সম্পাদকীয় ২...
একতরফা নয়
সমের জঙ্গি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আল্ফার আত্মসমর্পণকারী অংশের সহিত ভারত সরকারের শান্তি-আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হইয়াছে। এই অবস্থায় ঢাকার জেলে বন্দি প্রথম সারির আল্ফা নেতা অনুপ চেটিয়ার প্রত্যর্পণের বিষয়টি গুরুত্ব অর্জন করিয়াছে। চেটিয়া আপসপন্থী, শান্তি-প্রক্রিয়ায় তাঁহার যোগদান প্রক্রিয়াটির গ্রহণযোগ্যতা বাড়াইবে। কিন্তু বাংলাদেশের সহিত ভারতের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রত্যর্পণ চুক্তি নাই। এই অবস্থায় চেটিয়াকে ফেরত দিতে হইলে ঢাকাকে কিছু আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়া যাইতে হইবে। চেটিয়ার বিনিময়ে ভারতীয় জেলে বন্দি কিছু কুখ্যাত বাংলাদেশি দুষ্কৃতীকেও ঢাকা ফেরত চাহিয়াছে। তাহাদের মধ্যে মুজিবর রহমানের দুই ঘাতক এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘হুজি’র দুই সদস্যও রহিয়াছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদম্বরম যখন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে ৬০ জন ফেরারের তালিকা তুলিয়া দেন, তখন ঢাকার তরফেও পাল্টা একটি তালিকা ধরাইয়া দেওয়া হয়। বাংলাদেশ আশা করিতেই পারে যে, শুভেচ্ছার জবাবে ভারতও ইতিবাচক পদক্ষেপ করিবে।
এই দুই প্রতিবেশী ও সংলগ্ন দেশেই পরস্পরের ফেরার দুষ্কৃতী ও জঙ্গিরা আশ্রয় লইয়া থাকে। এক দেশে অপরাধ বা নাশকতা করিয়া অন্য দেশে পলাইয়া আশ্রয় লওয়া সহজও বটে। একদা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তো আল্ফা ও বড়ো জঙ্গিদের ‘স্বাধীনতা-সংগ্রামী’ আখ্যা দিয়া বাংলাদেশে তাহাদের জামাই-আদরে বরণ করার নীতিই অবলম্বন করিয়াছিলেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সম্পর্কে সে কথা বলা যাইবে না। প্রত্যপর্ণ চুক্তি না-থাকা সত্ত্বেও তিনি আল্ফা নেতাদের ভারতের হাতে তুলিয়া দেন। ঢাকার দাবি অতএব ন্যায়সঙ্গত। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বাংলাদেশ সফরে যাইতেছেন। সে দেশের আশা, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নবীন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করিতে আর্থ-সামাজিক সহযোগিতা দিবেন। সংস্কৃতিক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের জন্মের সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপনের মতো আয়োজনেও দুই দেশ সহযোগী হইতে পারে।
তবে বাংলাদেশকে ভারত যতটা সাহায্য করিতে পারে, ততটা কখনওই করে নাই। রাস্তাঘাট নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদি পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে ভারতীয় সাহায্য ঢাকার দরকার। নয়াদিল্লি কিন্তু সে ব্যাপারে উদাসীন। একই ধরনের উদাসীনতার মূল্য মায়ানমারের বেলায় ভারতকে দিতে হইয়াছে, চিন আসিয়া সহযোগিতার হাত প্রসারিত করিয়া সে দেশের তৈলসম্পদের উপর আপন নিয়ন্ত্রণ কায়েম করিয়াছে। বাংলাদেশেও চিনা সহযোগিতা উত্তরোত্তর বর্ধমান। নয়াদিল্লি বিমুখ থাকিলে ক্রমেই পাকিস্তান ও নেপালের পর পূর্ব সীমান্তেও ভারত চিনা ড্রাগনের উষ্ণ নিঃশ্বাসের আঁচ পাইবে। অথচ শুখা মরসুমে বাংলাদেশের জলের সমস্যা মিটাইয়া দিলে, সড়ক নির্মাণে বাংলাদেশকে সাহায্য করিলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সহিত ভারতীয় মূল ভূখণ্ডের সংযোগ আরও নিয়মিত হইবে, ত্রিপুরার প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার পশ্চিমবঙ্গ হইয়া অবশিষ্ট ভারতে লইতে সুবিধা হইবে। এ সব কিছু যদি না-ও হইত, কেবল কূটনীতির স্বার্থে উপমহাদেশে চিনের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলার স্বার্থেই বাংলাদেশের সহিত আরও নিবিড় ও ঘনিষ্ঠ সখ্য গড়িয়া তোলা উচিত। ‘পুবের দিকে তাকাইবার’ নীতি রূপায়ণ করিতে হইলে বাংলাদেশের মধ্য দিয়াই সেই অভিযান শুরু করিতে হইবে।
Previous Item Editorial First Page


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.