|
|
|
|
সম্প্রসারিত সবুজ বিপ্লব |
ফলন বাড়াতে এ বার নয়া প্রযুক্তি কালনায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কালনা |
জেলায় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোগী হল কৃষি দফতর। নতুন প্রকল্পটির নাম ‘সম্প্রসারিত সবুজ বিপ্লব।’ প্রকল্প রূপায়ণের জন্য জেলার ৮টি জায়গায় হয়েছে প্রদর্শনী ক্ষেত্র। সেখানে একই পঞ্চায়েত এলাকায় হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হবে। বীজ, সার, অনুখাদ্য, কৃষি যন্ত্রাংশ দিয়ে চাষিদের সাহায্য করছে কৃষি দফতর। এই প্রদর্শনীগুলি পরিচালনার ভার থাকছে কৃষি দফতরের উপর।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাজার হেক্টরের প্রদর্শনীগুলি হবে আউশগ্রাম ১, মেমারি ১, রায়না ১, গলসি ১, মন্তেশ্বর, কালনা ১, কেতুগ্রাম এবং কাঁকসা ব্লকে। ইতিমধ্যেই এই সমস্ত ব্লকে একটি করে পঞ্চায়েত এলাকা বেছে নেওয়া হয়েছে। যেখানে এক থেকে তিন মৌজার মধ্যে হাজার হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। প্রকল্পের জন্য জমি নির্ধারণ হওয়ার পরে প্রতিটি জায়গাতে পৌঁছে দেওয়া হবে ৫০ মেট্রিক টন করে লাল স্বর্ণ বীজ। ৮টি ব্লকে তার বীজতলাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রদর্শনী ক্ষেত্রের আওতায় থাকা চাষিদের কৃষি দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ধাপে ধাপে এসে পৌঁছবে অনুখাদ্য, কীটনাশক, আগাছানাশক-সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। কৃষি এলাকা হিসাবে চিহ্নিত কালনা মহকুমার দু’টি প্রদর্শনী ক্ষেত্র হচ্ছে কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়ায় এবং মন্তেশ্বরের বাঘাসন পঞ্চায়েত এলাকায়। বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে দেয়াড়া, বসতপুর, রাধানগর, আলাগড়, শেয়াড়া, কয়া, নদুক, দেওলপাড়া, বাঘনাপাড়া, কৈখালি, শিয়ালডাঙা, মুরাগাছ, শ্রীরামপুরের মতো গ্রামগুলি। অন্য দিকে, বাঘাসন পঞ্চায়েতের নবগ্রাম, আউশগ্রাম, ফুলগ্রাম, বেলেন্ডা, বাঘাসন, পাকুড়মুড়ি, আঠাশপুর এবং ইন্দ্রপুর, এই ৮টি মৌজায় হচ্ছে প্রকল্পটি।
কী ভাবে রূপায়িত হচ্ছে প্রকল্পের কাজ? মন্তেশ্বরের ব্লক কৃষি আধিকারিক রঙ্গন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রকল্প রূপায়ণের জন্য বাঘাসন পঞ্চায়েত এলাকার দু’টি কৃষি সমবায় সমিতির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তাদের মাধ্যমেই চাষিদের একত্রিত করা, বীজবিলি-সহ প্রাথমিক কাজ সারা হয়ে গিয়েছে। হাজার হেক্টর এলাকায় চাষের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ১০ জন ‘প্রগ্রেসিভ ফার্মার্স’। প্রত্যেকে ১০০ হেক্টর করে জমিতে চাষ নিয়ে খোঁজখবর রাখবেন। এই সব প্রগ্রেসিভ ফার্মার্সদের কাছে থাকবে রেজিস্টার। নিজের নিজের এলাকায় কী ধরনের রোগ দেখা দিচ্ছে, সেচের প্রয়োজন মিটছে কি না, চাষিরা সময় মতো তাঁদের জমি তদারকি করছেন কি না, এমন নানা তথ্য ওই রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন। এমনকী, সময়োপযোগী নানা পরামর্শ দিয়েও তাঁরা চাষিদের সাহায্য করবেন। প্রগ্রেসিভ ফার্মার্সদের রেজিস্টার দেখেই নানা সমস্যার সমাধান করবে ব্লক কৃষি দফতর।
সম্প্রতি বাঘাসন পঞ্চায়েত ভবনে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) শ্যামল দত্ত, সহ-কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) সুপ্রিয় ঘটক, মহকুমা কৃষি আধিকারিক স্বপনকুমার মারিক। বাঘাসন পঞ্চায়েতের প্রধান কাবলু মণ্ডল-সহ বেশ কিছু বিশিষ্ট মানুষ। সেখানে প্রগ্রেসিভ ফার্মার্সদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। শ্যামলবাবু বলেন, “যে ৮টি ব্লকে প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে তার পাঁচটি ইতিমধ্যেই ঘুরে দেখেছি। সেখানকার চাষিদের সঙ্গেও নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে ফলন বাড়ানো।” |
|
|
|
|
|