|
|
|
|
 |
টুলটুলে মুখ, ঢলঢলে রূপ: এ মেকআপই তো সেরা
টিনএজ মানেই সাজ সাজ রব, লিপস্টিক লাগানোর ঢালাও লাইসেন্স। কিন্তু ভুল কাজল
যদি নজর না কাড়ে? সবটাই বৃথা। টিনএজ সাজের সিক্রেট টিপস দিচ্ছেন অনিরুদ্ধ চাকলাদার |
 |
|
আমাদের মেক-আপ ক্লাসে আমরা সবসময় মেয়ে, মহিলাদের সাজগোজ, তাঁদের পার্টি মেক-আপ, বিয়ে বাড়ির জন্য মেক-আপ এবং বিয়ের কনের মেক-আপ সম্বন্ধে বহু আলোচনা করেছি। আমাদের এই আলোচনায় কিছুটা পক্ষপাতিত্ব হয়েছে কারণ টিনএজারদেরকে আমরা একদম বাদ দিয়েছি। আমরা ভুলেই গিয়েছি যে এই বয়সের মেয়েরা যখনই ফাঁক পায় তখনই ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে মায়ের’ই সাজগোজের জিনিস নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে যায়, কখনও মায়ের শাড়ি পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঝি’কে নির্দেশ দেয়, কখনও বা স্কুলের রাগী টিচারের মতো উঁচুতে খোঁপা বেঁধে ছাত্রীদের বকাবকি করে, আবার কখনও সদ্যবিবাহিত মামাতো দিদির মতো শাড়ি পরে মাথায় ঘোমটা তুলে লজ্বায় লাল হয়ে যায়।
এই আলোচনায় আমাদের মাষ্টারমশাই অনিরুদ্ধ চাকলাদার শুধুমাত্র টিনস’দের সাজগোজ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মনোবিদ ডঃ রিমা মুখোপাধ্যায়ের মতে বয়ঃসন্ধিক্ষণ থেকে মেয়েদের সাজগোজের প্রতি একটা আকর্ষণ জন্মায়। এই সময় থেকে বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক যে পরিবর্তন আসে সে’টি এক জন টিনএজার মেয়ের ক্ষেত্রে একটি বিরাট বিপ্লব বলা যায়। সে ওই বয়স থেকে সমাজে নিজের একটি অস্ত্বিত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে চায় অর্থাৎ সে’ও এক জন ব্যক্তি। তার মতামতের একটি দাম আছে এই ধরনের একটি মনোভাব তৈরি হয় এবং আচরণের মধ্যেও একটি পরিবর্তন আসে, আয়নার সামনে অনেক ক্ষণ সময় কাটানোর একটি প্রবণতা জাগে, তাদের এই আচরণ এবং সাজের প্রবল ইচ্ছাকে প্রচন্ড বকুনি দিয়ে বন্ধ করার চেষ্টাটি খুব ক্ষতিকর, এ ক্ষেত্রে তাকে বুঝিয়ে সাজগোজের ইচ্ছাটিকে ঠিক পথে চালনা করা বুদ্ধিমানের কাজ। তবে রিয়েলিটি শো’এ ছোটরা বড়দের অনুকরণে যে ধরনের সাজগোজ করে তা একেবারেই ঠিক নয়, কিন্তু তারা এই বয়সে যে হেতু খুব বাহবা কুড়োচ্ছে সেই কারণে তাদের মনে হয় এই ছবিটি সমাজে খুবই গ্রহণযোগ্য তা কিন্তু নয়।
খুব ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন তারকা, কাকিমা, পিসি’দের দেখে খুব মেক-আপ করার ইচ্ছে হয়। এ বার যখন সময় আসে তখন অজ্ঞতার জন্য প্রচুর উল্টোপাল্টা মেক-আপ, গাঢ় মেক-আপ ছোট মেয়েরা করে নেয় যা খুবই দৃষ্টিকটু লাগে। এই প্রবন্ধটি শেখাবে কী কী করতে হয় এবং কোনগুলি খারাপ লাগে (ছোট মেয়েদের)। সুতরাং এটিকে তোমরা একটি গাইড লাইন হিসেবে ব্যবহার করতে পার।
