|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
সোনারপুর |
পথের দাবি ভূগর্ভে |
দেবাশিস দাস |
স্টেশন, থানা, বাসস্ট্যান্ড, উড়ালপুল, ট্যাক্সি, অটো এবং রিকশাস্ট্যান্ড কয়েক গজের মধ্যেই রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় দিনভর যানবাহন ও পথচারীর চাপ খুব বেশি। অথচ, রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা সোনারপুর স্টেশন সংলগ্ন অঞ্চলে এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি সত্ত্বেও আজও কোনও ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি হয়নি।
ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি দিন অফিস টাইমে এলাকার পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সব চেয়ে বিপজ্জনক হচ্ছে উড়ালপুলে ওঠার মুখটি। ছোটখাটো দুর্ঘটনা এই এলাকায় লেগেই থাকে। তবুও কারও টনক নড়ে না। এলাকার বাসিন্দা রজতাভ সান্যালের কথায়: “এলাকায় দিনের পর দিন জনবসতি ও যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্য এই এলাকায় একটি ভূগর্ভস্থ পথ অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এই সব কাজ যাঁরা করবেন তাঁদের কারও মুখে কোনও দিন এই বিষয়ে কোনও কথা শুনিনি।”
|
|
এলাকায় ঘুরে জানা গেল, সোনারপুর মোড় এলাকায় বরাবরই পথচারী এবং যানবাহনের চাপ বেশি। কিন্তু এলাকার যানবাহন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত। এর উপরে রয়েছে রাস্তার পাশ দিয়ে দখলদারির সমস্যা। ফলে পথচারী এবং বাসিন্দাদের যাতায়াত ও রাস্তা পারাপার করতে হয় রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে।
যাতায়াতের সুবিধার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা এক সময় উড়ালপুলের দাবি জানিয়েছিলেন।
আজ সেই দাবি পূরণ হওয়ায় সোনারপুর মোড়টির গুরুত্ব আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের কাছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই উড়ালপুল নির্মাণের সময় সোনারপুর মোড়ে একটি ভূগর্ভস্থ পথ নির্মাণের কথা জানিয়ে তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকারের কাছে আবেদন জানানোর কথা ভেবেছিল পুরনো বোর্ড। কিন্তু সেই ভাবনা বাস্তবায়নের পথে এগনোর জন্য আর উদ্যোগী হননি পুরসভার তৎকালীন কর্তৃপক্ষ। সেই সময়ে পুরসভার দায়িত্বে ছিলেন বামপন্থীরা। রাজ্যেও ছিল বাম সরকার। পুর আধিকারিকদের একাংশের মতে, তাই তখন পুরনো বোর্ডের পক্ষে এই আবেদন জানানোর কাজটা অনেক সহজ ছিল। কিন্তু তা হয়নি। |
|
কেন এমন হল? পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান এবং বর্তমান কাউন্সিলর সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বললেন, “এমন কোনও ভাবনার কথা আমার অন্তত জানা নেই। তবে সোনারপুর মোড়টি দিনের পর দিন দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠছে। তাই এলাকার বাসিন্দা এবং পথচারীদের স্বচ্ছন্দে যাতায়াতের জন্য ওখানে একটি ভূ গর্ভস্থ পথ খুব জরুরি।”
পুরসভার অধিকাংশ আধিকারিকের মতে, পুর এলাকার কোনও জায়গায় ভূগর্ভস্থ পথের প্রয়োজন হলে তার জন্য পুর কর্তৃপক্ষের তরফে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে আবেদন জানানো যেতেই পারে। কিন্তু ভূগর্ভস্থ পথ নির্মাণের দায়িত্ব পুরসভার নয়। তবে নির্মাণকার্য যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয় তার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সঙ্গে পূর্ণ সহায়তা করা পুরসভার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
রাজ্য পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সেই এলাকার জনপ্রতিনিধি বা পুরসভা অথবা পঞ্চায়েতকে প্রথমে দফতরের কাছে আবেদন জানাতে হয়। তার পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দফতর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান এবং সোনারপুর (উত্তর) বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, “এই বিষয়ে আমার কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রস্তাব আসেনি। এলে অবশ্যই বিষয়টি বিবেচনা করব।” |
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|