|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা
নবদিগন্ত |
হবে পার্কোম্যাট |
কাজল গুপ্ত |
অবশেষে বিধাননগরের পাঁচ নম্বর সেক্টরে পার্কিং সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি পাঁচ নম্বর সেক্টরের বেহাল রাস্তা পরিদর্শনে এসে যানজট দেখে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, এই সেক্টরে একটি পার্কোম্যাট করা হবে। এলাকায় জায়গা কম, গাড়ি কয়েক গুণ বেশি। রাস্তার উপরেই পার্কিং হয়। ফলে নিত্য দিনের যানজট। পাঁচ নম্বর সেক্টরে পরিকল্পনামাফিক পার্কিংয়ের অভাব নিয়ে নিত্যযাত্রী এবং আইটি কর্মীদের এই অভিযোগ আজও দূর হল না। বছরখানেক আগে নবদিগন্ত থেকে পার্কোম্যাটের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বাম সরকারের আমলে এই প্রস্তাব কার্যকরী রূপ পায়নি বলে অভিযোগ।
রাজনৈতিক পালাবদলের পরে নতুন সরকার পাঁচ নম্বর সেক্টরের পরিকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে। পার্কোম্যাট তৈরির পরিকল্পনা তারই অঙ্গ। এই পরিকল্পনা কার্যকরী করতে প্রয়োজনীয় জমি খোঁজার কাজ চলছে।
২০০৬-এ পাঁচ নম্বর সেক্টরের জন্য আলাদা করে একটি প্রশাসনিক সংস্থা তৈরি হয়। নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ সে বছর থেকেই কাজ শুরু করেন। মাত্র ৪৩২ একর জায়গায় পাঁচ বছরের মধ্যেই লক্ষাধিক মানুষ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে কাজ করছেন। গাড়ির সংখ্যাও কম নয়। ট্রাফিক পুলিশের একটি সূত্রের হিসাব অনুযায়ী, ব্যস্ত সময়ে ঘণ্টায় পনেরো থেকে কুড়ি হাজার গাড়ি চলাচল করছে এই সেক্টরে। কিন্তু এলাকায় মাত্র ১০-১২ কিলোমিটার রাস্তা। ফলে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গার অভাব। এই সেক্টরে শুরু থেকে পার্কিংয়ের জন্য কোনও নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করা ছিল না। |
|
পার্কিংয়ের সমস্যা এখানে বরাবরই। আইটি কর্মী থেকে নিত্যযাত্রী, যাঁরা গাড়ি ব্যবহার করেন তাঁদের এই দাবি অনেক দিনের। যেমন, গড়িয়ার বাসিন্দা নির্মল ঘোষ বলেন, “ওয়েবেলের গলিতে গাড়ি রাখি। কিন্তু গাড়ি রাখায় রাস্তা ছোট হয়ে যায়। ফলে যানজট এখানে বড় সমস্যা। পার্কোম্যাট হলে সমস্যা মেটে। আমরাই বা গাড়ি রাখব কোথায়?” আবার এই সেক্টরে যাতায়াত করা বিভিন্ন রুটের বাসচালকদেরও অভিযোগ পার্কিং নিয়ে। তাঁদের কথায়, নিক্কোপার্ক কিংবা মহিষবাথানের কাছে গাড়ি রাখলে সমস্যা। কিন্তু গাড়ি রাখা যাবে কোথায়? এখানে কোনও বাস টার্মিনাস নেই। অবিলম্বে একটি টার্মিনাস দরকার।
আইটি সংস্থাগুলিতে অসংখ্য গাড়ি ব্যবহৃত হয়। অনেকে সংস্থাই তাদের অফিস চত্বরের মধ্যে গাড়ি রাখে। কিন্তু পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় রাস্তার উপরেই অনেককে গাড়ি রাখতে হয়। সম্প্রতি পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী পাঁচ নম্বর সেক্টর পরিদর্শনে যান। এলাকা পরিদর্শনের পরে তিনি জানান, এলাকায় প্রতি দিন অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করে। কিন্তু পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বিভিন্ন বড় রাস্তার ধারে গাড়ি রাখতে হয়। রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে ছাড়া সেক্টর ফাইভে বিশেষ চওড়া রাস্তা না থাকায় যানজট হয়। তিনি বলেন, “অতি দ্রুত একটি পার্কোম্যাট তৈরি করার চিন্তাভাবনা করছি। যেখানে অসংখ্য গাড়ি রাখা যেতে পারে। ফলে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে। প্রয়োজনীয় জমি দেখতে নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষকে বলেছি।” |
|
নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের এগজিকিউটিভ অফিসার বদ্রিনারায়ণ কর বলেন, “রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো জমি চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। এখানে প্রতি দিন আসা গাড়ির সংখ্যা বিচার করে খানিকটা বড় জমির খোঁজ করা হচ্ছে।”
পার্কোম্যাটের বিষয়ে সবিস্তার কোনও তথ্য না দিলেও প্রশাসন সূত্রে খবর, পার্কোম্যাটের নীচে বাসস্ট্যান্ড, উপরের তলগুলিতে অন্যান্য গাড়ি রাখার পরিকল্পনা চলছে। এর আগেও বাম সরকারের আমলে নবদিগন্তের তরফে পার্কোম্যাট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকরী হয়নি। এ বার অবশ্য পুরমন্ত্রীর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন এই শিল্পতালুকের পরিকাঠামোগত সমস্যা দ্রুত মেটাতে। তারই অংশ হিসাবে দ্রুত পার্কোম্যাট হবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, এই সেক্টরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা চলছে। দ্রুত পরিকল্পনা করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতরকে জানানো হবে। |
ছবি: অকর্প্রভ ঘোষ |
|
|
|
|
|