‘দ্বিতীয় কাঁচের বাক্সটাও আর ফাঁকা থাকল না’
দু’হাজার ছয়ের ২৯ অগস্টের বিকেলে রাস্ট্রপতি ভবনের দরজায় পৌঁছেও ফিরতে হয়েছিল তিরন্দাজ রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দেখা হয়নি দিদির অর্জুন পুরস্কার নেওয়া।
নির্দিষ্ট সময়ের সামান্য পরে বাবা-মার সঙ্গে রাইসিনা হিল-এ গিয়ে দেখেছিলেন প্রধান ফটক বন্ধ। মা কল্পনা বন্দ্যোপাধ্যায় কেঁদে ফেলেছিলেন। পাশে শুকনো মুখে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেকে বলেছিলেন, “মেয়ের অর্জুন নেওয়া দেখতে পেলাম না। অপেক্ষায় থাকব তোর অর্জুন পুরস্কার নেওয়া দেখার জন্য।”
পাঁচ বছর পর দরবার হলের দরজা আর এক বার হাট করে খুলে যাচ্ছে বরাহনগর বসাকবাগানের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সামনে। দিদি দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর ফের অর্জুন পুরস্কার নিতে সেই ২৯ অগস্টই রাষ্ট্রপতি ভবনে যাবেন ভাই রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’হাজার এগারোয়ে। বাংলার খেলাধুলোর ইতিহাসে একই পরিবারে দুই ভাইয়ের ‘অর্জুন’ হওয়ার নজির আছে। ফুটবলার প্রদীপ ও প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ‘অর্জুন’ হয়েছিলেন কুড়ি বছরের ব্যবধানে। তার পর ব্যাডমিন্টনে দীপু এবং রমেন ঘোষ। কিন্তু ভাই-বোনের অর্জুন প্রাপ্তি শুধু বাংলায় নয় ভারতেই সম্ভবত নজিরবিহীন।
তিরন্দাজ ভাই-বোন। শুক্রবার সাই-তে। -উৎপল সরকার
“তিন বছর আগে সিঁড়ির মুখে দু’টো কাঁচের বাক্স বাবা-মা তৈরি করিয়েছিলেন অর্জুন পুরস্কার রাখার জন্য। এতদিন একটা বাক্স ফাঁকা ছিল, সেটাও এ বার পূরণ হচ্ছে,” শুক্রবার সাই-তে অনুশীলনের ফাঁকে বলছিলেন রাহুল। এ দিন সকালে অনুশীলনের সময় জানতে পারেন, ‘অর্জুন’ হয়েছেন তিনি। “দিল্লি কমনওয়েলথ আর এশিয়াডে পদক জেতার পর এ বার নিশ্চিত ছিলাম রাস্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারব। ভাল লাগছে মা-র স্বপ্ন সার্থক করতে পেরে,” আনন্দবাজারকে বলার ফাঁকে গাড়ি থেকেই রাহুল ধন্যবাদ জানিয়ে এসএমএস পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পুরস্কার উৎসর্গ করলেন, টাটা অ্যাকাডেমির দুই কোচ ধর্মেন্দ্র তিওয়ারি ও লিম দে উইং-কে। বললেন, “ওঁরা দু’জনই আমাকে গড়েপিটে তৈরি করেছেন।”
তিনটে পাসপোর্টের পাতা শেষ। পকেটে ছ’টা বিশ্বকাপ সোনা। এশিয়াড, কমনওয়েলথ-সহ পদকে ছয়লাপ বাড়ি। পাখির চোখ শুধু অলিম্পিকে। পরের বছর লন্ডনের টিকিট পেতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি টুর্নামেন্টে নামার জন্য তৈরি হচ্ছেন রাহুল। বললেন, “এখনও দিদি আমার চেয়ে এগিয়ে। ও অলিম্পিক গেছে।” আর দিদি দোলার মন্তব্য, “রাহুলের বয়স কম। ও কিন্তু আমাকে ছাপিয়ে যাবে।”
শুক্রবার দিদিকে ধরে ফেললেন ভাই। অর্জুন প্রাপ্তিতে। এর পর কী হবে সময়ই বলবে। এ দিন অবশ্য বছর চব্বিশের রাহুলের গলায় শুধুই উচ্ছ্বাস। “যাক বাবা, দু’টো অর্জুন-ই এল আমাদের বাড়িতে।”
Previous Story Khela Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.