|
|
|
|
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ জ্বর-কাশিতেও ‘রেফার’, বারান্দায় ঠাঁই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ঠাঁই নেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বারান্দায় সার দিয়ে শুয়ে রয়েছেন রোগীরা। সেখানেই চলছে চিকিৎসা। যথেচ্ছ ‘রেফার’-এর জেরেই এই সঙ্কট বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। সামান্য জ্বর-কাশি হলেও ব্লক হাসপাতাল থেকে রোগীকে ‘রেফার’ করা হচ্ছে দুই মেদিনীপুরের একমাত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ সুকুমার মাইতি বলেন, “আগের থেকে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু শয্যা-সংখ্যা কম। তাই এই সমস্যা।” সমস্যার কথা জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। অধ্যক্ষের কথায়, “শয্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব কার্যকর হলে আর সমস্যা থাকবে না।” পাশাপাশি, ব্লক হাসপাতাল থেকে যাতে কম সংখ্যক রোগীকে মেডিক্যালে ‘রেফার’ করা হয়, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সে আর্জিও রাখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন, “মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে পরিস্থিতি দেখেছি। শয্যা না পেয়ে কিছু রোগীকে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। ব্লক থেকে বেশি রোগীকে ‘রেফার’ করার ফলেই এই পরিস্থিতি বলে জেনেছি। সমস্যা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মোট ৫৬০টি শয্যা রয়েছে। অথচ, গড়ে রোগী ভর্তি থাকেন সাড়ে সাতশোরও বেশি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই স্থান সংকুলান হয় না। শয্যা না পেয়ে রোগীরা ওয়ার্ডের মেঝেয় থাকতে বাধ্য হন। কিন্তু এখন সেখানেও জায়গা হচ্ছে না। রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে হাসপাতালের বারান্দায়। সমস্যা বেশি মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বর্ষায় নানা অসুখ দেখা দেয়। জ্বর-কাশি হয় ঘরে-ঘরে। ব্লক স্তরের হাসপাতালেই এর চিকিৎসা সম্ভব। কিন্তু তা হচ্ছে না। ব্লক থেকে সামান্য জ্বর-কাশির রোগীকেও মেদিনীপুরে ‘রেফার’ করে দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য ব্লক হাসপাতালগুলোর পরিকাঠামোকেই দুষছেন কর্তৃপক্ষ। ব্লক হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্স নেই। ফলে একসঙ্গে বেশি রোগী এলে সমস্যা দেখা দেয়। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের মতে, “ব্লকের চিকিৎসকেরা অধিকাংশ সময়ে ঝুঁকির কথা ভেবে রোগীকে মেদিনীপুরে রেফার করে দেন। তাতে মেডিক্যালে চাপ বাড়ে।” মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই এখন শয্যার থেকে রোগীর সংখ্যা বেশি। শিশু ওয়ার্ডেও এক হাল। শয্যা সংখ্যা যেখানে ৪৫, সেখানে ভর্তি থাকছে ৭৬ জন। হাসপাতাল সুপার রামনারায়ণ মাইতিরও দাবি, “সামান্য কিছু হলেই যদি ব্লক থেকে রেফার করে দেওয়া হয়, তা হলে তো সমস্যা হবেই। এখন তাই হচ্ছে।” এই পরিস্থিতিতে ১৫০টি শয্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কবে তা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার। |
|
|
|
|
|