|
|
|
|
বেলডাঙার কাছে অপহৃত ব্যবসায়ী, মুক্তিপণের দাবি |
পীযূষ সাহা • মালদহ |
সেবাব্রত মুখোপাধ্যায় • বেলডাঙা |
মালদহ থেকে কলকাতা আসার পথে বেলডাঙার কাছে অপহৃত হয়েছেন এক চিটফান্ডের কর্তা। উত্তরবঙ্গে তাঁর কাঠের কারবারও আছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
শনিবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে গাড়ি থামিয়ে অজয় কর্মকার নামে ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়। তবে এ ব্যাপারে পুলিশকে জানানো হয়েছে ঘটনার অন্তত চব্বিশ ঘণ্টা পরে রবিবার গভীর রাতে। কেন? প্রশ্ন তা নিয়েই।
অজয়বাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অপহরণই নয়, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার ফোন করে প্রথমে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে অবশ্য ‘দরদাম’ করে ওই মুক্তিপণ কমতে কমতে ২০ লক্ষে নেমেছে। তবে সে টাকা কোথায় কবে দিতে হবে, কিংবা তা দিলেও অজয়বাবুকে ‘মুক্তি’ দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁর পরিবারের।
পুলিশ জানায় একটি স্করপিও এবং একটি টাটা-সুমো গাড়িতে ১৭ জন মিলে কলকাতায় যাচ্ছিলেন। স্করপিও গাড়িটিতে ছিলেন মালদহের ওই ব্যবসায়ী। রাত তিনটে নাগাদ বেলডাঙায় গানি ঢোকার মুখে জনা বারো যুবক পথ আটকে আজয়বাবুকে খুঁজতে থাকে। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ফলে অজয়বাবুকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে বাধা দেওয়ার আর সাহস দেখাননি তাঁর সঙ্গীরা। ব্যবসায়ী উদ্ধারে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ পুলিশ যৌথ অভিযান শুরু করে তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। মালদহের পুলিশ সুপার ভুবন মন্ডল বলেন, “মালদহের মানিকচকের মথুরাপুরের কাঠ ব্যবসায়ী অজয় কমর্কার ১৮ জন কর্মীকে নিয়ে দুটি গাড়িতে করে কলকাতায় যাচ্ছিলেন। বেলডাঙ্গার কাছে ১০-১২ জন যুবক মোটর সাইকেলে এসে পথ আটকে জোর করে ওই এজেন্টকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ চেয়ে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে হুমকি দিচ্ছে। তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”
ব্যবসায়ীর স্ত্রী চন্দনাদেবী বলেন, “অপহরণকারীরা প্রথমে ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল। এত টাকা কোথায় পাব বলতেই অপহরণকারীরা এক ধাক্কায় ২০ লক্ষে নেমে আসে। তারা স্পষ্টই জানায়, ‘টাকা না দিলে তোর স্বামীর বডি পাবি!” জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচকের কাঁকড়িবাধা গ্রামের বাসিন্দা অজয়বাবু কাঠের ব্যবসা করেন। কাঠের আসবাবপত্রের একটি শো-রুমও রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি তাঁর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় একটি চিটফান্ডের ব্যবসাও রয়েছে। ওই লগ্নি সংস্থাটি ১০ মাসে দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে বহু আমানতকারী প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগও রয়েছে। সেই রোষ থেকেই কেউ তাকে অপহরণ করেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
৪ মাস আগে ওই চিটফান্ডটি উঠে যায় বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ফলে বহু আমানতকারী পথে বসে। এ দিকে ওই সংস্থাটি উঠে গেলেও অজয়বাবু অবশ্য অন্য একটি চিটফান্ডে যোগ দিতে দেরি করেননি। সেই নতুন সংস্থার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শনিবার দুটি গাড়িতে অজয়বাবু কলকাতা যাচ্ছিলেন। |
|
|
|
|
|