লাগাতার বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের সমস্ত নদীতে জল বাড়তে শুরু করায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মালদহে ফুলহারের জল ৪০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ফলে রতুয়া এবং হরিশ্চন্দ্রপুরের ৭টি গ্রামে জল ঢুকেছে। জলবন্দি হয়ে পড়েছেন এলাকার ১৫ হাজার বাসিন্দা। আরও জল বাড়লে নদীতে লাল সঙ্কেত জারি করতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন সেচ কর্তারা। শনিবার সন্ধ্যের পরে দোমহনি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে। ডুয়ার্সের ওদলাবাড়িতে চেল নদীর জল ঢুকে গিয়ে বিপন্ন হয়ে পড়েন এলাকার ক্ষুদিরামপল্লির ১৫টি পরিবার। ডায়না নদীর ভাঙনে জলবন্দি হন আরও ৪০টি পরিবার। কুচি ডায়নার জলের তোড়ে নাগরাকাটার খয়েরকাটা গ্রামের সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রবিবার ডুয়ার্সে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সদস্যরা। জলপাইগুড়ি সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার সুজিত বসু বলেন, “ডুয়ার্সে ব্যাপক আকারে নদী ভাঙনের খবর নেই। বিক্ষিপ্ত ভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেগুলি সবই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।” |
মালদহের সেচ দফতরের নর্থ সেন্ট্রাল সার্কেলের সুপারিন্টেডেন্ট ইঞ্জিনিয়র সন্দীপ দে বলেন, “আপার ক্যাচমেন্টের জল নামতে শুরু করায় ফউলহারের জল বাড়ছে। দফতরের কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে।” এদিন দুপুরে ফুলহারের জল ২৭.২৫ মিটার উচ্চতায় পৌঁছয়। জলপাইগুড়ি সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালবাজার শহর রক্ষাকারী নদী বাঁধ, ময়নাগুড়ির ভোটপট্টি এলাকায় তিস্তা বাঁধ, জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন রঙধামালির মতো যে সব এলাকায় ভাঙন রোধে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রন কমিশন সুত্রে জানা গিয়েছে, অন্তত ত্রিশটি নদী বাঁধে মেরামতির কাজ দ্রুত শুরু না করলে পরের দিকে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। |
আগামী ৫ অগস্ট রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জলপাইগুড়িতে সেচ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকে বেশ কিছু কাজের বরাদ্দ মিলতে পারে বলে কমিশন সুত্রে আশা করা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ ৭টি নদী বাঁধে টেন্ডার করে কাজ করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে শহর রক্ষাকারী নদীবাঁধ, জলঢাকা, রঙধামালির মত জায়গাগুলি রয়েছে।” |