|
|
|
|
প্রতারণার অভিযোগে ধৃত দম্পতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চাঁচল |
একটি সংস্থার হয়ে ১০ মাসে দ্বিগুণ করার টোপে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শনিবার রাতে মালদহের চাঁচল থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। প ধৃত প্রধান শিক্ষকের নাম মহম্মদ হোসেন আলি। তাঁর স্ত্রীর নাম লুৎফা খাতুন। আলি খরবা এগ্রিল হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক। স্ত্রী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। এক বিদেশি সংস্থায় লগ্নির নাম করে ওই প্রতারণা হয় বলে অভিযোগ। স্ত্রীর নামে প্রধান শিক্ষক ওই ব্যবসা করতেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সুপার ভুবন মণ্ডল বলেন, “১০ মাসে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার নাম করে প্রধান শিক্ষক কিছু এলাকা থেকে টাকা তোলেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। প্রধান শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৪২০ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রয়োজনে মামলাটিতে সাইবার ক্রাইমের ধারা যুক্ত হবে।” ধৃত শিক্ষকের দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমিও লগ্নি করে প্রতারিত হয়েছি।” ইতিমধ্যেই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন এক আইনজীবী। আদালতে যান ১০ বিনিয়োগকারী। জনস্বার্থে মামলাকারী গোলাম মোস্তাফা কামালের দাবি, “সমস্ত রকম বৈধ অনুমতি নিয়ে ওই সংস্থা ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু মালদহ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার প্রচুর বিনিয়োগকারীর অর্থ ফেরত না-দিয়ে ওই সংস্থা গা ঢাকা দিয়েছে। সিবিআই তদন্ত চেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেছি।” উচ্চ আদালতে ওই মামলার আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন, “ওই সংস্থা দশ মাসে দ্বিগুণ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল। এটা ‘কর্পোরেট ফ্রড’। অথচ অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স ওই সংস্থাকে অনুমোদন দিয়েছে। ফলে তারা দায় এড়াতে পারে না। কোন সংস্থা কী ধরনের ব্যবসা করছে বা করবে তা না জেনেই কেন তাদের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে? আদালতে সেটাই জানিয়ে সিবিআই তদন্ত চেয়েছি।” আদালতে ও বিনিয়োগকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের শেষ দিক থেকে সংস্থাটি মালদহে ব্যবসা শুরু। সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে ৩ হাজার টাকা দিয়ে আইডি নিতে হত বিনিয়োগের জন্য। বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা। বলা হয় মাসে ২১ শতাংশ করে ১০ মাসে দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। বিদেশ থেকে সংস্থাকর্তারা এসে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেন। চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়ায় প্রচুর মানুষ ওই সংস্থায় বিনিয়োগ করেন। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বর মাস থেকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় ওই সংস্থা। সংস্থার কোনও অফিস ছিল না। ব্যবসা চলত অনলাইনে। বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ে তাদের অফিস ছিল। বিভিন্ন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট ছিল। চাঁচলের দুই বিনিয়োগাকারী আসফাক আলম, প্রাণকৃষ্ণ দাস বলেন, “ব্যবসার বৈধ কাগজপত্র দেখে তাদের কথায় বিনিয়োগ করি। টাকা না পেয়ে আদালতে আবেদন করেছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।” বেশ কিছু বিনিয়োগকারী পুলিশকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। দুই বছর আগে শেয়ারে বিনিয়োগের নাম করে চাঁচলের এক ব্যবসায়ী ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে উধাও হয়। |
|
|
|
|
|