|
|
|
|
|
এঁদের দশটা পাঁচটা বাজে অন্য ভাবে |
চাকরির বাজারে কোন মোয়া বিকোচ্ছে, আমাদের সব জানা। তাই? দেখুন তো, এই প্রফেশনগুলোর কথা শুনেছেন কি না? |
|
পেট ফুড টেস্টার |
আপনার পোষা বেড়াল বা কুকুর আপনার প্রাণের বেশ কাছের, তাই তো? তাদের দিয়েছেন একটা নাদুসনুদুস নাম, খেয়াল রাখেন সে কোথায় কখন কী করছে, ঘড়ি দেখে তার বরাদ্দ থালায় খাবারও পরিবেশন করা হয়, কিন্তু সে খাবার খেয়ে যদি তার পেটের অসুখ হয়? ওদেরও কি একটু মুখরোচক খেতে ইচ্ছে করে না? এক জন পেট ফুড টেস্টার এমন সব বিপদের মেঘ মুহূর্তেই সাফ করে দেবে। তার কাজ হল পোষ্যদের খাবার চেখে দেখা। কোনটা ভাল, কোনটা যথেষ্ট বিস্বাদ, কোনটা পেটের পক্ষে মারাত্মক নয়, এ সবই এক জন টেস্টার বলে দেবে। আর সেই অনুযায়ী নতুন নতুন ফ্লেভার তৈরি হয় পোষ্যদের জন্যে। সেখান থেকেই জানা গেল, কুকুরদের অত বাছবিচার নেই, যা দেবেন খেয়ে নেবে আর বেড়াল’রা সব কিছুই গন্ধ দিয়ে বিচার করে। গন্ধ না-পসন্দ হলে মুখেই তুলবে না।
|
হ্যান্ড মডেল |
এখন তো মডেল হওয়ার বেশ হিড়িক পড়েছে চারিপাশে। আপনিও হতে পারেন নামকরা মডেল, কিন্তু প্রবলেম হল কেউ আপনাকে চিনবে না, কী ভাবে? আগে বলুন তো আপনার হাত কতটা পরিষ্কার? বেশ লম্বা লম্বা আঙুল কি? আর সুন্দর নখ আছে কি? তা হলে অনেক বিজ্ঞাপন সংস্থা আপনাকে তুলে নিয়ে যাবে সেই সব বিজ্ঞাপনের জন্যে, যেখানে ক্লোজ শটে কোনও সামগ্রী’র উপর ফোকাস করা হচ্ছে, আর সেটি ধরা আপনার হাতেই। হয়তো সস-এ ডোবাচ্ছেন ফিশ ফ্রাই বা শানদার একটি কলম তুলে খসখস করে লিখে ফেললেন কাগজে। এঁদেরই বলা হয় হ্যান্ড মডেল। মুখ দেখা যায় না এঁদের, শুধুই হাত, কিন্তু সেই হাতের কি খেল, না?
