সই করেনি সিটু, আইএনটিইউসি
কানোরিয়া জুট মিল খুলতে ত্রিপক্ষ চুক্তি মহাকরণে
হাওড়ার ফুলেশ্বরের কানোরিয়া জুট মিল খোলার ব্যাপারে শুক্রবার মহাকরণে সরকার, শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। পরে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জানান, চুক্তি অনুযায়ী আগামী ২২ অগস্ট কারখানা খুলবে। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কারখানার উৎপাদন শুরু হবে। পাঁচ দফা ওই ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মোদ্দা বক্তব্য হল
l কারখানা বন্ধের সময় শ্রমিকদের যে ক’দিনের (১৮, ১৯ দিনের মতো) মজুরি বাকি ছিল, ১০ সেপ্টেম্বর কারখানায় উৎপাদন শুরু হওয়ার দিনেই তা মেটানো হবে।
l ২০১০-র ফেব্রুয়ারিতে পাটশিল্পের সর্বশেষ চুক্তি মোতাবেক প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইএসআই, গ্র্যাচুইটি-সহ অন্যান্য পাওনাগণ্ডা মেটানো হবে।
l ২২ অগস্ট কারখানা খোলার পরে শুরু হবে রক্ষণাবেক্ষণ ও জঙ্গল সাফাইয়ের কাজ।
l কারখানার শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা ১৫ দিন আগে জানানো হবে।
কানোরিয়া জুটমিল খোলার সম্ভাবনার কথা শুনে উচ্ছ্বসিত মিলের শ্রমিকেরা। শুক্রবার হিলটন ঘোষের তোলা ছবি।
তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিউসি এবং কানোরিয়ার সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়ন আজকের ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে সই করলেও বৈঠকে উপস্থিত কারখানার সিটু, আইএনটিইউসি ও টিইউসিসি সই করেনি।
কানোরিয়া জুট মিলের জটিলতা ১৮ বছরে একাধিক বার খবরের শিরোনামে এসেছে। গত ২৪ বছরের মধ্যে ঘুরে ফিরে ১৫ বছরেরও বেশি সময় কারখানাটি বন্ধ ছিল। শেষ বার কারখানাটি বন্ধ হয় ২০০৬-র মার্চে। ১৯৯৪-এর ফেব্রুয়ারিতে কানোরিয়া জুট মিলের সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে রেল-অবরোধ আন্দোলন উত্তাল চেহারা নেয়। হস্তক্ষেপ করতে হয় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে। এ দিন শ্রমমন্ত্রী জানান, কারখানার মাস্টার রোলে দেড় হাজার শ্রমিকের নাম আছে। কারখানা খোলার ব্যাপারে ব্যক্তিগত স্তরে উদ্যোগী হতে তিনি একটাই শর্ত দেন। তা ছিল, কারখানার বেশির ভাগ শ্রমিক যদি সেই অনুরোধ জানিয়ে তাঁর কাছে লিখিত আবেদন করেন, তা হলে তিনি এগোবেন। কারখানার ১,২৬৯ জন শ্রমিক একযোগে সেই লিখিত আবেদন জানানোর পরে তিনি চিঠি দিয়ে সব পক্ষকে বৈঠকে ডাকেন। কারখানায় নতুন কর্মী নিয়োগের সময় অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
এই চুক্তিকে ‘প্রহসন’ অ্যাখ্যা দিয়ে সিটু নেতা মোহন মণ্ডল বলেন, “আমাদের মহাকরণে ডাকা হয়েছিল। গিয়ে দেখলাম, কারখানার বর্তমান প্রোমোটার শিবশঙ্কর পাসারির সঙ্গে শ্রমমন্ত্রীর আগেই কথা হয়ে গিয়েছে। শুধু কারখানা খোলার কথাটি ঘোষণা করা হল। বকেয়া মজুরি, গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ড ফান্ড, ইএসআই ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হল না। তাই আমরা সই করিনি। বর্তমানে যিনি শ্রমমন্ত্রী হয়েছেন, তিনি এক সময়ে সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা হিসেবে সিটুকে শিবশঙ্কর পাসারির দালাল বলতেন। তাঁর সঙ্গেই চুক্তি করে যখন কারখানা খোলা হচ্ছে, তখন বোঝা যাচ্ছে, কে কার দালাল!”
প্রায় একই সুরে চুক্তির সমালোচনা করে সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের একটি গোষ্ঠীর উপদেষ্টা প্রফুল্ল চক্রবর্তী বলেন, “শিবশঙ্কর পাসারিই সব অশান্তির মূল। ১৫ বছর ধরে তাঁর জন্যই কারখানা ভাল ভাবে চলেনি। তাঁর হাত ধরে কারখানা খোলা হলে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষিত হবে না।” কানোরিয়া বাঁচাও কমিটির উপদেষ্টা কুশল দেবনাথও বলেন, “বর্তমান প্রোমোটার শিবশঙ্কর পাসারিই ফের কারখানা খুললে তাতে শ্রমিকদের ভালো হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবুও কয়েক মাস দেখতে চাই।” আইএনটিইউসি নেতা গণেশ সরকার বলেন, “লিখিত চুক্তিপত্র আমাদের দেওয়া হয়নি। মৌখিক ভাবে বলা হয়, মিল খুলছে। কিন্তু শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর ব্যাপারে স্পষ্ট ছবি পাইনি। তাই সই করিনি।”
Previous Story South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.