|
|
|
|
চার্চিলের মেজাজে বাগানে ওডাফা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মোহনবাগানে প্রথম দিন এসেই ওডাফা ওনিয়েকা ওকোলি বুঝিয়ে দিলেন, তাঁকে সামলানো সমস্যা হবে। তাঁকে শৃঙ্খলায় বেঁধে রাখা কঠিন। মোহনবাগানের অধিকাংশ কর্তাকেই তিনি তোয়াক্কা করবেন না।
মোহনবাগানে প্রথম দিনই তিনি চার্চিলের মেজাজে!
প্র্যাক্টিস শুরুর নির্ধারিত সময় ছিল সকাল দশটায়। মোহনবাগান সমর্থকরা বৃষ্টির মধ্যে অপেক্ষা করছিলেন ওডাফাকে দেখবেন বলে। তিনি সমর্থকদের জয়ধ্বনির মাঝে এলেন মিনিট পঞ্চাশ পরে। রহিম নবি ঢোকার সময় মজা করে বলছিলেন, “ভুল করে অন্য মাঠে চলে যাচ্ছিলাম। এত দিনের অভ্যাস।” ভিড়ের মধ্যে কেউ খেয়ালও করল না। খেয়ালও করল না, দিল্লি থেকে সুনীল ছেত্রী নির্ধারিত দিনে এলেন না। ডার্বি বললেন, তাঁকে আটকে দিয়েছে ফেডারেশন। “ওডা! ওডা!” চিৎকারের মধ্যেই সব ডুবে গেল।
কোচ স্টিভ ডার্বির সঙ্গে কথা সেরে ওডাফা বাড়ির পথে রওনা দেন। কথা ছিল, তিনি ও অস্ট্রেলিয়ান স্টপার সাইমন স্টোরি সরকারি সাংবাদিক সম্মেলন করবেন তাঁবুতে। ওডাফাকে তা বলা হলে তিনি গুরুত্বই দেননি। স্টোরি ও ডার্বি সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় ওডাফা ক্লাব থেকে বেরিয়ে যান। এক কর্তা তাঁবুতে দাঁড়িয়ে বললেন, “কী করব? ও তো বলছিল, খিদে পেয়েছে। কাল কথা বলব। ও তো আজ মাঠেই আসতে চাইছিল না। কাল অনেক রাতে এসেছে।” বাকিরা রীতিমত বিব্রত। অবশ্যই ‘খিদে’ পেলেও ক্লাবের খাবার খাননি ওডাফা। |
|
মোহনবাগান মাঠে ঢুকছেন সমর্থক পরিবৃত ওডাফা। ছবি তুলেছেন উৎপল সরকার |
কোচ ডার্বি এ দিন টিম মিটিংয়ে ফুটবলারদের বলেন, “আমি তোমাদের মা’ও হতে চাই না। স্ত্রীও হতে চাই না যে, বাড়তি নজরদারি করব। তোমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব তোমাদেরই নিতে হবে।” সেটা কি আদৌ প্রভাবিত করেছে ওডাফাকে? চার্চিলে থাকার সময় করিম বেঞ্চারিফা, কার্লোস পাহিরা, জোরান বা ভিনসেন্ট সুব্রহ্মনিয়মকেউ ওডাফাকে বাগে আনতে পারেননি। সবাইকে ক্লাব ছেড়ে চলে যেতে হয়। এ বার ডার্বি তাঁকে সামলাতে পারেন কি না, সেটাই প্রধান কৌতূহলী ব্যাপার। তাঁর পুরনো চোট সেরেছে কি না, সেটাও কেউ জানতে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়ান স্টপার সাইমন স্টোরি অবশ্য প্রথম দর্শনেই নজর কাড়েন। চেহারাতে। কথাবার্তাতে। অতীত ইতিহাসেও।
ফ্রাঙ্কো বারেসির ভক্ত স্টোরির জন্ম মেলবোর্নে। অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলার টোলগে ওজবে প্রথম বার এসেই নজর কেড়েছেন। স্টোরি অবশ্য তাঁকে চেনেন না। তাঁর বায়োডাটা বেশ ঝকঝকে। ২০০৬-’০৭ সালে তিনি মেলবোর্ন ভিকট্রি দলকে এ লিগ চ্যাম্পিয়ন করতে বড় ভূমিকা নেন। তার পরে স্কটল্যান্ড চলে যান স্টোরি।
স্কটল্যান্ডের প্যাটট্রিক থিসল ক্লাব তাঁকে কয়েক মাসের জন্য নিলেও দারুণ খেলায় স্টোরিকে তিন বছর রেখে দেয়। তার পরে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল হাঙ্গেরিতে। সেখানকার ক্লাবের সঙ্গে কথা হয়ে গেলেও আর্থিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলা হয়। স্টোরি সই করেন স্কটিশ এয়ারড্রি ইউনাইটেড ক্লাবে। গতবার তিনি এ লিগের নর্থ কুইন্সল্যান্ড টিমে নিয়মিত খেলেন। এ বার আর্থিক দুর্নীতির দায়ে ক্লাবটি এ লিগে খেলতে না পারায় মোহনবাগানের সঙ্গে কথা বলেন স্টোরি। ইন্টারনেটে উইকিপিডিয়া বলছে, তিনি সই করে ফেলেছেন মোহনবাগানে। ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র অবশ্য বললেন, “ওকে ট্রায়ালে দেখে তবে সই করানো হবে।”
আপনার প্রিয় ফুটবলার কে? এ দিন স্টোরির জবাব, “যখন যে আমার পাশে খেলে সে-ই আমার প্রিয় ফুটবলার।” কলকাতা কেমন লাগছে? স্টোরির মন্তব্য, “শুধুই তো বৃষ্টি!” নিজের পদবির উচ্চারণ করতে গিয়ে বললেন, “ওটা গল্পের ইংরেজি উচ্চারণ। কিংবা উঁচু বাড়ির মতো।”
মনে হল, বেশ রসিক। এবং আত্মবিশ্বাসী। মোহনবাগানের কাজে দেবেন। |
|
|
|
|
|