ডাক্তার ডেকে রড কেটে উদ্ধার চালককে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সদাইপুর |
তেলের ট্যাঙ্কারের চালকের বাঁ পায়ে ঢুকে রয়েছে কয়েক ফুটের একটা লোহার রড। সামনে পুলিশ ও দমকল। আশপাশের লোকজনেরাও ভিড় করেছেন। কিন্তু সিট থেকে তো তোলাই যাচ্ছে না চালককে। পাছে রড টেনে বের করতে গিয়ে প্রাণ সংশয় হয়ে পড়ে তাঁর!
এই ভাবেই কেটে গেল ঘণ্টা তিনেক। ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছিলেন জিয়ারুল হক। শেষ পর্যন্ত পুলিশ নিয়ে এল চিকিৎসককে। তাঁর উপস্থিতিতে গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে সিট কেটে ওই চালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বীরভূমের সদাইপুর থানা এলাকার মুড়োমাঠের কাছে, রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। |
|
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাক ও ট্যাঙ্কার। -দয়াল সেনগুপ্ত |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দেশলাই বাক্স বোঝাই দশ চাকার একটি ট্রাক সিউড়ির দিকে যাচ্ছিল। মুড়োমাঠের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা ওই তেলের ট্যাঙ্কারের সঙ্গে ট্রাকটির ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ট্রাকচালক আনবুর (২৬)। বাড়ি তামিলনাড়ুর শিবকাশীতে। গুরুতর জখম হয়ে ট্যাঙ্কারের মধ্যে আটকে ছিলেন চালক, দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা জিয়ারুল। তাঁর বাঁ পা একটি রড এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়। ডান পা ও মাথায়ও চোট লাগে।
কিন্তু তিনি জ্ঞান হারাননি। ওই অবস্থাতেই বললেন, “শিলিগুড়ি থেকে বর্ধমান যাচ্ছিলাম।”
সদাইপুর থানার পুলিশ জিয়ারুলকে ট্যাঙ্কার থেকে বার করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। দমকলকর্মীরা এসেও কিছু করতে পারেননি।
ঘণ্টা চারেক পরে সিউড়ি সদর হাসপাতাল থেকে শৈবাল মজুমদার নামে এক চিকিৎসককে নিয়ে আসে পুলিশ। আনা হয় এক ওয়েল্ডারকেও। শৈবালবাবুর তদারকিতে গ্যাস কাটার দিয়ে রড কেটে এবং জিয়ারুল-সহ গোটা সিটটি তুলে ফেলা হয়। সিউড়ি সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে তাঁর পা থেকে রড বার করা হয়। তবে তাঁর বিপদ কাটেনি বলে চিকিৎসকেরা জানান। ট্যাঙ্কারের সহকারী চালক, শিলিগুড়ির বাসিন্দা মানিক সাহাও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ট্রাকচালকের মৃত্যু হলেও তাঁর পাশে বসা খালাসি, বছর পঁয়ত্রিশের তামসি লিঙ্গম অক্ষত রয়েছেন। ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে জানালেন, তাঁরা শিলিগুড়ি যাচ্ছিলেন। |
|