|
|
|
|
কর্মস্থল ৫০ কিমি হলেই বাড়ি ভাড়া ভাতা দম্পতিকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এত দিন কর্মরত দম্পতিদের উভয়ের বাড়ি ভাড়া ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম দূরত্ব ছিল ২৫০ কিলোমিটার। এ বার কর্মরত স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে এক জনেরও কর্মস্থল যদি বাড়ি থেকে ৫০ কিলোমিটার বা তার বেশি দূরে হয়, তা হলে দু’জনেই ওই ভাতা পাবেন।
এই বিষয়কে কেন্দ্র করে একটি মামলার সূত্রে কলকাতা হাইকোর্টকে দূরত্ব কমানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গেই সরকার অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, যেখানে সুপারফাস্ট ট্রেন বা বাসের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে দু’জনেরই বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতে হলে দূরত্ব হতে হবে ন্যূনতম ১৫০ কিলোমিটার। দম্পতিদের বাড়ি ভাড়া ভাতার ক্ষেত্রে দূরত্ব কমানোর কারণ কী?
রাজ্য সরকার হাইকোর্টকে জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে মূল বিবেচ্য, কর্মরত স্বামী ও স্ত্রী যাতে একসঙ্গে থাকতে পারেন। দু’জনের মধ্যে এক জনের কর্মস্থলের দূরত্ব যদি বেশি হয়, তা হলে কাজ সেরে সে-দিনেই বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়। সে-ক্ষেত্রে কর্মস্থলের কাছাকাছি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে হবে। সেই সঙ্গেই রাজ্য সরকার ব্যাখ্যা দিয়েছে, দূরত্বটা অবশ্য আপেক্ষিক। কারণ, যেখানে সুপারফাস্ট ট্রেন বা যাতায়াতের জন্য দ্রুতগামী অন্যান্য যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে কর্মস্থল হলেও দিনের দিন বাড়ি ফিরে আসাই যায়। আবার সুন্দরবন এলাকায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব হলেও বাড়ি থেকে রোজ রোজ সেখানে যাতায়াত করে চাকরি করা প্রায় অসম্ভব। তাই এলাকা এবং যানবাহনের ব্যবস্থা অনুযায়ী দূরত্বের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। তবে দূরত্ব যা-ই হোক, এই বাড়ি ভাড়া ভাতা কোনও মতেই দু’হাজার টাকার বেশি হবে না। এত দিন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে এক জনের কর্মস্থল ২৫০ কিলোমিটারের বেশি হলে তবেই দু’জনে বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতেন। মুর্শিদাবাদ জেলার পুরন্দরপুর হাইস্কুলের শিক্ষিকা শুক্লা দাস হাইকোর্টে মামলা করে বলেন, তাঁর স্বামী রেলে কাজ করেন। কর্মস্থল কলকাতায়। দু’জনের বাড়ির দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার নয় ঠিকই। কিন্তু স্কুলে কাজ করে কোনও মতেই তিনি প্রতিদিন কলকাতায় স্বামীর কাছে ফিরতে পারেন না। কর্মস্থলের কাছে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। তাই দূরত্বের বিষয়টি নতুন করে বিবেচনা করে দেখার জন্য আর্জি জানান তিনি। আবেদনকারিণীর আইনজীবী কৌশিক চন্দ হাইকোর্টে বলেন, এক দিনে যাওয়া ও আসায় ৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে কোনও মহিলার পক্ষে স্বামীর সঙ্গে একত্রে থাকা সম্ভব নয়। তাই বাড়ি ভাড়া ভাতার ক্ষেত্রে দূরত্বটা এত বেশি মাত্রায় বেঁধে দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। কৌশিকবাবুর এই যুক্তি মেনে নেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। তিনি রাজ্যকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা করে বাড়ি ভাড়া ভাতার ক্ষেত্রে নতুন নীতি প্রণয়ন করতে বলেন। রাজ্য শুক্রবার জানিয়ে দেয়, অর্থ দফতরের অনুমতি নিয়ে তারা নতুন নীতি চালু করেছে। |
|
|
|
|
|