|
|
|
|
টানা বৃষ্টিতে ঝুলনের মুখে নাজেহাল নবদ্বীপ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
বৃষ্টির সঙ্গে সমান তালেই বেড়ে চলেছে নদীর জলের উচ্চতা। সপ্তাহ শেষে তিন দিনের ছুটি তাই জলেই গেল। হোটেলে ঘর খালি। বুকিং বাতিল। যাঁরা আগাম গাড়ি ভাড়া করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই গাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছেন। অগস্টে পরপর তিনটি তিন দিনের সপ্তাহান্তে পর্যটন মরসুমের যে বিরাট লাভ হবে বলে ব্যবসায়ীরা আশা করেছিলেন, তা আপাতত নিরাশই করেছে। তবে এখনও দু’টি তিন দিনের ছুটি বাকি। ব্যবসায়ীদের আশা, তত দিনে রোদ উঠবে। এই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে পরের দু’টি ছুটির আনন্দে।
কিন্তু নবদ্বীপ-মায়াপুরে এখনই পর্যটনের মরসুম। রাত পোহালেই ঝুলন। বৈষ্ণবদের কাছে মহোৎসব। নানা মঠে সেই উৎসবে প্রতি বারই প্রচণ্ড ভিড় হয়। কার্যত গত শনিবার থেকে দুই শহরের সব হোটেল, লজ ভর্তি থাকার কথা। অন্য বার থইথই করে লোক। বরং হোটেল মালিকেরাই ঘরের দর এই সময়ে ঘরের দাম বাড়িয়ে দেন--ঠিক তখনই শূন্য মন্দির। এখনও পর্যন্ত হোটেলগুলি মোটামুটি ফাঁকাই।
জেলা সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ অগস্ট এখানে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৯ মিলিমিটার, ৭ অগস্ট ৪.৪০ মিলিমিটার এবং ৮ অগস্ট ২৪ মিলিলিটার। পূর্বস্থলীর সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “গত তিন দিনে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে যথাক্রমে ৩৫.০২ মিলিমিটার, ৭.২০ মিলিমিটার এবং ১৫.৬ মিলিমিটার।” ৬ অগস্ট বহরমপুরে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৭৫.৮০ মিলিমিটার। কান্দিতে ৩৯ মিলিমিটার। ৭ অগস্ট বহরমপুরে বৃষ্টি হয়েছে ৩.৪০ মিনিমিটার, কান্দিতে ১৭.২০ মিলিমিটার।
এর সঙ্গে নবদ্বীপে ভাগীরথীর জলস্তর বেড়ে হয়েছে ৮.২০ সেন্টিমিটার। গত রবিবার তা ছিল ৭.৫৯ সেন্টিমিটার। প্রতি ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে গঙ্গার জল। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার কোনও পরিবর্তন না হলে ঝুলন উৎসব পর্যটক শূন্যই থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
হোটেল ও লজ মালিকদের সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, “গত তিন দিন ধরে বেশিরভাগ হোটেলই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অথচ এমন সময় এটা হওয়ার কথা নয়। টানা তিন দিন ছুটি। এই সময়ে ছোটখাট দূরত্বে বেরিয়ে পড়েন। তাঁরা সকলেই যে আগে থেকে ঘর ভাড়া করেই আসেন, তা নয়। তাঁরা আসেননি। উল্টে যাঁরা ঝুলনের জন্য আসবেন বলে রেখেছিলেন, তাঁরাও চূড়ান্ত করে কিছু জানাননি।”
নবদ্বীপের এক পর্যটন ব্যবসায়ী কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, “অনেকেই গাড়ি করে মঠ-মন্দিরের ঝুলন দেখতে যান। সেই ভিড় এ বার আর নেই। চুপচাপ বসে রয়েছি।” নবদ্বীপ জলপথ পরিবহণ কর্মচারী সমিতির স্বপন সিংহ বলেন, “টানা ছুটির জন্য নিত্যযাত্রী নেই। আর পর্যটন খুবই সামান্য। সাধারণ ভাবে এই সময়ে যে ভিড় হওয়া উচিত, তার ৪০ শতাংশ লোকও আসছেন না। আবহাওয়া খুবই খারাপ। নৌকা চলাচলে ব্যাঘাত হচ্ছে। ১৫-২০ মিনিট অন্তর নৌকা ছাড়তে হচ্ছে।”
নবদ্বীপের মঠ-মন্দিরে ঝুলন শুরু হয়ে গেলেও বারোয়ারি ঝুলনের অবস্থা কিন্তু খুবই বেহাল। |
|
|
|
|
|