মনোরঞ্জন ২...
বিকেলের রুটিন পাল্টাবে এ বার
পেক্ষায় মৈনাক ভট্টাচার্য। সরকারি কর্মচারী। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে টিভির সামনে বসবেনই। হাসতে হাসতে বললেন, “এত দিন খবর-খেলাই দেখতাম। আনন্দবাজার পত্রিকার বিনোদন চ্যানেল যখন, এ বার থেকে সিরিয়ালও দেখতে হবে। সেই অপেক্ষাতেই আছি।” একই প্ল্যান সুস্মিতা বসুর। কল সেন্টারের কর্মী। “রাতে কাজে বেরোনোর আগে ‘মিসেস সিংহ রায়’, ‘আমার নাম জয়িতা’ দেখে ফেলতে চাই। মনে হচ্ছে, আমার মতো মেয়েদের কথা বলবে গল্পগুলো।”
মৈনাকের মতো সোমবার থেকে আপনিও অফিস সেরে বাড়ি ফিরে, হাতমুখ ধুয়ে চায়ের কাপটি নিয়ে জমিয়ে বসে পড়তে পারেন টিভির সামনে। গিন্নিও সোফার বিশেষ কোণটি দখল করে ফেলবেন হয়তো। আপনার কলেজে পড়া কন্যাও মোবাইলে বন্ধুকে ধমক দিয়ে ‘পরে কথা বলব, এখন না’ বলে আপনার গা ঘেঁষে ধপাস হয়ে যাবে টিভির সামনে।
সানন্দা টিভি শুরু হচ্ছে যে ২৫ জুলাই থেকে।

অল্প অল্প প্রেমের গল্প

আমার নাম জয়িতা
শুরু ‘বিন্দি’ দিয়ে। মেয়ে পাচারকারীদের হাত থেকে পালিয়ে আসা মেয়ের গল্প। যে মেয়ে জানে, তার শরীরই তার সব থেকে বড় শত্রু। কী হবে বিন্দির, কী ভাবে বিপদের বাঘ-আঁচড় সামলে সে এগিয়ে যাবে, সে কথা ভাবতে ভাবতেই সাড়ে ৭টা। এ বার শুরু হবে ‘আমার নাম জয়িতা’। বছর ৩৫-এর গৃহবধূ সঙ্গীতা দাম বলছেন, “জয়িতা নামের মেয়েটাকে হোর্ডিংয়ে দেখেই খুব ভাল লেগেছে। মনে হচ্ছে আমরা যা পারিনি ও সেটা পারবে।” হয়তো তাই। কেন না, জয়িতা সেই মেয়ে, যে চায় তার কাজই তার কথা বলবে। সে জানে প্রতিপদে তার মতো মেয়েদের এক জন পুরুষের চেয়ে ঢের বেশি দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। “দিদিভাইও ঠিক জয়িতার মতো, না বাবা?” হয়তো প্রশ্ন করবে আপনার ছোট মেয়েও।

বিন্দি

সবিনয় নিবেদন
ঘড়িতে রাত ৮টা। “মা এর পরেরটা আমার সিরিয়াল,” চিৎকার করে বাথরুম-ব্রেক নেওয়া ছোট মেয়ে জানান দেবে। সত্যি! “অল্প অল্প প্রেমের গল্প”র মিকি আপনার ছোট কন্যার মতোই তিড়িংবিড়িং যেন! জিন্সের ওপর কোনও রকমে চাপানো কুর্তি। লম্বা চুলটা এলোমেলো হয়ে কপালে। আজ বাবার জন্য রাতবিরেতে ওষুধ আনতে ছোটা, তো কাল ইলেকট্রিকের মিস্ত্রি না এলে কলিংবেল নিজেই সারাতে বসে যাওয়া। তবে ধিড়িঙ্গি মানেই ‘টমবয়’ নয় কিন্তু। মিকির চোখেমুখে নারীত্বের সুষমা। ঠিক আপনার ছোটটিরই মতো। কিংবা অসিত মালাকার আর শর্বরী মালাকারের মেয়েটির মতোও। “মিকিকে যেমন বললেন আমাদের ক্লাস টেনে পড়া মেয়েটাও ঠিক তাই। চড়ুই পাখির মতো ছটফটে,” বলছেন তাঁরা।
রাত সাড়ে ৮টা। বড় কন্যার অফিস থেকে ফেরার পালা। সে হয়তো ছোট বোনকে বলবে, “ইস, সিরিয়ালগুলো মিস হয়ে গেল। রিপিট টেলিকাস্ট কখন রে?” তার প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কেউ থাকবে না। ‘মিসেস সিংহ রায়’ শুরু হয়ে যাবে যে।
‘কিছু-না’র পরিবারে জন্ম নিয়ে ‘সব কিছু’ হয়ে ওঠে যে মেয়ে এ তারই গল্প। সরস্বতী মণ্ডল যার নাম। এই শহরের বস্তি থেকে সিংহ রায়দের রাজপ্রাসাদে কী ভাবে জায়গা করে নেয় সে, আর চলার পথে কী ভাবে উঁচু তলার মানুষদের মুখোশগুলো খুলে দেয় এ তারই গল্প। ‘‘এ রকম মেয়েই দরকার আমাদের,’’ মতামত এনজিও কর্মী তাপস সমাদ্দারের। সিরিয়াল সে ভাবে দেখা না হলেও সরস্বতীর গল্প মিস করবেন না জানিয়ে দিচ্ছেন।

প্রলয় আসছে

মিসেস সিংহ রায়
ঘড়িতে তখন ৯টা। আপনার বড় মেয়ে চেঞ্জ করতে দৌড়বে। শুরু ‘সবিনয় নিবেদন’। বাঙালি ছেলের সঙ্গে মাড়োয়ারি মেয়ের প্রেম আর বিয়ের গল্প। ‘‘আজকাল এ রকম ক্রস কালচারাল বিয়ে খুব হচ্ছে। আমি তো বৌকে বলেছি মন দিয়ে দেখতে। অবাঙালি জামাই আসে যদি,’’ চোখেমুখে হাসি ছড়িয়ে বলছেন ব্যাঙ্ক কর্মী অপূর্ব মিত্র।
রাত সাড়ে ৯টা। আপনার বড় কন্যা ফ্রেশ হয়ে এসে বসবে। আবির চট্টোপাধ্যায়কে মন দিয়ে দেখতে হবে তো! “আমি আবিরের মস্ত ফ্যান। আপাতত তাই নাইট শো-এ সিনেমা দেখা বাদ,” ঘোষণা কলেজ ছাত্রী অনন্যা মুখোপাধ্যায়েরও।
শুরু হবে ‘প্রলয় আসছে’। এন্টারটেনমেন্টের যাবতীয় মশলায় ঠাসা সামাজিক থ্রিলার। অনন্যার মতো আপনারাও হয়তো কিছুতেই মিস করতে চাইবেন না সেই সিরিয়াল...
এত ক্ষণ যা পড়লেন সেটা শুধু এই সোমবার না। আগামী অনেক দিনের বাঙালি জীবনের ছবি।
টাইম মেশিনে দেখে আসবেন? থাক। অপেক্ষার ফল ভাল হয়। সানন্দা টিভির প্রথম শোগুলো তো আর এক দিন পরেই!
Previous Item Patrika Next Item


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.