|
|
|
|
আরজেডি ছাড়লেন লালু-ঘনিষ্ঠ শাকিলও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফের বড়সড় ধাক্কা খেলেন লালু প্রসাদ। ক’দিন আগে দল ছেড়ে জেডিইউয়ে যোগ দিয়েছেন প্রবীণ সমাজবাদী নেতা রামবচন রায়। আর আজ আরজেডি ছাড়লেন লালু প্রসাদের গত ১৮ বছরের সঙ্গী, প্রাক্তন মন্ত্রী শাকিল আহমেদ খান। তাঁর দাবি, আরজেডির যাঁরা ক্ষতি করছেন, তাঁরাই এখন দলে বেশি সম্মান পাচ্ছেন। এ ব্যাপারে তিনি অনেক বার নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি। তাই বাধ্য হয়েই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্য দিকে, শাকিলের দল ছাড়ার সিদ্ধান্তকে একেবারে ‘সুবিধাবাদী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা, আরজেডি-র আব্দুল বারি সিদ্দিকি। আরও একধাপ এগিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হুসেন শাকিলকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “উনি দ্বিতীয় মীরজাফর। লালুজিকে পিছন থেকে ছুরি মেরেছেন।”
ছাত্রজীবনে বাম-রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং পরে সিপিআইয়ের সদস্য হন শাকিল আহমেদ খান। ১৯৯৩ সালে তিনি জনতা দলে যোগ দেন। পরে ১৯৯৭ সালে লালু প্রসাদের সঙ্গে আরজেডি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন শাকিল। লালুর খুব খারাপ সময়েও তাঁর সঙ্গ ছাড়বেন না বলে রাজনৈতিক মহলে যাঁদের নাম উচ্চারিত ছিল, তাঁদের মধ্যে শাকিল অন্যতম। এ হেন শাকিল দল ছাড়ায় নিঃসন্দেহে বেকায়দায় পড়ে গেলেন লালু। শাকিল দল ছাড়ার পরে তিন সাংসদ রঘুবংশ প্রসাদ সিংহ, জগদানন্দ সিংহ, রামকৃপাল যাদব ছাড়া পুরনো লালুর সঙ্গী বলতে দলে রয়ে গেলেন রামচন্দ্র পূর্বে, আব্দুল বারি সিদ্দিকি। আর এক সাংসদ উমাশঙ্কর সিংহ ইতিমধ্যেই অবশ্য লালুর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন। অন্য দিকে, লালুর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হিসেবে পরিচিত শ্যাম রজক, ভীম সিংহরা লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পরেই আরজেডি ছেড়ে জেডিইউয়ে যোগ দিয়েছিলেন। শাকিল আহমেদের ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে তিনিও জেডিইউয়ে যোগ দিতে চলেছেন। যদিও শাকিল এখনই সে কথা স্বীকার করছেন না। তাঁর কথায়, “রাজনীতি আমার পেশা নয়। ওকালতি আমার পেশা। কিন্তু মানুষের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা কমছে না। কোন দলে যাব, তা আমি এখনই ভেবে দেখিনি। সাত-আট দিনের মধ্যেই সব জানতে পারবেন। তবে আমি আর কখনও আরজেডি-তে ফিরব না।” সরাসরি আরজেডি-র কোনও নেতার নাম করে সমালোচনা না করলেও শাকিল বলেন, “আমি গত ফেব্রুয়ারিতেই রাজ্য সভাপতি রামচন্দ্র পূর্বেকে চিঠি লিখে দলের অন্দরে যে সব নেতারা অন্তর্ঘাত করছেন, তাঁদের সম্পর্কে জানিয়েছিলাম। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু পাঁচ মাস পরেও তাঁদের বিরুদ্ধে দল কোনও ব্যবস্থা তো নেয়নি, উল্টে দলে তাঁদের গুরুত্ব আরও বেড়েছে। এ সব দেখার পরেই আমি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
আব্দুল বারি সিদ্দিকির অবশ্য দাবি, শাসক দলের কাছাকাছি থাকতেই উনি দল ছেড়েছেন। তিনি বলেন, “এর আগে আরজেডি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন উনি সিপিআই ছেড়ে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। লালুজি ওঁকে যথেষ্ট সম্মান দিয়েছেন। বিধায়ক করেছেন। মন্ত্রীও বানিয়েছেন। এখন খারাপ সময়ে উনি ভেবেছেন হয়তো শাসক দলের সঙ্গে থাকলে কিছু পাবেন। তাই দল ছেড়েছেন।” |
|
|
|
|
|