|
|
|
|
দলকে ‘সংযত’ হতে ফের নির্দেশ দিলেন মমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দলীয় নেতা থেকে কর্মীসকলকে ‘সংযত’ হয়ে চলার জন্য আবার নির্দেশ দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যে ‘পরিবর্তনে’র পরে শাসক হিসাবে দলের ‘দায়িত্ব ও কর্তব্য’ যে বেড়েছে, তা বোঝাতে রবিবার বিকেলে দক্ষিণ কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাস হলে দক্ষিণবঙ্গের দলীয় জনপ্রতিনিধি ও সমস্ত শাখা সংগঠনের নেতাদের জরুরি বৈঠকে ডেকেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। দলীয় সূত্রের খবর, দলের অভ্যন্তরে নানা উপদলীয় কার্যকলাপ, নিজেদের কমীদের মধ্যে সংঘর্ষ ইতাদি অভিযোগ প্রায় প্রতি দিনই পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী। সেই ব্যাপারে তিনি যে ‘উদ্বিগ্ন’ তা এ দিনের সভায় মমতা জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীকে ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছেন, যে দলীয় নীতি ও শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করবে, তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। দলের এক নেতার কথায়, “দলনেত্রী স্পষ্ট বলেছেন, আগে তিনি দলের কোথায় কী হচ্ছে, তার খবর যা পেতেন, এখন তার চেয়ে আরও বেশি করে পাচ্ছেন। কে কোথায় কী করছে, তা তিনি সব জানেন। নেত্রী বলেছেন, তিনি দলে কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না।” |
|
মহারাষ্ট্র নিবাস হলের বাইরে তৃণমূল নেত্রী। রবিবার। নিজস্ব চিত্র |
বস্তুত, রাজ্যে ‘পরিবর্তনে’র পর মমতা যেমন এক দিকে মানুষকে ‘স্বচ্ছ’ প্রশাসন দিতে চান, তেমনই তাঁর দলের ভাবমূর্তিও ‘উজ্জ্বল’ করতে চান। সেই দিকে লক্ষ রেখেই মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী দলীয় নেতা-কর্মীদের ফের ‘কড়া বার্তা’ দিয়েছেন। তাঁদের তিনি জানিয়েছেন যে, বর্তমানে রাজ্য সরকারকে একটা ‘কঠিন পরিস্থিতি’র মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। সিপিএম নানা ‘ষড়যন্ত্র’ করছে। অতএব, প্রতিটি পদক্ষেপে দলের সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীদের ‘সতর্ক’ থাকতে হবে। অবশ্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তাঁর যে বিতর্ক চলছে, তা নিয়ে এ দিনের বৈঠকে মমতা একটি শব্দও ব্যয় করেননি বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্যাম্পাস-হিংসার ঘটনা নিয়েও তৃণমূল নেত্রী বেশ উদ্বিগ্ন। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে দলের ছাত্র সংগঠনের ভূমিকায় তিনি যে সন্তুষ্ট নন, তা জানিয়ে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদে এ দিন মমতা রদবদল করেছেন। কংগ্রেস থেকে সদ্য আসা সৌরভ চক্রবর্তীকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব থেকে নেত্রী সরিয়ে দিয়েছেন। দলের ছাত্র সংগঠনের দায়িত্ব তিনি আবার বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ও শঙ্কুদেব পণ্ডার হাতেই তুলে দিয়েছেন। বৈশ্বানর সংগঠনের উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি ও শঙ্কু কার্যনির্বাহী সভাপতি। সৌরভকে রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি করেছেন মমতা।”
সংগঠন চালানোর দায়িত্ব পাওয়ার পরেই শঙ্কুদেব জানিয়েছেন, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে আজ, সোমবার যে ‘কালা দিবস’ পালনের ডাক দেওয়া হয়েছিল তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ছাত্রছাত্রীদের কাছে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। ২২ শ্রাবণের প্রস্তাবিত মিছিল থেকে শুরু করে ২৮ অগস্ট দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচি কেমন ভাবে পালিত হবে, তা নিয়ে এ দিনের সভায় মমতা বিস্তারিত আলোচনা করেন। সভায় মমতা জানিয়েছেন, ২২ শ্রাবণ হরিশ মুখার্জি রোড থেকে যে মিছিল হবে, তার নেতৃত্বে তিনি নিজেই থাকবেন। জোড়াসাঁকো থেকে মিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হবে ময়দানে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে। সেই সভার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বৈশ্বানর, শঙ্কুদেবদের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। |
|
|
|
|
|