|
|
|
|
ত্রিপুরায় বড় হামলার ছক কষছে জঙ্গিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
শুধু আলফা নয়, ত্রিপুরী জঙ্গিরাও যে মায়ানমারে ঘাঁটি গেড়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে নাশকতার ছক কষছে, তার প্রমাণ পেল পুলিশ। এনএলএফটি-র বিশ্বমোহন গোষ্ঠীর প্রথম সারির নেতা উৎপল দেববর্মা কিছু দিন আগে মিজোরাম-ত্রিপুরা সীমানা ঘেঁষা এলাকা কাঞ্চনপুরে অসম রাইফেলসের হাতে ধরা পড়ে। তাকে জেরা করে উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের সম্পর্কে বহু তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। আগরতলা ও কাঞ্চনপুরে দু’ সপ্তাহ ধরে এই জঙ্গিকে দফায় দফায় জেরা করেছে এসআইবি, সিআইডি, বিএসএফ, রাজ্য পুলিশের এসবি, টিএসআর, অসম রাইফেলস এবং কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনী।
জেরায় উৎপল কবুল করেছে, বাংলাদেশে এনএলএফটি-র প্রশিক্ষণ শিবিরের সংখ্যা কমে এসেছে। বেশির ভাগ জঙ্গি ঘাঁটিই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মায়ানমারের গভীর অরণ্যে। এটিটিএফ জঙ্গি সংগঠনের অধিকাংশ সদস্যই এনএলএফটি-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আধুনিক ইনসাস রাইফেল, এ কে ৪৭, এ কে ৫৬ ছাড়াও প্রয়োজনে তারা আরডিএক্স ব্যবহার করে। মায়ানমার থেকে দুর্গম এলাকা পেরিয়ে এনএলএফটি জঙ্গিরা ত্রিপুরায় ঢোকার পরিকল্পনা করছে। আগামী দিনে ত্রিপুরায় বড়সড় হামলার ছক কষছে তারা। আক্রমণের লক্ষ্য হবে শপিং মল, নিরাপত্তা বাহিনির বিভিন্ন দফতর, রেল স্টেশন-সহ নানা জনবহুল এলাকা। এ ছাড়া বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতারাও তাদের আক্রমণের নিশানা হতে পারেন।
উৎপলের বাড়ি খোয়াই অঞ্চলে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ শেষ করে এনএলএফটিতে যোগ দেয় সে। পরে বাংলাদেশে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে অস্ত্রশিক্ষা নিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্র্বাঞ্চলের অধিকাংশ জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তোলে। এনএসসিএন (খাপালাং গোষ্ঠী), টিএনভি, কেআইপিকে, বড়ো জঙ্গি সংগঠন, আলফা-সহ মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, অসম, ও অরুণাচলপ্রদেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ‘নেটওয়ার্কিং’-এর কথাও সে জানায়। ২০০৫ সালের এনএলএফটি-র ‘আরবান মিলিশিয়া’ গোষ্ঠী উৎপলের নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে।
এসপি (সিআইডি) সৌমিত্র ধর জানান, জঙ্গি ‘কর’ আদায়, নতুন সদস্য সংগ্রহ ছাড়াও এনএলএফটি-র বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজেই বেশি ব্যস্ত থাকত উৎপল। মূলত সে একজন দক্ষ সংগঠক। পুরনো একটি মামলায় রাজ্য সিআইডি তাকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। পুলিশ জানায়, এনএলএফটি-র তিতাস সহ আরও চার-পাঁচ জন বড় মাপের নেতা এখনও অধরা। মায়ানমার ও বাংলাদেশেই তারা লুকিয়ে রয়েছে। |
|
|
|
|
|