টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জেলার জনজীবন
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। রবিবার সকাল থেকেই জেলার অধিকাংশ জায়গায় কখনও ভারী, কখনও মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা সোমবারও। তবে রবীন্দ্র-স্মরণ উপলক্ষে এ দিন ছুটি ঘোষিত হওয়ায় স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে বৃষ্টির প্রভাব স্পষ্ট না হলেও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বেশিরভাগ বাসিন্দাই বাড়ি থেকে বেরোননি।
ইতিমধ্যে নদী, নালা, কাঁদর, জলাশয় ফুলে ফেঁপে উঠেছে। স্বভাবতই বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হরিপুরের শ্রীকান্ত মণ্ডল, লাঙ্গলহাটার জয়দেব বাগদিরা বলেন, “প্রতি বর্ষায় এমনিতেই কুয়ে নদী এবং লাঙ্গলহাটার বিলের জলে আমাদের গ্রামে বন্যা হয়। এ বারও কয়েক দিন ধরে যে ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে বন্যার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।” এই বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে কৃষি কাজেও। ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া গ্রামের নিতাই কোনাই, নানুরের তাকোড়ার মীর মাখন আলিরা বলেন, “টানা বৃষ্টির জন্য ধান পোঁতার কাজ করা যাচ্ছে না। ধান পোঁতার জন্য যাঁদের ঠিক করা হয়েছিল তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে নয়তো শুধু শুধু টাকা দিতে হচ্ছে।
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলের নীচে ময়ূরাক্ষী নদীর কজওয়ে। সোমবার সাঁইথিয়ায় ছবিটি তুলেছেন অনির্বাণ সেন।
শ্রীনিকেতন আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৩১ মিলিমিটার। সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৮০ মিলিমিটার। ৫ অগস্ট সকাল ৮টা থেকে ৬ অগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৯৮ মিমি।
এই পরিস্থিতিতে মার খাচ্ছে পরিবহণ ব্যবস্থাও। এমনিতে জেলার বহু জায়গায় রাস্তা খারাপ রয়েছে। তার উপরে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। কোথাও কোথাও হাঁটু সমান জল জমে যাচ্ছে। সাঁইথিয়া বাসমালিক কল্যাণ সমিতির সহ-সম্পাদক পতিতপাবন দে বলেন, “বিশেষ প্রয়োজন না হলে এই বৃষ্টিতে মানুষ ঘরছেড়ে বেরোচ্ছেন না। এ জন্য বাসে যাত্রী নেই বললেই চলে। তার উপরে রাস্তাঘাটের অবস্থা তো আছেই। তাই বেশকিছু রুটের বাস একবেলার বেশি চলেনি।” এ দিকে, নদীর জল বৃদ্ধির কারণে সাঁইথিয়া-মল্লারপুর সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। ওই সড়কের ময়ূরেশ্বরের কামড়াঘাটে দ্বারকা নদীর কজওয়ের উপর দিয়ে যান চলাচল করে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুবীর ভট্টাচার্য জানান, ইতিমধ্যে কজওয়ের উপরে হাঁটু সমান জল বইছে। এ ভাবে চলতে থাকলে দু’এক দিনের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। একই ভাবে বোলপুর-সিউড়ি সড়কে বল্লভপুরের কাছে বেইলি সেতুর উপর দিয়ে শাল নদীর জল যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
এ সবেরও পাশাপাশি মার খেয়েছে ব্যবসায়িক লেনদেনও। লোকপাড়া মোড় ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুভাষচন্দ্র ঘোষ এবং নানুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জনার্দন চোধুরী বলেন, “বৃষ্টির জন্য কয়েক দিন ধরে খদ্দের না আসায় ব্যবসায়ীদের কার্যত মাছি তাড়াতে হচ্ছে।” তবে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই। জেলার নদীগুলির জল বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেই বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় তিলপাড়া জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.