|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
ওরা করুক অনেক জড়ো |
বইপোকা |
মৃত্যুর ষাট বৎসর কাটিয়া গেল, সমগ্র রবীন্দ্রনাথ এখনও প্রকাশিত হইয়া চলিয়াছেন। এখনও শুনা যায় প্রকাশিত হইলেন অপ্রকাশিত রবীন্দ্রনাথ। শুনিলেই মনে পড়িয়া যায় অপ্রকটচন্দ্র ভাস্করের কথা। তাঁহার রচনাবলি এত বিপুল, এত ভূরি পরিমাণ লিখিতেন তিনি যে, তাঁহার জীবনকাল পার হইয়া আরও ছয় দশক পার হইয়া গেল, তাহার সকল প্রকাশিত হইল না। কিন্তু ইহাকে উল্টাইয়া দেখিলে অন্য ব্যাখ্যাও করা যাইতে পারে। তাহা হইল তিনি যখন যাহা লিখিয়াছিলেন সকলই ছাপাইতে হইবে কেন? এ তর্ক তিনি নিজেই তুলিয়াছিলেন, তাঁহার প্রথম রচনাবলি প্রকাশের কালে। তাঁহার বহু বাল্যকীর্তিকে তিনি লুপ্ত করিয়া দিতে চাহিয়াছিলেন। কারণ তাহারা ছিল নিতান্তই হাত-মকশো করিবার লেখা। কিন্তু মুশকিল হইল বাঙালির নাম-প্রীতি। কেহ যদি এক বার নাম করিয়া ফেলেন তবে তাঁহাকে আমৃত্যু লিখিয়া যাইতে হইবে, সে লেখা যত সাধারণই হউক না কেন। আর যদি তিনি বাঁচিয়া না থাকেন তাহা হইলেও গোল চুকিল না, তখন তাঁহার অন্তঃপুর হইতে সকল ঠিকানায় খানাতল্লাশ চলিবে, তাঁহার হিসাবের খাতাটি পর্যন্ত জনসমক্ষে প্রকাশ করা চাই। ঐতিহাসিক বলিবেন, সমগ্রের মধ্যে সমস্তই চাই। বাণিজ্যিক বলিবেন, রবীন্দ্র-নামে যাহাই বাজারে ছাড়া যাউক হু হু করিয়া কাটে। গবেষক বলিবেন, সকলই যদি না পাইলাম তবে গবেষণা হইবে কী করিয়া? কিন্তু যথার্থ সাহিত্যিক কী বলিবেন? সম্ভবত ইহাই যে ‘সঞ্চয়বায়ুগ্রস্ত’রাই সকল কিছু যেনতেনপ্রকারেণ জড়ো করিয়া থাকে, সেই বিস্তর আগাছায় সাহিত্যের প্রকৃত চিরস্মরণীয় রূপটি মাঝে মাঝে আচ্ছন্নও হইয়া যায়। রবীন্দ্রসার্ধশতবর্ষে তর্কটি নূতন করিয়া উত্থাপিত হউক। |
|
|
|
|
|