|
|
|
|
১০ জনকে শো-কজ |
আচমকা অভিযানে পাঁচ রেশন ডিলার সাসপেন্ড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
একযোগে ৩১টি ব্লক ও ১১টি পুর এলাকায় হানা দিয়ে ১৫ জন রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল খাদ্য ও সরবরাহ দফতর তথা প্রশাসন।
শুক্রবার সকাল থেকে ৪২টি রেশন দোকানে অভিযান চালানো হয়। পাঁচ ডিলারকে তৎক্ষণাৎ সাসপেন্ড করা হয়েছে। খাদ্য ও সরবাহ দফতর জানিয়েছে, এঁদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় খাদ্যদ্রব্যের অবৈধ লেনদেনের অভিযোগও দায়ের করা হবে। কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়েছে ১০ জনকে। এক মাত্র আসানসোল মহকুমায় কোনও রেশন দোকানে এ দিন বেনিয়মের নজির মেলেনি।
জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “সকাল ৭টা নাগাদ খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের স্থানীয় কর্মীদের ব্লক অফিসে আসতে বলা হয়েছিল। কোথায় যাওয়া হবে তা আগাম না জানিয়ে মহকুমাশাসক এবং বিডিও-রা তাঁদের নিয়ে রেশন দোকানে হানা দিতে শুরু করেন। বেলা ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।” জেলাশাসক নিজেও রায়নার পলেমপুরে দুই ডিস্ট্রিবিউটরের গুদামে যান। জেলা খাদ্য নিয়ামক রাজু মুখোপাধ্যায় যান বর্ধমানের বোরহাটে এক ডিস্ট্রিবিউটরের গুদামে। তবে ওই তিন জায়গায় কোনও বেনিয়ম ধরা পড়েনি।
এ দিন যে পাঁচ রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁরা হলেন পাণ্ডবেশ্বরের পূর্ণী দেবী, কাটোয়া ১ ব্লকের সুপ্রভাত ভট্টাচার্য, কেতুগ্রাম ১ ব্লকের গঙ্গাধর মণ্ডল, জামালপুরের মহম্মদ আলাউদ্দিন এবং খণ্ডঘোষের শেখ মুজিবর রহমান। জেলা খাদ্য নিয়ামক বলেন, “ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধেই বিপিএলের চাল-গমের মজুত কম থাকা, অতিরিক্ত কেরোসিন তেল মজুত করার মতো বেনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।” জেলাশাসকের বক্তব্য, “ওই ডিলারেরা বিপিএল তালিকার চাল বা গম খোলা বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন বলেই আমাদের সন্দেহ। ওঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ তদন্ত হবে।”
পাশাপাশি শো-কজ করা হয়েছে কালনা ১ ও ২, পূর্বস্থলী ২, মন্তেশ্বর, কেতুগ্রাম ২, মঙ্গলকোট, কাঁকসা ও অন্ডাল ব্লক এবং কালনা ও দুর্গাপুর পুর এলাকার ১০ জন ডিলারকে। খাদ্য নিয়ামক বলেন, “ওঁরা খাদ্য দফতরের বিভিন্ন নিয়ম মানেননি। এক সপ্তাহের খাদ্যদ্রব্য পরের সপ্তাহে তোলা যাবে বলে জেলার সমস্ত ডিলারকে জানানো হয়েছিল। তা লিখে দোকানের বাইরে টাঙিয়ে রাখতেও বলা হয়। কিন্তু ওই ডিলারেরা তা করেননি। দোকানে বিপিএল তালিকাও টাঙাননি। এপিএল তালিকার লোকজন কী মালপত্র নিয়েছেন, তার নির্দিষ্ট ক্যাশমেমোর প্রতিলিপি রাখেননি। এই সব নিয়মভঙ্গ কেন হল, ওঁদের তার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।”
ওয়েস্ট বেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক পরেশনাথ সরকার বলেন, “খাদ্য দফতর ও প্রশাসনের এই অভিযানকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহের কাজে আমাদের বেশ কয়েকটি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যেমন একই পরিবারে অন্ত্যোদয় যোজনা, বিপিএল ও এপিএল তালিকার মানুষ রয়েছেন। তাঁদের পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে তিন ধরনের রসিদ দিতে হয়। অনেক সময়ে রেশন কার্ড হারিয়ে গিয়েছে, এই অজুহাতে গ্রাহকের মুখ দেখেও মালপত্র দিতে হয়। প্রশাসন এই সমস্যাগুলি নিয়েও মাথা ঘামাক।” জেলাশাসক জানান, আপাতত জেলা জুড়ে এই ধরনের অভিযান চলবে। |
|
|
|
|
|