|
|
|
|
পূর্বে সঙ্কটে চাষিরা |
ধানের অভাবি বিক্রির নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
ধানের অভাবি বিক্রি রুখতে সরকারি ভাবে উপযুক্ত দরে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার দাবি জানাল সারাভারত কৃষক ও খেতমজুর সংগঠন। সংগঠনের অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরে খোলাবাজারে যে দরে ধান কেনা হচ্ছে তাতে কৃষকরা উৎপাদন খরচও পাচ্ছেন না। সরকারি ভাবে উপযুক্ত দাম দিয়ে কেনা শুরু না-হওয়ায় কৃষকরা কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার জেলা খাদ্য দফতরে সংগঠনের তরফে স্মারকলিপি দিয়ে উপযুক্ত দাম দিয়ে সরকারি ভাবে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার দাবি জানানো হয়। কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার ক্ষেত্রে বর্তমানে সরকারি সহায়ক মূল্য সরু ধান কুইন্টাল প্রতি ১০৩০ টাকা। আর সাধারণ ধানের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা। প্রতি বছর জেলায় সরকারি ভাবে সাধারণত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ধান কেনা হয় নির্দিষ্ট সংস্থার মাধ্যমে। কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের অভিযোগ, আমন মরসুমের পরে বোরো মরসুমেও জেলায় প্রচুর ধান উৎপন্ন হয়। এ জন্য জমি লিজ, বীজ ধান, সার ও জলসেচ খাতে খরচও হয় প্রচুর। কিন্তু বোরো মরসুমে উৎপাদিত ধান উপযুক্ত দামে কেনার ব্যবস্থা না-থাকায় চাষিরা খোলাবাজারে কম দামেই ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন। ব্যবসায়ীরাই ইচ্ছেমতো দাম ঠিক করেন। এ বার যেমন গত বছরের থেকেও কম দাম মিলছে খোলাবাজারে। পটাশপুর, ময়না, পাঁশকুড়া, তমলুক, কোলাঘাট এলাকায় কৃষকরা কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে কৃষকরা পরবর্তী চাষের খরচ জোগানো নিয়েও সমস্যায় পড়ছেন। কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক নন্দ পাত্রের অভিযোগ, “ধান কেনার জন্য সরকার যে সহায়কমূল্য দেয় তাতেও বর্তমানে ধান চাষের খরচ ওঠে না। আর খোলাবাজারে গত বছর কুইন্টাল প্রতি ১৪০০ টাকা দাম থাকলেও এ বার তা ১০০০-১১০০ টাকায় নেমেছে। এ বছর দর অন্তত ১৪০০ টাকা হলেও চাষিরা খানিকটা উপকৃত হতেন। কিন্তু সরকারি সহায়কমূল্য এবং বাজারদরদু’টোই কম থাকায় খুব সমস্যা হচ্ছে।” সংগঠনের দাবি, ধানের অভাবি বিক্রি বন্ধ করতে রাজ্য সরকারকে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে উপযুক্ত দামে দ্রুত ধান কেনা শুরু করতে হবে। চাষিরাও তাই চাইছেন। কোলাঘাটের চাষি সুধীর নায়েকের বক্তব্য, “গত বছরও ধানের যে দাম ছিল এ বার তার থেকেও অনেকটাই কম দাম মিলছে বাজারে। ধান বিক্রি করাই সমস্যা হচ্ছে। চাষের খরচও উঠছে না।’’ জেলা খাদ্য দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, অভাবি বিক্রি রুখতে শীঘ্রই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক নসরত হোসেন খান বলেন, “জেলার কিছু এলাকায় ধানের অভাবি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু সরকার নির্ধারিত সহায়কমূল্যের চেয়ে বেশি দামে ধান কেনার ক্ষমতা আমাদের নেই। সরকারি সহায়কমূল্যে সরকার নির্ধারিত সংস্থাগুলি যাতে দ্রুত ধান কেনা শুরু করে, তার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
|
|
|
|
|
|