সিঙ্গুরের জমি ব্যবহার করা হয়নি বলে রাজ্য সরকার আদালতের কাছে যে হলফনামা পেশ করেছে, তা একপ্রকার খারিজ করে দিল টাটা মোটরস।
শুক্রবার, হাইকোর্টে বিচারপতি সৌমিত্র পালের এজলাসে সিঙ্গুর মামলার শুনানির সময় টাটা মোটরস-এর আইনজীবী সমরাদিত্য পাল জানান, সিঙ্গুরের জমির ব্যবহার ও অধিকার নিয়ে রাজ্য সরকার যে প্রশ্ন তুলেছে, তা ঠিক নয়। লিজ চুক্তি মেনে তাঁর মক্কেল সিঙ্গুরের জমিতে ন্যানো গাড়ির কারখানা গড়েছে। কিন্তু ওই প্রকল্পকে ঘিরে লাগাতার যে রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তাতে টাটা মোটরস কর্তৃপক্ষের মনে ভীতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ন্যানো গাড়ি বাজারে আনার প্রতিশ্রুতির কথাও মাথায় রাখতে হয়েছিল টাটা মোটরস-কে। অথচ ওই সময় সিঙ্গুরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে ন্যানো গাড়ি উৎপাদন সম্ভব ছিল না বলেই তাঁর মক্কেল প্রকল্প সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তা বলে সিঙ্গুরের জমির অধিকার ছেড়ে, তা পরিত্যক্ত করে টাটা মোটরস চলে যায়নি।
সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ আইন অসাংবিধানিক বলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে টাটা মোটরস। আদালতের কাছে টাটা মোটরস জানিয়েছে, আইন এনে সিঙ্গুরের জমি ফের অধিগ্রহণ করে তাদের উৎখাত করে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার।
সমরাদিত্যবাবু এ দিন আদালতকে জানান, কোনও রকম ভীতি প্রদর্শন ছাড়া ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ যদি কোনও সম্পত্তি ছেড়ে চলে যায়, তখন তাকে পরিত্যাগকরা বলা যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে তিনি পঞ্জাব হাইকোর্টের একটি রায়ের উল্লেখ করেন। তাঁর যুক্তি, সিঙ্গুরে টাটা মোটরস-এর ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটাই হয়েছে। ইচ্ছে না থাকলেও, ভয় এবং আশঙ্কার কারণে টাটা মোটরস প্রকল্প সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তাই সিঙ্গুরের জমির অধিকার পরিত্যাগ করে টাটা মোটরস চলে গিয়েছে, এটা ঠিক নয়। |