|
|
|
|
ধর্মঘট আর ছুটির ফাঁদে রাজ্যের ব্যাঙ্ক পরিষেবা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শুক্রবারটা কাবার ধর্মঘটে। শনিবার আধা বেলা। রবিবার তো ছুটিই। সোমবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুদিবস উপলক্ষে রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে। এনআই অ্যাক্টে এই ছুটি ঘোষণা করায় রাজ্যের ব্যাঙ্কগুলিও এর আওতায় পড়বে।
ধর্মঘট আর ছুটির এই যোগসাজশে মাসের প্রথম সপ্তাহেই ব্যাঙ্ক পরিষেবা কার্যত থমকে পড়ল রাজ্যে। শনিবার অল্প কিছু ক্ষণের কাজকর্ম বাদ দিলে টানা সাড়ে তিন দিন আর্থিক লেনদেন বন্ধ থাকছে। যার ফলে গ্রাহকরা চরম হয়রানির মুখে। যার শুরুটা ঘটল শুক্রবার, ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস (ইউএফবিইউ)-এর ডাকা ধর্মঘট দিয়ে। সারা দেশেই ব্যাঙ্কিং পরিষেবা এতে কম বেশি ব্যাহত হয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গেই ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে সব থেকে বেশি। বিদেশি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির কর্মীরা এই ধর্মঘটে সামিল না হলেও ধর্মঘটীরা বাধা দেওয়ার ফলে রাজ্যে ওই সব ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতে কাজ হতে পারেনি। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই এটিএমগুলির সুরক্ষা কর্মীরাও সামিল হয়েছিলেন এ দিনের ধর্মঘটে। |
|
বন্ধ এটিএম। শুক্রবার কলকাতায়। নিজস্ব চিত্র |
এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার রাজ্যের ব্যাঙ্কগুলিতে ভিড় যথেষ্ট বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এই চাপ সামলাতে এটিএমের উপর অনেকটাই নির্ভর করছেন তাঁরা। আশ্বাস দিয়েছেন, অন্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি টাকা রাখা হবে এটিএমগুলিতে। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে অনেকেই জানিয়েছে, শনিবার বেশি সময় ব্যাঙ্ক খোলা রাখার চেষ্টা করবে তারা।
কিন্তু তাতেও সব গ্রাহকের প্রয়োজন যে মিটবে না, তা প্রায় প্রায় নিশ্চিতই। ধর্মঘট আর ছুটির জাঁতাকলে গ্রাহকরা বিশেষ করে সমস্যায় পড়েছেন চেক ক্লিয়ারিং নিয়ে। বৃহস্পতিবার যাঁরা প্রথম অর্ধে চেক জমা দিয়েছেন, তাঁদের চেক শনিবারের মধ্যে ক্লিয়ার হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার যাঁরা দ্বিতীয় অর্ধে চেক জমা দিয়েছেন বা শনিবার দেবেন, তাঁদের চেক ক্যাশ হতে মঙ্গলবার গড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা
হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমান আইন অনুযায়ী ধর্মঘটের ফলে চেক ক্লিয়ারিং হতে দেরি হলে প্রতি দিনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে চেকের অর্থের উপর সুদ গুনতে হবে। তবে ছুটির জন্য ক্লিয়ারিংয়ে দেরি হলে অবশ্য সুদ দিতে হবে না।
পশ্চিমবঙ্গের পর এ দিনের ধর্মঘটের প্রভাব বেশি ছিল কেরল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে। কিছু রাজ্যে আংশিক ভাবে পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। কিন্তু বাকি অধিকাংশ রাজ্যেই ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে ইউএফবিইউ-এর সদস্য ইউনিয়ন এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগরের দাবি, “সারা দেশে প্রায় ১০ লক্ষ ব্যাঙ্ক কর্মী এই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন।”
ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সংস্কার সংক্রান্ত বিলের বিরোধিতা, বাইরের লোক দিয়ে ব্যাঙ্কের কাজ করানোর প্রতিবাদ, শূন্য পদে নিয়োগ ইত্যাদির দাবিতেই এই ধর্মঘট। রাজেনবাবু জানান, আগামী ১০ অগস্ট বেঙ্গালুরুতে ইউএফবিইউ-এর বৈঠক বসছে আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্য। |
|
|
|
|
|