যান চলাচল ব্যবস্থা আছে। কিন্তু কার্যত তা খাতায়কলমে। নিত্যদিনের যানজট এবং বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা পারাপারের দৃশ্য এখানে হামেশা চোখে পড়ে। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে এমন অব্যবস্থা চললেও হুঁশ নেই প্রশাসনের।
ঘটনাস্থল কলেজ স্ট্রিট মোড়।
কলেজ স্ট্রিট ও মহাত্মা গাঁধী রোডের সংযোগস্থল। এই মোড়ের চার দিকের ফুটপাথের অধিকাংশই দখলে। ফুটপাথের উপর রকমারি ব্যবসার কাজ হয়। অথচ এই মোড়ে দিনভর গাড়ি ও মানুষের চাপ থাকে বেশি। ফলে পথচারীদের অনেক সময়ই বড় রাস্তায় নামতে হয়। তার উপর আছে রাস্তার ধারে পার্কিং। |
রোজকার এই সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কলেজ স্ট্রিট মার্কেট নির্মাণ। ফুটপাথ পর্যন্ত এই নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে। ফলে বাস ধরার জন্য সেখানেও যাত্রীরা দাঁড়াতে পারেন না। উল্টে রাস্তার উপরেই অসংখ্য গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। এ ছাড়া সাইকেল ও ম্যাটাডর ভ্যানের পার্কিংও আছে।
কলেজ স্ট্রিট একমুখী, কিন্তু মহাত্মা গাঁধী রোড উভমুখী। কিন্তু কলেজ স্ট্রিটে দু’দিকেই ট্রাম চলাচল করে। স্থানীয় বাসিন্দা রবিশঙ্কর ঘোষ বলেন, “ট্রাম যখন এই মোড় অতিক্রম করে তখন দুর্বিষহ অবস্থা তৈরি হয়। একই সঙ্গে ট্রামের দু’দিক দিয়ে গাড়িও চলাচল করে। ফলে যানজট চরম আকার নেয়।”
এই রাস্তা দিয়েই রোজ বাড়ি ফেরেন হাতিবাগানের সুব্রত সরকার। তিনি বলেন, “কলেজ স্ট্রিট মোড়ে সিগন্যাল চালু হলে এক দিকে হাতিবাগান, অন্য দিকে হাওড়ামুখী, আবার উল্টো দিকে শিয়ালদহের দিকে গাড়ি যাতায়াত করে। তেমনই, শিয়ালদহের দিক থেকে এই মোড়ে এসে এক দিকে হাতিবাগান, অন্য দিকে সোজা সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ যাওয়া যায়। এই অবস্থায় আবার ট্রাম এলে অবস্থা চরমে ওঠে। রাস্তা পারাপার করতে হিমসিম খেতে হয় পথচারীদের।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৌভিক হাজরার কথায়: “কলেজ স্ট্রিট মোড়ের চার দিকের রাস্তার অনেকটাই চলে যায় পার্কিংয়ের দখলে। ফুটপাথের অনেকটা ব্যবসায়ীদের দখলে। ফলে রাস্তাই সম্বল পথচারীদের। স্কুল-কলেজের সময় দুর্ভোগ চরমে ওঠে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা তো লেগেই আছে।”
অথচ কলকাতার ট্রাফিক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এই মোড়ের চার দিকের রাস্তা স্লো মুভিং করিডর নয়। ফলে সাইকেল কিংবা ম্যাটাডর ভ্যান পার্ক করার কথা নয়। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, কলেজ স্ট্রিট মার্কেট যেখানে তৈরি হচ্ছে সেখানে দিন-রাত ম্যাটাডর ভ্যানের সারি। ম্যাটাডর থেকে রোজ আখ নামানো-ওঠানোর কাজ হয়। |
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল সাফাই) দেবব্রত মজুমদার বলেন, “সমস্যা শুধু কলেজ স্ট্রিট মোড়েই নয়। সারা কলকাতাকে ঘিরেই হকার নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সে পরিকল্পনা কার্যকর হলে পথচারীদের চলাচলের ক্ষেত্রে এই সমস্যা কমবে।” ট্রাফিক পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার বিশাল গর্গ বলেন, “বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই রাস্তায় পার্কিং ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হবে।”
|