• এই বয়সে ত্বক খুব নরম এবং স্পর্শকাতর হয় এবং তার নিজস্ব একটি উজ্জ্বলতা থাকে। সুতরাং কিছু ব্যবহারের আগে শুধুমাত্র ময়েশ্চেরাইজার লাগানো সবথেকে ভাল।
• বেস হিসেবে খুব হালকা ফাউন্ডেশন অথবা সুফ্লে ব্যবহার করতে পার, সম্ভব না হলে জলীয় ধরনের ফাউন্ডেশনও চলতে পারে।
• চোখের ক্ষেত্রে এই বয়সে বিভিন্ন কালার ব্যবহার করাই শ্রেয়। এই বয়সটি শ্রেষ্ঠ, এই সময়ে যে কোনও রং চোখ বন্ধ করে ব্যবহার করা যায় অবশ্যই পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে। রঙিন আইপেনসিলগুলি একটি ক্যাজুয়াল, সঙ্গে একটি ট্রেন্ডি লুক এনে দেয়। সবুজ, নীল, গোলাপি যে কোনও ধরনের আইপেনসিল ব্যবহার করা যায় গায়ের রং অনুযায়ী। বিভিন্ন রঙের মাসকারাও লাগানো যায়। এই বয়সে মেয়েদের মধ্যে একটি প্রবণতা দেখা যায় শাড়ি পরার, বিশেষত কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে। তখন হাল্কা আইশ্যাডো, কাজল, মাসকারা ভাল লাগবে।
• গালে খুব হাল্কা ব্লাশ-অন লাগানো যেতে পারে। যদি সম্ভব হয় তবে গোলাপি এবং হাল্কা ব্রাউন - এই দু’টি রঙের ব্লাশ-অন সবথেকে ভাল টিনএজারদের জন্য।
• ঠোঁটে উজ্জ্বল রঙের লিপস্টিক লাগানোই ভাল, যেমন গোলাপি, লাইল্যাক, হাল্কা ব্রাউন অথবা লিপবাম লাগানো যেতে পারে। যারা লিপস্টিক পছন্দ করে না তারা হাল্কা রঙের লিপগ্লস ব্যবহার করবে। লিপপেনসিল দিয়ে ঠোঁটের আউটলাইন করা বা লিপলাইনকে বর্ধিত করা ঠিক হবে না।
সুতরাং তুমি মেক-আপ’এর পাশ দিয়ে চলে যাবে কিন্তু পুরো মেক-আপ করবে না। এতেই তোমাকে অপূর্ব লাগবে। একটা কথা মনে রেখো তোমার যা বয়েস এবং ত্বকের যে নিজস্ব উজ্জ্বলতা আছে তাকে মেক-আপ দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করো না।
এ বার তোমাকে জানতে হবে তুমি কী কী করবে না মেক-আপ করার সময়-
• ফাউন্ডেশন ব্যবহারের সময় খুব সচেতন থাকেতে হবে, মুখ দেখে যেন মনে না হয় মুখটি প্লাস্টার করা হয়েছে। ভ্রূ এবং ঠোঁটের উপরিভাগ থ্রেড না করাই ভাল। কনসিলার ব্যবহার করা ঠিক নয়। চেষ্টা করবে মুখের অন্যান্য ফিচারগুলিকে হাইলাইট করার।
• চোখে গাঢ় রঙের আইশ্যাডো কখনই ব্যবহার করবে না। লিপলাইনার, গ্লিটার বা শিমার কোনটাই এই বয়সের মেয়েদের মানায় না।
• গাঢ় রঙের ব্লাশ-অন নৈব নৈব চ, শুধুমাত্র যেন একটু রঙের আভা থাকে।
• গাঢ় রঙের লিপস্টিক মেখে এখনই পঁচিশ বছরকে ছুঁয়ে ফেলার চেষ্টা করো না। মনে রাখবে সামনে তোমার এখন পুরো জীবন, সুতরাং আস্তে আস্তে একটি করে ধাপ পার করে পরের ধাপে পৌঁছনো ভাল। তাড়াহুড়ো করার কোন দরকার নেই।
মেক-আপ করার সময় তোমার এসে গিয়েছে। তুমি বড় হচ্ছো।
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
 |
|
|