি-পজিটিভ রক্ত পাওয়া যাবে। দু’ইউনিটের জন্য দিতে হবে ১৪০০ টাকা। কিন্তু ওই টাকা আমরা তখন জোগাড় করতে পারিনি। দিনভর রক্তের জন্য এ দিক ও দিক দৌড়ে বেড়িয়েছি। রক্তের ব্যবস্থা করতে না পেরে সুপারকে সব খুলে বলি।” হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এক দিকে ওঁরা দালালের খপ্পরে পড়েছেন, আর অন্য দিকে অনিলবাবুর হিমোগ্লোবিন তখন ৪ মিলিগ্রামে নেমে এসেছে। তখন ওয়ার্ড মাস্টার আর স্টোর কিপারকে রক্ত দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই। ওঁরা এক মুহূর্তের জন্যও দ্বিধা করেননি।”
দালাল উৎখাত করতে হাসপাতাল সুপারের কাছে এ দিন তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন। দিনের শেষে পার্থবাবুর কথায়, “আমি সুপারের দেখা পাওয়ায় আমার বাবা হয়তো সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু যাঁরা সুপারের দেখা পাবেন না, তাঁদের তো দালালের পাল্লায় পড়ে টাকা খোয়াতে হবে।” এই প্রসঙ্গে সুপারের দাবি, “এক বছর কাটোয়ায় আছি। প্রথম এই সমস্যা উপলব্ধি করলাম। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অনিলবাবুকে রক্ত দেওয়া শুরু হয়েছে সন্ধ্যাতেই। ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে ফিরে দুই রক্তদাতা বলেন, “ওই রোগীর জন্য রক্ত দিতে পেরেছি। উনি সুস্থ হয়ে উঠলে আরও ভাল লাগবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.