|
|
|
|
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিদর্শনের সম্ভাবনা |
রাতারাতিই ধুয়ে-মুছে সাফ দু’টি হাসপাতাল |
সৌমিত্র কুণ্ডু • শিলিগুড়ি |
আভাস ছিল তিনি পরিদর্শনে আসতে পারেন। শেষ পর্যন্ত তিনি যেতে পারেননি। তবে সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই রাতারাতি ঝা চকচকে করে তোলা হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল। দুটি হাসপাতাল চত্বরেই জমে থাকা আবর্জনা রাতারাতি সাফ করা হয়। দেওয়ালের লাগানো পোস্টার তুলে, দেওয়াল লিখন মুছে পরিষ্কার করা হল। হাসপাতালের করিডরে পড়ে থাকা অসুস্থ ভবঘুরে ব্যক্তিদের ভর্তি করিয়ে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসক, কর্মীর ছুটি বাতিল করে দেওয়া হল। কিছুক্ষণ পর পরই ওয়ার্ডে গিয়ে রোগীদের খবর নিলেন হাসপাতালের কর্তারা। বিকল সব যন্ত্র পড়ে থাকলেও এত দিন যা কেউ সারাতে উদ্যোগী হননি তা ঠিক করতে তলব করা হয় মেরামতকারীকে। সৌজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁর হাতেই রয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্ব। বারবার অনুরোধ করলেও যে কাজ এত দিন হয়নি এমন অনেক কিছুই তাঁর পরিদর্শনের সম্ভাবনায় চটজলদি এ ভাবে হয়ে ওঠায় খুশি বাসিন্দারা তথা রোগীর পরিবারের লোকেরা। গত রবিবার দুপুরে শিলিগুড়ি পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সফরের মূল উদ্দেশ্য দার্জিলিং পাহাড় নিয়ে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি। সোমবার চুক্তির দিন ছাড়া এক দিন আগে এসে অতিরিক্ত দু’টি দিন শিলিগুড়ি কাটান তিনি। মঙ্গলবার যাওয়ার দিন শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের জন্য রেলের কতগুলি প্রকল্প চালুও করেন। এই ক’টা দিন শিলিগুড়িতে থাকায় জেলা হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে তিনি পরিদর্শনে যাবেন এমনটাই ধরে নিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ থেকে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার শৈবাল গুপ্ত বলেন, “আশায় ছিলাম মুখ্যমন্ত্রী আসবেন। ভেবেছিলাম হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে বেশ কিছু পরিকল্পনার প্রস্তাব তাঁকে জানাব। সে ব্যাপারে কাগজপত্রও তৈরি করেছিলাম। যাই হোক তিনি শেষ পর্যন্ত না এলেও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর মাধ্যমে ওই সব প্রস্তাব পাঠানো হবে।” সুপার জানান, মাসখানেক হতে চলল হাসপাতালের সিটি স্ক্যান অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। তা সারাতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালে ভিতরের রাস্তা খানাখন্দে ভরে বেহাল হয়ে রয়েছে বছর খানেকের উপর। মুখ্যমন্ত্রী আসতে পারে দেখে সেই রাস্তায় বালিমাটি ফেলে রাতারাতি সমস্ত গর্ত বন্ধ করে মেরামত করা হয়। হাসপাতাল চত্বরে হোটেল, গুমটি দোকান সরিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব মেডিক্যাল কলেজে এ সব দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পরিদর্শনে এসে একই পরিস্থিতি দেখে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারেন আশঙ্কায় আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়। শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপার সুশান্ত সরকার বলেন, “এমনিতেই রুটিনমাফিক পরিষ্কার করা হয়। তবে মুখ্যমন্ত্রী আসতে পারেন শুনে দেওয়ালের পোস্টার, লেখা তুলে ফেলা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পরিদর্শনে এলে তাকে জানাব ভেবেছিলাম। তা হল না।” জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দিন ধরে হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন বিভাগে রোগী বেশি থাকায় অনেককে মেঝেয় থাকতে হচ্ছিল। সুপার গিয়ে তাদের পেয়িং বেডে থাকার অনুরোধ করেন। সোমবার রাতেই তাদের সেখানে সরানো হয়। |
|
|
|
|
|