ফুলহারের জলস্তর বাড়তে থাকায় হলুদ সংকেত জারি রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১০ সেন্টামিটার জল বাড়ায় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের রতুয়ার অসংরক্ষিত এলাকার বাসিন্দারা জলবন্দি। সঙ্গে চলছে ব্যাপক ভাঙনও। সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরের মিহাহাটে। সেখানে নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে বাঁধ থেকে মাত্র ৪০ ফুট দূরে। সেচ দফতর জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করলেও জলস্তর এবং টানা বৃষ্টিতে ভাঙন রোজের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আবার যেখানে ভাঙন রোধের কাজ চলছে তাও জলমগ্ন হয়ে পড়ায় সমস্যায় সেচ দফতরের কর্তারা। বাঁধ ভাঙলে সংরক্ষিত বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা বাসিন্দাদের রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছে। মিহাহাটে ভাঙনের রোধের কাজে ঢিলেমির পাশাপাশি দুর্গতদের হাতে ত্রাণ না পৌঁছনোর অভিযোগ উঠেছে। সেচ দফতরের নর্থ সেন্ট্রাল সার্কেলের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপ দে বলেন, “ফুলহারের জল বাড়লেও এদিন তা স্থিতিশীল রয়েছে। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। বৃষ্টি চলায় মিহাহাটে ভাঙন রোধের কাজের সমস্যা হচ্ছে।” শুক্রবার ফুলহার ২৭.১৯ মিটার উচ্চতা দিয়ে বইছে। নদীর জল গত তিনদিন ধরে হরিশ্চন্দ্রপুরের উত্তর এবং দক্ষিণ ভাকুরিয়া, কাওয়াঢোল, মীরপাড়া, রশিদপুর, দিয়ারা-সহ রতুয়ার টিকলিচরের বাসিন্দারা জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। এদিন ঘরের ভিতরেও জল ঢোকা শুরু করেছে। |
হরিশ্চপুরের ভাকুরিয়া এলাকাকে ‘দুধভান্ডার’ বলা হয়। বাসিন্দাদের প্রধান জীবিকা গো-পালন। এলাকার পথঘাট, ঘাট, মাঠ সমস্ত প্লাবিত হওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। কয়েকদিনে এলাকার প্রায় ২০০ বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। বহু এলাকায় জলের তলায় রয়েছে ফসল। এই এলাকায় বন্যা বা ভাঙন নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু তনদিন ধরে জলবন্দি হয়ে থাকার পরেও ত্রাণ না মেলায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সুধীর যাদব বলেন, “বাসিন্দারা জলবন্দি। বহু বাড়িতেও জল ঢুকেছে। এলাকার ১০ হাজার বেশি গবাদি পশু ধুঁকছে। তার পরেও প্রশাসনের হুঁশ নেই। মানুষ এবং গবাদি পশু, সবার খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।” হরিশ্চন্দ্রপুর ২ বিডিও রিতম ঝাঁ বলেন, “পঞ্চায়েতে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। ঘাটতি হলে তা জানাতে বলা হয়েছে। গবাদি পশুর খাবার প্রাণী সম্পদ দফতরের দেওয়ার কথা।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তরুণ সিংহ রায় বলেন, “দুর্গতেরা যাতে ত্রাণ পায়, তা দেখতে বলা হয়েছে।” |