|
বিবলিয়োথেরাপিস্ট |
জীবন যখন এত হুহু করে এগোত না, তখন তাকিয়ায় ঠেস দিয়ে দু’একটা বই পড়ার অবকাশ ছিল। এখন তো সব কিছুই এমন স্পিডে যাচ্ছে, যে আমরা খেই হারিয়ে ফেলছি। সার্ভে অনুযায়ী প্রতি ৩০ সেকেন্ডে নাকি একটা নতুন বই প্রকাশিত হচ্ছে। এই বই-মেলায় আমি বুঝব কী করে, কোনটা পড়ব আর কোনটা পরে? বিবলিয়োথেরাপিস্ট-এর এন্ট্রি এখানেই। সে আপনার মন বুঝে, পরীক্ষা করে আপনাকে ধরিয়ে দেবে ঠিক যে বইটা আপনার সেই মুহূর্তে পড়া উচিত। এই বই পড়া কিন্তু সময় কাটানোর জন্যে নয়, খেয়াল করবেন, এটি চিকিৎসার এক ধরন। সে বই পড়েই হয়তো আপনি ফিরে পেলেন হারানো আনন্দ, কেটে গেল ডিপ্রেশন! |
ওডর টেস্টার |
সারা দিন ধরে অন্যের বগল আর ঘেমো গা শুঁকেও যে পয়সা করা যায়, কে জানত? বৈশাখ মাসের কলকাতার মিনি-তে যাঁরাই উঠেছেন, তাঁদের বাধ্যতামূলক ভাবে অন্যের ঘামের সঙ্গে সখ্য পাতাতে হয়েছে, কিন্তু আপনি ‘ওডর টেস্টার’ হলে এই কাজটাই করবেন আর মাস শেষে মাইনেও পাবেন। প্রথমেই বেশ কিছু ঘেমো গায়ে নানা রকমের ডিওডরেন্ট মাখিয়ে দেওয়া হয়, তার পর ওডর টেস্টার’রা বগল শুঁকে বোঝার চেষ্টা করেন কোন ডিওডরেন্ট কেমন কাজ করছে। এই ঘাম বনাম ডিওডরেন্টের যুদ্ধে যদি ডিওডরেন্ট জেতে, তবেই সেটি বাজারে নামার পারমিশন পায়। আর সে ফল প্রকাশ করেন ওডর টেস্টার’রা। একেই বোধ হয় বলে, নাক উঁচু করে বাঁচা। |
প্রফেশনাল স্লিপার |
মানে এমন এক জন ভাগ্যবান/বতী যে ঘুমোনোর জন্যে টাকা পায়। হ্যাঁ ঠিক তাই, অবিশ্বাসের কোনও স্পেসই নেই। পৃথিবীর নানা প্রান্তে এখন স্লিপ ডিসর্ডার নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা হচ্ছে। ঘুমের মধ্যে আমরা কী ভাবি, কেনই বা ভাবি, হঠাৎ ভয় পেয়ে ঘুম ভেঙে যাওয়া বা ঘুম সংক্রান্ত যে কোনও অসুবিধে নিয়েই চিকিৎসক’রা গবেষণা চালাচ্ছেন। কিন্তু সামনে যদি কেউ ভোঁসভোসিয়ে না ঘুমোয়, তা হলে ঘুম-কালীন মস্তিষ্ক কেমন রিঅ্যাক্ট করছে, বোঝা যাবে কী করে? তাই দরকার এমন কিছু মানুষ যাঁরা পাট পাট করে চুল আঁচড়ে কাজে বেরোবেন আর গিয়েই বিছানায় ধপাস...
|
ফার্নিচার টেস্টার |
আপনি যে সোফা বা লেদার কাউচ-এ বসে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটান, সেটা কত আরামদায়ক বা কষ্টকর, আপনি নিজে বোঝার আগেই অন্য কেউ বলে দিতে পারে। কী ভাবে? ভয় নেই, আপনি বাড়ি না থাকা অবস্থায় কেউ ঢুকে আপনার চেয়ারে বসে যায়নি। এঁরা হলেন ফার্নিচার টেস্টার। আপনি ভবিষ্যতে যে আসবাবপত্র কিনবেন, সেগুলোর ডিজাইন, ভার সহ্য করার ক্ষমতা আরও বাকি কিছু পরীক্ষা করাই এঁদের কাজ। দুম করে দেখে মনে হতে পারে, কী সহজ কাজ, শুধুই চেয়ারে বসে থাকতে হবে, কিন্তু এক বার ভাবুন তো, সারা দিন পর পর খান ৪০০ চেয়ারে বসে বসে দেখতে হবে, কোনটা সবচেয়ে আরামদায়ক। মাইনে এঁরা ভালওই পান, সঙ্গে বোনাস গা-হাত-কোমরে ব্যথা। |
তথ্য সংকলন: অনির্বাণ ভট্টাচার্য |
|
|
|
|
|