|
|
|
|
৫ মাস আগে কেনা সাইকেল আজ থেকে পাবে ছাত্রীরা |
শুভাশিস ঘটক • পাথরপ্রতিমা |
আজ, শনিবার ‘নতুন’ সাইকেল পেতে চলেছে ক্যানিংয়ের বেশ কিছু সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রীরা। এই সাইকেলগুলি কেনা হয়েছিল মাস পাঁচেক আগে।
সুন্দরবন এলাকার বিভিন্ন সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য এগুলি কেনা হয়। কিন্তু অর্ধেক সাইকেলই বিলি করা যায়নি। সুন্দরবন এলাকার বিভিন্ন সরকারি বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিস চত্বরে এগুলি পড়ে ছিল। তার মধ্যে থেকে আজ কিছু সাইকেল ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে।
প্রতি বছর সুন্দরবন এলাকার ১৯টি ব্লকের নবম শ্রেণির ছাত্রীদের সাইকেল বিলি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আগের বামফ্রন্ট সরকার। গত মার্চে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে বিলি করার জন্য ২০ হাজার সাইকেল কেনে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর। প্রায় ৭০০টি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রীদের মধ্যে ১০ হাজার সাইকেল বিলি করা হয়। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচন এসে যাওয়ায় তৃণমূল রাজ্য সরকারের ওই সাইকেল বিলি করার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে সাইকেল বিলি বন্ধ করার নির্দেশ দেয় কমিশন।
তার পরে রাজ্যে পালাবদল ঘটে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বাকি সাইকেল এখনও বিতরণ করা হয়নি। রোদে-বৃষ্টিতে পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, কাকদ্বীপ, ক্যানিং, হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদের মতো সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকার সরকারি বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিস-চত্বরে খোলা আকাশের নীচে পড়ে ছিল সাইকেলগুলি। কোথাও কোথাও সাইকেলগুলির উপরে শুধু পলিথিন বিছিয়ে রাখা হয়েছে। |
|
ছাত্রীদের বিতরণ করার জন্য কেনা সাইকেল দীর্ঘদিন পড়ে রয়েছে। ছবি: দিলীপ নস্কর। |
যেমন, পাথরপ্রতিমার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে গিয়ে দেখা গেল, প্রায় দেড় হাজার সাইকেল এই রকম অবহেলায় পড়ে রয়েছে। উপরে ঢাকা দেওয়া পলিথিন চুঁইয়ে জল ঢুকে কোনও কোনও সাইকেলে মরচেও ধরে গিয়েছে।
দু’মাস হয়ে গেল নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু তার মধ্যে সাইকেলগুলি বিলির ব্যবস্থা না হওয়ায় এর পিছনে বর্তমান সরকারের উদাসীনতাই কাজ করছে বলে অভিযোগ প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার নির্বিকার। আমরা সাইকেল বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বলে এখন ওরা আর তা মানতে চাইছে না। এটা অমানবিক। কয়েক হাজার ছাত্রী ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।” তাঁর আশঙ্কা, সরকার এ ভাবে উদাসীন থাকলে আর কয়েক সপ্তাহ পরে নতুন সাইকেলগুলি পুরোপুরি অকেজো হয়ে যাবে।
কান্তিবাবুর তোলা উদাসীনতার অভিযোগ মানতে চাননি বর্তমান সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল। তিনি সাইকেলগুলি বিলি করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সমস্যাটা বুঝতে পেরেছি। শীঘ্রই সাইকেল বিলি করা হবে।” আজ, শনিবার ক্যানিং মহকুমায় এবং আগামী মঙ্গলবার পাথরপ্রতিমায় সাইকেল বিলি করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “ক্যানিং-১ ব্লক অফিস থেকে সাইকেল বিলি করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্কুলকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।” এত দিন ধরে অব্যবস্থায় পড়ে থাকা সাইকেলগুলির যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ার কথা অবশ্য তিনি মানতে চাননি। সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক-একটি সাইকেলের দাম আড়াই হাজার টাকা। তা কেনা হয়েছিল একটি সর্বভারতীয় সাইকেল প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকে। পরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আরও ১৪ হাজার সাইকেল বিলির প্রস্তাব অনুমোদন করেন। মোট ৩৪ হাজার সাইকেল বিলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বাকি সাইকেল অবশ্য কেনা হয়নি। |
|
|
|
|
|