|
|
|
|
সেতু গড়া হয়নি সিঙ্গারন নদীতে |
পারাপারে ভরসা রেললাইন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • অন্ডাল |
দুর্ঘটনা ঘটেছে বারবার। রেললাইন ধরে পারাপার করার সময়ে প্রাণও গিয়েছে বেশ কয়েক জনের। তবু নির্মাণ হয়নি রাস্তা বা সেতু। রেললাইনের দু’পাশেও পথচারীদের যাওয়ার জন্য কোনও পথ নেই। ট্রেন এসে গেলে পাশে সরে দাঁড়ানোর জন্য কোনও জায়গাও নেই সিঙ্গারন নদীর উপরের রেলব্রিজে। ফলে, অন্ডালের ১২ ও ১৩ নম্বর রেল কলোনি ও ডাঙাল সংলগ্ন এলাকা, নর্থ বাজারের একাংশের বাসিন্দারা বন্ধই করে দিয়েছেন নদী পার হয়ে শ্মশানে যাওয়া।
১৯৯৫ সালের ৭ মার্চ ঘটনা। রাত ১১টা নাগাদ এক বধূর মৃতদেহ নিয়ে শ্মশানে যাচ্ছিলেন কয়েক জন বাসিন্দা। নদী পার হতে রেললাইন ধরে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। হঠাৎ উল্টো দিক থেকে একটি ট্রেন এসে পড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন শবযাত্রীরা। ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় সাত জনের। লাইন থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বাঁচেন এক জন। এই ঘটনার পর থেকেই ওই শ্মশানে যাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন নদীর এ পারের বাসিন্দারা।
সেই রাতে লাইন থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন রামবীর রাম। তার পর থেকেই অসুস্থ তিনি। তিনি জানান, রেল লাইনে না উঠে ও পারে যাওয়া যায় না। তাঁর ক্ষোভ, “রেল কর্তৃপক্ষ এই অংশে লাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে চলা বা দাঁড়ানোর জন্য কোনও রেলিং তৈরি করেনি। প্রশাসনের তরফেও লাইনের পাশে কোনও রাস্তা গড়া হয়নি। বাধ্য হয়েই এ পারের বাসিন্দারা শতাব্দী প্রাচীন শ্মশানে যাওয়া বন্ধ করেছেন।” এলাকার বাসিন্দা গাবলু প্রসাদ জানান, শবদাহ করতে তাঁদের এখন যেতে হয় তিন কিলোমিটার দূরে দামোদরের পাড়ে অথবা দেড় কিলোমিটার দূরে যোগীডাঙায়।
নদীর এ পাশের পাড়ে শবদাহ করা শুরু করেছিলেন আশপাশের বাসিন্দারা। কিন্তু ওই এলাকার দু’পাড় ছট পুজোর ঘাট হিসেবে ব্যবহার করেন ভক্তেরা। তাঁরা সেখানে শবদাহ করা নিয়ে আপত্তি জানানোয় এলাকাবাসীকে যেতে হচ্ছে দামোদর। তাঁদের অভিযোগ, বহু বার প্রাচীন শ্মশানে যাওয়ার রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলেও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সংশ্লিষ্ট কোনও কর্তৃপক্ষই প্রতিকারের কোনও ব্যবস্থা করেননি।
তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্র দাবি করেন, ২০০৯ সালের ২৭ মে ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ৪২ জন মজুরকে রাস্তা নির্মাণের কাজে লাগানো হয়েছিল। ৫ দিন তাঁরা মাটি কাটার কাজও করেন। ‘মাস্টার রোল’ জমা দিয়েও মজুরদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকার কারণ দেখিয়ে এক টাকাও দেননি সিপিএম পরিচালিত মদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানিয়েও কোনও প্রতিকার হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর।
মদনপুর পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান সন্তোষ চৌধুরী বলেন, “আমি সেই সময়ে দায়িত্বে ছিলাম না। তবে যত দূর জানি, জব কার্ড না তৈরি করিয়েই কিছু লোককে দিয়ে কাজ করানো হয়েছিল। তাই টাকা দেওয়া হয়নি।” ওই জায়গায় রাস্তা তৈরির ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে জানান অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। |
|
|
|
|
|