|
|
|
|
গায়েব ৭৭৬ বস্তা সার, ধৃত সমবায় সমিতির তিন জন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মঙ্গলকোট |
হিসাবের খাতায় লেখা, ‘চুরি’ বাবদ খরচ ২৬ হাজার টাকা। সদস্যদের সন্দেহ হয়। পুলিশি তদন্তে ধরা পড়ে, ভূত রয়েছে সর্ষের মধ্যেই।
অথচ, কৃষক উন্নয়ন সমবায় সমিতির সার চুরি হয়েছে বলে মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ করেছিলেন খোদ সমিতির ম্যানেজার। তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার তাঁকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছেন আরও দু’জন। ধৃতেরা হলেন ওই সমিতির সম্পাদক মুন্সি হেফজুর রহমান, ম্যানেজার শেখ সিরাজুল এবং কর্মচারী গোলাম মোস্তাফা। তিন জনেরই বাড়ি পূর্ব নওয়াপাড়া গ্রামে। এসডিপিও (কাটোয়া) জ্যোতির্ময় রায় বলেন, “ধৃতেরা ভেবেছিলেন বিমার টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া যাবে। কিন্তু তা হয়নি।”
১১ জানুয়ারি রাতে গ্রামের সমবায় কৃষক উন্নয়ন সমিতির তালা ভেঙে ৭৭৬ বস্তা রাসায়নিক সার চুরি হয় বলে থানায় অভিযোগ করেন সমিতির ম্যানেজার। পুলিশ জানতে পারে, সমিতি থেকেই কৃষকদের বেআইনি ভাবে ওই সার বিক্রি করা হয়েছে। সমবায় সমিতির সদস্য ৩৭০ জন। তাঁদেরই একাংশ বৃহস্পতিবার সমিতির কর্তাদের কাছে হিসাব চান। কাজি মানোয়ার, আজিজুল হকদের অভিযোগ, “হিসাবের খাতায় দেখি, চুরি বাবদ ২৬ হাজার টাকা খরচ লেখা আছে। দেখে তো আমরা অবাক। চেপে ধরতেই ওঁরা ফেঁসে যান।”
পুলিশের এক অফিসার বলেন, “সদস্যেরা হিসাব চাওয়ায় আমাদের কাজ অনেকটা সহজ হয়ে যায়। তখনই ওই তিনজনকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত হয়। লিখিত অভিযোগ জানান, সমবায় সমিতির এক সদস্য।
পুলিশের দাবি, ওই সার ভর্তি বস্তা তিন লক্ষ টাকায় চাষিদের কাছে বিক্রি করেন অভিযুক্তেরা। সেই টাকা নতুনহাটে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা রেখেছেন ওই তিন জন। তাঁদের অ্যাকাউন্টটি সিল করা হয়েছে। পুলিশের আরও দাবি, তিন জনই জেরার মুখে নিজেদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। মঙ্গলকোট থানার তদন্তকারী অফিসার বলেন, “এক রাতের মধ্যে ৭৭৬ বস্তা রাসায়নিক সার চুরির অভিযোগ প্রথম থেকেই কেমন অবাস্তব ঠেকছিল।”
শুক্রবার ধৃতদের কাটোয়ার এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী অমলেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “বিচারক ধৃতদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।”
কাটোয়া আদালত চত্বরে ধৃতদের অবশ্য দাবি, “আমাদের ফাঁসানো হয়েছে।” সমিতির সম্পাদক মুন্সি হেফজুর রহমান বলেন, “সিপিএমের বেশ কয়েক জন সদ্য তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। তাঁরাই আমাদের ফাঁসিয়েছেন।” তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক কোর কমিটির অন্যতম সদস্য লিয়াকৎ আলি অবশ্য ধৃতদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ওই তিন জন সমিতিতে প্রচুর দুর্নীতি করেছেন। ধরা পড়ে এখন তৃণমূলের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।” |
|
|
|
|
|