|
|
|
|
ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে অসন্তোষ এনডিএ-তেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা• নয়াদিল্লি |
লোকায়ুক্তের রিপোর্টে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এনডিএ-র মধ্যেও সঙ্কট তৈরি হল। ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এনডিএ-র আহ্বায়ক ও জেডি(ইউ) নেতা শরদ যাদব।
শরদ যাদবের মতে, এনডিএ যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে, সেই সময় ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আঁচ ফেলতে পারে এই আন্দোলনে। বিষয়টি নিয়ে নিতিন গডকড়ীর সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছেন শরদ। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন। সুষমা স্বরাজ-সহ দলের একটি অংশ তাঁকে সরিয়ে মান বাঁচানোর পক্ষে সওয়াল করছেন। কিন্তু জাতপাতের সমীকরণের জন্য ইয়েদুরাপ্পাকে তাঁরা সরাতে পারছেন না। আবার দুর্নীতি নিয়ে ইয়েদুরাপ্পার যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, সেটিকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতেও হিমশিম খাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে কোন কোন কংগ্রেস নেতার নামও লোকায়ুক্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মরিয়া হয়ে তা-ই এখন হাতড়ে বেড়াচ্ছে বিজেপি। একটি সংবাদপত্র কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণের নামও উল্লেখ করায় বিজেপি এখন কংগ্রেস তথা মনমোহন সিংহকে আক্রমণের নতুন সুযোগ পেয়েছে। বিজেপির মুখপাত্র রাজীব প্রতাপ রুডি প্রশ্ন তুলেছেন, “কংগ্রেস কী এ বারে কৃষ্ণকেও ইস্তফা দিতে বলবে? এর আগে দিল্লিতে শীলা দীক্ষিত
সরকার লোকায়ুক্তের বিরূপ রিপোর্ট সত্ত্বেও এক মন্ত্রীকে সরাননি।” এ দিকে একটি সংবাদপত্র তাঁকে ‘কলঙ্কিত মন্ত্রী’ হিসাবে উল্লেখ করে ছবি ছাপানোয় সেটির মালিক-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার কথা ঘোষণা করেছেন কৃষ্ণ।
কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আবার বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, “কর্নাটকে মূল অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। ইস্তফা তাঁকে দিতেই হবে। বিজেপি তো বরাবর নৈতিকতার বড়াই করে, এ বারে তারা ব্যবস্থা নিয়ে দেখাক।” বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে কর্নাটকের রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা হংসরাজ ভরদ্বাজও আজ বলেছেন, “রিপোর্ট হাতে পেলে আমি উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেব।” সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিও ইয়েদুরাপ্পার ইস্তফার দাবিতে সরব হয়েছেন। কিন্তু ফাঁস হওয়া রিপোর্টে তাদের জোটসঙ্গী জেডি(এস) নেতা কুমারস্বামীর নাম ওঠা সত্ত্বেও তাঁর বিষয়ে মুখ খোলেনি সিপিএম।
কিন্তু রিপোর্ট হাতে আসার আগেই বিজেপি নেতৃত্ব পরিস্থিতি মোকাবিলার রণকৌশল নিতে শুরু করেছেন। বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী আজই লন্ডন থেকে দিল্লি ফিরেছেন। ইয়েদুরাপ্পাও মরিশাস সফর কাঁটছাট করে ফিরে আসছেন। কর্নাটকের দায়িত্বে থাকা বিজেপির শীর্ষ নেতা অরুণ জেটলি ইতিমধ্যেই আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেছেন, সাধারণত লোকায়ুক্ত যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরির আগে তাঁর মতামতও নেয়। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা বা অন্য অভিযুক্তদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। আর এ’টি যদি লোকায়ুক্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হয়, তাহলে তদন্ত আরও বাকি। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, দুর্নীতির যে সব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলি আদালতে টিকবে না। কিন্তু জন মানসে ইয়েদুরাপ্পা তথা বিজেপির ভাবমূর্তিতে যে কালি পড়ছে, তা তোলা কঠিন। আসল লড়াই হল, দুর্নীতির এই তকমার রাজনৈতিক মোকাবিলা করা। |
|
|
|
|
|