|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসাত
কেষ্টপুর খাল |
জলে গেল টাকাগুলো |
প্রসেনজিৎ পাঠক |
খালের নাব্যতা কম। সে জন্য কয়েক দিন চলার পরেই বন্ধ হয়ে
গিয়েছে লঞ্চ চলাচল। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ দিন লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ থাকায় কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি করা জেটি, টিকিট কাউন্টার এখন পরিত্যক্ত। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে সেখানে বসছে নেশার আসর। চুরি হচ্ছে জেটির লোহার বিভিন্ন অংশ। কিন্তু নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এমনই চিত্র কেষ্টপুর খালের।
বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রাজ্য আবাসন দফতরের উদ্যোগে কেষ্টপুর খালে লঞ্চ চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দিন চালানোর পরেই পলির কারণে বন্ধ হয়ে যায় লঞ্চ চলাচল।
বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই কার্যত বিশ বাঁও জলে সেই পরিষেবা। |
|
সেচ দফতর সূত্রে খবর, লঞ্চ চালানোর জন্য চিৎপুর লকগেট থেকে কুলটি পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ কেষ্টপুর খালের (নিউটাউন পর্যন্ত) ১১ কিলোমিটার অংশে নানা পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। ৫৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেষ্টপুরের বৈশাখী খেয়াঘাট থেকে রাজারহাট উপনগরী লাগোয়া অ্যাকোয়াটিকা পর্যন্ত খালের নাব্যতা বাড়ানো হয়। চিৎপুর থেকে অ্যাকোয়াটিকা পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার খালের দু’ধারে পাথর বসিয়ে বাঁধানো হয়। তার সঙ্গে খালের দু’ধারে আটটি জেটি তৈরি হয়।
এ ছাড়াও সুষ্ঠু ভাবে লঞ্চ চলাচলের জন্য খালে গঙ্গার জল ঢুকিয়ে জলস্তর বাড়ানো হয়। |
|
পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগম-এর তৈরি করা লঞ্চ চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতিকে। হিডকো-র বরাদ্দকৃত অর্থে খালে লঞ্চ চালানোর সকল পরিকাঠামো গড়ে তোলে সেচ দফতর। কিন্তু অভিযোগ, পরীক্ষামূলক ভাবে খালে লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও কয়েক দিন পরেই তা বন্ধ হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগম ও হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমিতি কর্তৃপক্ষের দাবি, নাব্যতা কম থাকার জন্যই কেষ্টপুর খালে লঞ্চ চলাচল সম্ভব হয়নি। |
|
স্থানীয় সূত্রে খবর, হিডকো বা সেচ দফতরের পক্ষ থেকে জেটিগুলির দীর্ঘ দিন রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। ফলে পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ জেটিগুলিকে ঘিরে গজিয়ে উঠছে আগাছার জঙ্গল। অভিযোগ, নজরদারির অভাবে বেশ কয়েকটি জেটির লোহার রেলিং ভেঙে চুরি হয়ে গিয়েছে। যতটুকু রয়েছে, তারও অবস্থা শোচনীয়। মরচে ধরে সেগুলি নষ্ট হচ্ছে। জেটিগুলির ধারে ধাক্কা প্রতিরোধের জন্য লাগানো কাঠের গার্ডগুলিরও ভগ্নপ্রায় অবস্থা। |
|
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, প্রশাসনিক নজরদারি না থাকার ফলে সন্ধে হলেই দক্ষিণদাঁড়ি, লেকটাউন, বৈশাখী, ২০৬ বাসস্ট্যান্ড, ঠাকদাড়ি-সহ বিভিন্ন এলাকার খালধারের লঞ্চ জেটিতে বসে নেশার আসর। চলে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ। কেষ্টপুরের বাসিন্দা রাজু মণ্ডল বললেন, ‘‘প্রশাসনের নজরদারি না থাকার জন্যই বহু টাকা খরচে তৈরি ওই সব সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হচ্ছে। অসামাজিক কাজও হচ্ছে।’’ যদিও জেলা পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, জেটিতে অসামাজিক কাজ হয় বলে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কোনও নির্দিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে জেটির নজরদারির জন্য যোগাযোগও করা হয়নি।
জেটির বেহাল অবস্থা সম্পর্কে হিডকো-র জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রদ্যুৎ বিশ্বাস বলেন, “জেটিগুলি সেচ বিভাগ তৈরি করেছিল। ওগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও ওদেরই।” সেচ দফতরের ক্যানাল ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার মানস চক্রবর্তী বলেন, “জেটিগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে এগুলি যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য কী করা যায় দেখছি।” |
ছবি অর্কপ্রভ ঘোষ |
|
|
|
|
|