|
|
|
|
খড়্গপুর থানায় আজ থেকে ‘সেবোত্তম’ |
পরিকাঠামোই নেই, প্রকল্প রূপায়ণ নিয়ে প্রশ্ন পুলিশে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়গপুর |
চালু হচ্ছে বটে, তবে পরিকাঠামোর অভাবেই ‘সেবোত্তম’ প্রকল্প ব্যর্থ হতে পারে বলে আশঙ্কা পুলিশেরই একাংশে!
কেন্দ্রের নির্দেশে রাজ্যের ছ’টি থানায় আজ, সোমবার থেকে চালু হচ্ছে ‘সেবা প্রকল্প’। এর মধ্যে রয়েছে খড়গপুরও। সাধারণ মানুষ যাতে দ্রুত পুলিশি সহায়তা পেতে পারেন, সে জন্যই এই উদ্যোগ। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ রাজ্যে নতুন নয়। খবর পেয়েও ঘটনাস্থলে যেতে দেরি করা, থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, বা অভিযোগ জানাতে না পারা এমন নানা ঘটনা ঘটেছে বারবার। এ সবে দাঁড়ি টানতেই ‘সেবা প্রকল্প’। এতে বলা হয়েছে, খবর পাওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে পুলিশকে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে হবে। এফআইআরের কপি দিতে হবে ১০ মিনিটের মধ্যে। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকলে এই পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছে পুলিশেরই একাংশ। তাদের বক্তব্য, অধিকাংশ থানায় পুলিশকর্মী কম। পর্যাপ্ত গাড়িও নেই। ফলে খবর পেয়েও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনো সম্ভব নয়। সমস্যার কথা মেনে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি বলেন, “খড়গপুরে প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা দেখা দেয়, কী ভাবেই বা সেই সব কাটিয়ে ওঠা যায়, তা পর্যালোচনা করার সুযোগ রয়েছে। এক মাস পরে ফের বৈঠক হবে। এ ক্ষেত্রে পরিকাঠামো বাড়ানোরও প্রস্তাব রয়েছে।” |
|
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
রেলশহর খড়গপুরে প্রায় চার লক্ষ মানুষের বাস। ছোটখাট গোলমাল লেগেই রয়েছে। কিন্তু সে সব সামলামোর উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই থানাগুলিতে। খড়গপুর টাউন থানা এলাকায় ৪টি ফাঁড়ি রয়েছে হিজলি, খরিদা, নিমপুরা ও কৌশল্যা। সব মিলিয়ে এখানে কনস্টেবল থাকার কথা ১৪৬। রয়েছে ৮৪। এসআই, এএসআই’ও সংখ্যায় কম। স্বভাবতই কাজ সামলাতে হিমসিম খেতে হয়। খড়গপুর টাউন থানায় ৫ জন এসআই রয়েছেন। এরমধ্যে মাত্র ১ জন মহিলা। এএসআই ৮ জন। কনস্টেবল ১৮ জন। এর মধ্যে ৩ জন মহিলা। গাড়ি রয়েছে মাত্র ৩টি। এর মধ্যে একটি আইসি’র। ফলে কোনও খবর এলে মোবাইল ভ্যানে পৌঁছনো ছাড়া গতি থাকে না। অধিকাংশ সময় মোবাইল ভ্যানই ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত জুন মাসে রেলশহরে বড়সড় অপরাধ হয়েছে ৩২টি। সাধারণ অপরাধ ১০৯টি। গ্রেফতার হয়েছে ২২৪ জন। পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, থানার উপর ‘চাপ’ রয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামো দুর্বল। খড়গপুর টাউন থানার এক অফিসার বলেন, “পর্যাপ্ত পরিকাঠামো থাকলে সময়ে কাজ করা যায়। পুলিশকর্মী কম থাকায় এমনিতেই সমস্যা হয়। তার উপর গাড়ি নেই। দু’টো গাড়িতে কি এত বড় শহরে সর্বত্র সমান নজরদারি রাখা সম্ভব? সেবা প্রকল্প চালু হচ্ছে ঠিকই, তবে সকলের সহযোগিতা চাই।”
পুলিশ সূত্রে খবর, কাজ প্রতি এই প্রকল্পে যে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, এ বার থেকে এফআইআর নিতে হবে ৪৫ মিনিটে, এফআইআরের কপি দিতে হবে ১০ মিনিটে, সাধারণ অপরাধের তদন্ত শেষ করতে হবে ১৫ দিনে, গুরুত্বপূর্ণ অপরাধের ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৬০ দিন। তবে এর জন্য আগে চাই পরিকাঠামো। জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “পরিকাঠামোগত উন্নতি হলে মানুষও সময়ে পরিষেবা পাবেন। পরে জেলার অন্য থানাতেও সেবা প্রকল্প চালু হতে পারে।”
|
|
|
|
|
|