জেলাজুড়েই পালিত হল বাইশে শ্রাবণ |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, রবীন্দ্র বিষয়ক আলোচনা, বৃক্ষরোপণ, রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান-সহ একাধিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সোমবার জেলা জুড়ে পালিত হল কবির প্রয়াণ দিবস-বাইশে শ্রাবণ।
এ দিন সকাল থেকেই সিউড়ি, দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট ও বোলপুর-সহ জেলার বিভিন্ন স্কুলে রবীন্দ্র প্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে সিউড়ির রবীন্দ্রভবনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সিউড়ির পুলিশ লাইনেও আয়োজিত হয়েছিল প্রয়াণ দিবস স্মরণে অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার নিশাদ পারভেজ-সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া-সহ বিভিন্ন পুরসভাতেও রবীন্দ্র প্রয়াণ দিবস স্মরণে অনুষ্ঠান হয়েছে। |
|
রক্তকরবী মঞ্চ |
নানুর ব্লক এবং যুব কল্যাণ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে চণ্ডীদাস মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের এনসিসি ক্যাডেটরা রবীন্দ্রনাথের ছবি নিয়ে প্রভাতফেরি করে। ওই স্কুলের হলে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। এলাকার শিল্পীরা মিলিত ভাবে রামপুরহাট স্টেশন চত্বরে সোমবার সকালে বাইশে শ্রাবণ পালন করেন। বিকেলে রামপুরহাট মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে গঠিত একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম উদ্যোগেও একটি অনুষ্ঠান হয়। |
নানুর হাইস্কুল |
উপাসনা গৃহ |
|
অন্য দিকে, বিশ্বভারতীর উদ্যোগে ভোরে বৈতালিক ও সকালে ব্রাক্ষ্ম উপাসনার মধ্যে দিয়ে শান্তিনিকেতনে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। বিকেলে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানে শান্তিনিকেতনের বকুলবীথিতে বকুল চারা রোপণ করেন প্রধান অতিথি রাজ্যের পরিকল্পনা ও উন্নয়নমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। রবীন্দ্রনাথের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানান ওই মন্ত্রী। বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় বিশ্বভারতীর নাম তোলার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে সহযোগিতা চান বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য উদয়নারায়ণ সিংহ। এ দিন শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্যদ ও বোলপুর মহকুমা তথ্য সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহেও একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। |
|
সিউড়ি |
যদিও দিনভর বৃষ্টিতে রীতিমত বিঘ্নিত হয়েছে অনুষ্ঠান। বৃষ্টির জন্য জেলার অধিকাংশ অনুষ্ঠান হয় সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে বা বাতিল করতে হয়েছে। তাতে সমস্যার পড়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক শিল্পী গোষ্ঠী। রামপুরহাটের গান্ধর্বী’র কর্ণধার চৈতি মজুমদারের আক্ষেপ, “আজকের অনুষ্ঠানের জন্য আমি তিনটি অনুষ্ঠান বাতিল করেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির জন্য আসল অনুষ্ঠানেই যোগ দিতে পারলাম না।” তবে বৃষ্টি অনেকক্ষেত্রে স্বস্তি দিয়েছে বিভিন্ন থানার আধিকারিকদের। প্রত্যেকটি থানায় কবির প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠান পালনের নির্দেশে সমস্যায় পড়েছিলেন থানার পুলিশ কর্তারা। কী ভাবে নির্দেশ পালন করা হবে, কবির প্রতিকৃতি জোগাড় হবে কী ভাবেই বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য শিল্পীদের জোগাড় করা হবে এই সব নিয়েই চিন্তিত ছিলেন পুলিশ কর্তারা। এ দিন বৃষ্টিতে অবশ্য অনেক থানাতেই অনুষ্ঠান করা সম্ভব করা হয়নি। তবে বেশিরভাগ থানাতেই অনুষ্ঠানের পরিবর্তে রবীন্দ্র প্রতিকৃতিতে মালা দিয়ে ও রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজিয়ে প্রয়াণ দিবস পালন করা হয়।এ দিন দুবরাজপুর থানায় লাভপুরের বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনীর একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। বৃষ্টির জন্য তা বাতিল হয়। ওই অনুষ্ঠান বুধবার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
|
সোমবার ছবিগুলি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম, সোমনাথ মুস্তাফি, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিশ্বজিৎ রায়চোধুরী। |
|