ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু ঠেকাতে নয়াদিল্লিতে নতুন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী আমলাদের নিয়ে বৈঠক করার পরেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। আজ সকালে সাড়ে আটটা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের পলামু ব্যাঘ্র প্রকল্পের এলাকাতেই লাতেহারে মালগাড়ির ধাক্কায় মারা পড়ল একটি হাতির ছানা। ধানবাদ ডিভিশনের বড়কাখানা-বারওয়াডিহি শাখায় হেহগাড়া ও চিপাদোহর স্টেশনের মাঝে জাওয়া নালার কাছে ধাক্কা খায় হাতিটি।
এলাকাটি হাতি চলাচলের করিডর। ঝাড়খণ্ডের বন দফতরের কর্তাদের দাবি, হাতি তথা অন্য পশুদের জন্য ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত রেলের ‘কশান জোনে’ই মালগাড়ি ধাক্কা মারে শিশু হাতিটিকে। কোনওভাবে হাতির ছানাটি দলছুট হয়ে গিয়েছিল। তবে ধানবাদের ডিআরএম আনন্দসাগর উপাধ্যায়ের মতে, দুর্ঘটনা ঘটেছে ‘কশান জোন’-এর সামান্য বাইরে। হাতি-মৃত্যুর বিষয়ে যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কয়লা পরিবহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওই রেলপথে চলাচল করে রাজধানী, শক্তিপুঞ্জ, গরিবরথ, টাটা-জম্মু-তাওয়াই-এর মতো দুরপাল্লার এক্সপ্রেস।
পলামুর ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা সৈয়দ এহতেশাম কাজমি এবং ন্যাশনাল টাইগার কনজার্ভেশন অথরিটির ‘ইভ্যালুয়েশন টিম’-এর সদস্য দয়াশঙ্কর শ্রীবাস্তব দু’জনেই এই দুর্ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। শ্রীবাস্তব বলেন, “যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে কোনওভাবেই ট্রেনচালকের ঘণ্টায় ২০ কিলেমিটারের বেশি গতিতে ট্রেন চালানো উচিত নয়। জঙ্গলের মধ্যে বারে বারে হর্ন বাজিয়ে হাতিদের সতর্ক করাও আবশ্যক। এ সব নিয়ম মেনে চললে দুর্ঘটনা ঘটার কথাই নয়।” এ ছাড়া, হাতি চলার করিডরে রেললাইনে ঘাস ছাঁটা বা ঘাসে মোবিল মাখানোর রেওয়াজ। পলামুতে এই কাজ ঠিকঠাক করা হয়েছিল কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
গত ২৬ জুন বানারহাটে ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায় দু’টি হাতি। গত বছর সেপ্টেম্বরেও ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়িতে মৃত্যু হয়েছিল সাতটি হাতির। উত্তরবঙ্গে বন দফতর ও রেলের মধ্যে সমন্বয় আনতে যৌথ ভাবে নজর-মিনার বসানো বা কন্ট্রোল রুম গড়া নিয়ে আলোচনা চলছে। হাতিদের উপস্থিতির বিষয়ে আগাম সতর্কতার জন্য আইআইটি-র বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে হাতির পায়ের কম্পন জরিপ করার যন্ত্র রেললাইনে বসানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। কিন্তু তার আগেই ফের মারা গেল আর একটি হাতি। |