|
|
|
|
মসজিদের ঘোষণা শুনেই ছুটে গেলেন গ্রামবাসীরা |
পীযূষ সাহা ও বিমান হাজরা • কালিয়াচক |
পাঁচটি মসজিদের মাইকেই তখন একই ঘোষণা। বারবার বলা হচ্ছিল, ‘ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। আপনারা এখনই দুর্ঘটনাস্থলে চলে যান। যার পক্ষে যা সাহায্য করা সম্ভব তাই করুন।’ আর কিছুর দরকার হয়নি। ওষুধ, খাবারদাবার এবং কাপড়, হাতের কাছে যা কিছু ছিল তা নিয়েই রেললাইনের দিকে ছুট দেন কালিয়াচকের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, “বন্ধুদের সঙ্গে ক্যারম খেলছিলাম। ঘোষণা শুনে ছুটে গিয়ে দেখি, মারাত্মক অবস্থা।” গুয়াহাটি-বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসের কয়েকজন যাত্রী বেঁকেচুরে যাওয়া কামরায় আটকে গিয়েছিলেন। বেশ কষ্ট করে তাঁদের ধরে ধরে নামান গ্রামের রেসাউল করিম, আতাউল রহমানরাও। হাবিবুর বলেন, “কেটে গেলে কাজে লাগবে বলে কাপড় এনেছিলেন অনেকেই। সেই সঙ্গে ট্রেনের বগি যদি কাটতে হয়, তাই ভেবে অনেকে শাবলও নিয়ে এসেছিলেন।” যাত্রীদের কেউ কেউ নিজেরাই ট্রেন থেকে নেমে যান। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা করেন গ্রামবাসীরা।
বাখরপুরের নজরুল ইসলামের কথায়, “ইঞ্জিনের মাথার উপরে মালদহগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যে বগিটা উঠে গিয়েছিল, তাতে আটকে ছিলেন অনেকেই। তাঁরা সেখান থেকে চিৎকার করছিলেন। আমরা তখন মসজিদ থেকে মই এনে তাঁদের সাবধানে নামিয়ে আনি।” দু’টি ট্রেনের অনেক যাত্রীই আশ্রয় নিতে চলে যান বাখরপুরেই। গ্রামবাসীরা তাঁদের অনেককে কাছেই জাতীয় সড়কের দিকেও নিয়ে যান। সেখান থেকে অনেকে বাস ধরে মালদহের দিকে চলে গিয়েছেন। গুয়াহাটি-বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসের যাত্রী রবি কুমার শিলিগুড়ি থেকে উঠেছিলেন। তিনি বলেন, “আমি দরজার সামনে ছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড একটা শব্দ শুনে ছিটকে পড়ি। আমরা ভেবেছিলাম বোমা পড়েছে। তারপরে গ্রামবাসীরা গিয়ে আমাদের উদ্ধার করেন।” ওই এক্সপ্রেসের যাত্রী সপ্তর্ষি দে’র পায়ে চোট লেগেছে। তিনি বলেন, “অনেক ক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরেও রেল বা প্রশাসনের কাউকে তো দেখলাম না। গ্রামবাসীরাই আমাকে উদ্ধার করেন। গ্রামের একটা ওষুধের দোকানে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসারও ব্যবস্থা করেন ওঁরাই।” যাত্রীদের দাবি, দুর্ঘটনার পরে সরকারি সাহায্য পৌঁছতে কেটেছে অনেকটা সময়ই। |
|
|
|
|
|