ধৃতদের জামিন না-মঞ্জুর দুর্গাপুরে
তল্লাশির নামে জিনিসপত্র তছনছে অভিযুক্ত পুলিশ
পুলিশকর্মীদের মারধর ও জিপ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িতদের তল্লাশিতে গিয়ে বাড়ির জিনিসপত্র তছনছের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। দুর্গাপুরের লেবারহাট এলাকায় গিয়ে পুলিশ আসবাব, বাসনপত্র তছনছ করেছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। পুলিশ অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ দিকে, ঘটনায় ধৃত ২১ জনকে রবিবার আদালতে তোলা হলে তাদের জামিন না-মঞ্জুর জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
তল্লাশির পরে এখনও আতঙ্কে পুতুল সাউ।
শনিবার রাত ১০টা নাগাদ দুর্গাপুর স্টেশন রাডে এসবিএসটিসি গ্যারাজের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে কয়েকটি লরির দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পরে রোজ ওই লরিগুলি ওখানে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে রাস্তায় যানজট ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা লেগেই থাকে। ওই সব লরির আড়ালে নেশার আড্ডাও বসে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এ দিন এলাকায় পুলিশের গাড়ি আসতে দেখে কয়েক জন লরিগুলি সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেন। চার কনস্টেবলকে নিয়ে এক এএসআই তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে কয়েক জন এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মারধর করা হয় পাঁচ পুলিশকর্মীকেই। এই সময়ে পুলিশের জিপটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় দশ জনকে। পরে রাতভর তল্লাশি করে গ্রেফতার হয় আরও ১১ জন।
এ দিকে, অভিযুক্তদের খোঁজে বাড়ি বাড়ি তল্লাশির সময়ে ঘরের আসবাব, বাসনপত্র তছনছ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ দিন সকালে গিয়ে দেখা যায় এলাকা সুনসান। গলি থেকে উঁকি মারছে কচিকাঁচার দল। এলাকা পুরুষশূন্য। ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জয় সাউয়ের স্ত্রী পুতুল সাউ দু’মাসের যমজ বাচ্চা কোলে নিয়ে কান্নাকাটি করছেন। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ ঘরের ভিতরে ঢুকে খাবার উল্টে দেয়। এমনকী বাচ্চাদের নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। আর এক বাসিন্দা শাহাজিনা বিবি বলেন, “চালের টালি ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। আমার বোনের ছেলে বিহার থেকে এসেছিল। তাকেও ধরে নিয়ে গিয়েছে।”
শনিবার রাতে পোড়ানো হয়েছিল পুলিশের এই জিপটিই।
পুলিশ অবশ্য তল্লাশির নামে বাড়ি-ঘর তছনছ করার অভিযোগ মানতে চায়নি। কোকওভেন থানার ওসি অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পাঁচ পুলিশ কর্মীকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। জিপ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার পরেও পুলিশ যথেষ্ট সংযমের সঙ্গেই কাজ করেছে।” তাঁর দাবি, অভিযুক্তেরা ঘরের দরজা বন্ধ করে লুকিয়ে ছিল। তাদের জোর করে বের করে আনতে গিয়ে ধস্তাধস্তির সময়ে কিছু জিনিসপত্র পড়ে গিয়ে থাকতে পারে। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “এখনও কয়েক জন অধরা। তাদের খোঁজ চলছে।”
এই ঘটনায় ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন অসীম দাস নামে এক ডিওয়াইএফ নেতাও। ঘটনার সময়ে পুলিশের ১০০ ডায়ালের গাড়িতে সিপিএমের পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সিপিএম অবশ্য ঘটনার সঙ্গে তাদের যুক্ত থাকার কথা মানতে চায়নি। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “এই ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নয়। দলীয় পতাকা কী করে ওখানে গেল তা বলতে পারব না। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।” তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজনৈতিক রং না দেখে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক পুলিশ।”

-নিজস্ব চিত্র।
Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.