ক্ষতিপূরণ চেয়ে ঘুরে মরছেন মৃতের পরিজন
টনার পরে কেটে গিয়েছে সপ্তাহখানেক। কিন্তু অন্ডালের পরাশকোলে ছাই ধসে মৃত চার জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনও শুরুই হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামাবাসীর।
গত শনিবার গ্রামে ছাই দিয়ে ভরাট করা ধস এলাকা বসে গিয়ে মৃত্যু হয় বাবন বন্দ্যোপাধ্যায়, তারক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁদের দুই ছেলেমেয়ের। বাসিন্দাদের দাবি মেনে ইসিএল প্রতিশ্রুতি দেয়, মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া, তারক ইসিএলের কর্মী হওয়ায় তাঁর পরিবারের এক জনকে এই সংস্থায় এবং বাবনের পরিবারের এক জনকে বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থায় চাকরি দেওয়া হবে। তবে শুক্রবার পর্যন্ত সে সব কিছু মেলেনি বলে জানিয়েছেন বাবনের স্ত্রী পিয়ালিদেবী এবং তারকের স্ত্রী নূপুরদেবী। পাশাপাশি, গ্রামবাসীর দাবি, বাবনের পরিবারের এক জনকে ঠিকা নিরাপত্তা সংস্থায় চাকরি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু সেই সংস্থার ঠিকার মেয়াদ ফুরনোর পরে চাকরি থাকবে কি না, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই বাবনের পরিবারের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় বাসিন্দারা।
শনিবার থেকে পরপর ধস, বাড়িতে ফাটল ও ছাই ফুঁড়ে গ্যাস বেরোনোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার মহিলারা বুধবার কাজোড়া এরিয়ার সিজেএমের বাংলো ঘেরাও করেন। তখন সিজেএম রাধিকারঞ্জন কিশোর প্রতিশ্রুতি দেন, পুনর্বাসনের জন্য গ্রামবাসীকে তিনটি এলাকা দেখানো হবে। গ্রামবাসী যে জায়গার ব্যাপারে সম্মতি জানাবেন। সেখানে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার বাসিন্দাদের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসেন সিজেএম। বৈঠকের পরে স্থানীয় বাসিন্দা অমিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিল বন্দ্যোপাধ্যায়রা জানান, সিজেএম পুনর্বাসনের জন্য যে সব এলাকার কথা বলেছেন, সেগুলিও খনি এলাকা। ওই সব জায়গায় পুনর্বাসনের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন তাঁরা। সিজেএম তাঁদের পুনর্বাসনের বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসককে আবেদন জানাতে বলেছেন।
নূপুর বন্দ্যোপাধ্যায়। পিয়ালি বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজস্ব চিত্র।
অমিয়বাবুদের ক্ষোভ, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর কিছু দিনের মধ্যে কোনও ব্যবস্থা না হলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।” জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা অবশ্য শুক্রবার বলেন, “ইতিমধ্যে যে ১৩৯টি এলাকার জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে পরাশকোল নেই। সেখানের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ইসিএলকেই করতে হবে। ইসিএল চাইলে প্রশাসন আলোচনায় বসবে।”
এ দিকে, মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণ ও চাকরির ব্যাপারে দিনে দু’বার করে এরিয়া কার্যালয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু প্রতি বারেই বিভিন্ন রকম নথিপত্র চেয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় অবশ্য জানান, ক্ষতিপূরণ ও চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে নীলাদ্রিবাবু সাফ বলেন, “ওই এলাকায় ইসিএল কয়লা কাটেনি। তাই ধসে মৃত্যুর জন্য চাকরি দেওয়া হচ্ছে না। তারক ইসিএলের কর্মী ছিলেন, তাই সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী তাঁর পরিবারের সদস্যকে চাকরি দেওয়া হবে। মানবিকতার খাতিরে বাবনের পরিবারের এক সদস্যের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।” এ দিন নীলাদ্রিবাবু জানান, ওই এলাকায় ‘বোর হোল’ করে ভূগর্ভের পরিস্থিতি পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু গ্রামবাসীর একাংশের বাধায় কাজ করা যাচ্ছে না বলে দাবি তাঁর। বাসিন্দারা অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি।
Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.